রায়হান আহমেদ তপাদার

  ১৯ অক্টোবর, ২০১৯

পর্যালোচনা

গ্লোবাল ট্রেন্ড বনাম রাষ্ট্রহীন মানুষ

বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে রাজনৈতিক, সামরিক, জাতিগত ও মতাদর্শের নানা সংকট মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে জাতি পরিচয়, বেঁচে থাকার অধিকার। বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রহীন নাগরিকের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিদিন ৪৪ হাজার ৫০০ জন মানুষ বাস্তুচ্যুত নাগরিকে পরিণত হচ্ছে। সব মিলিয়ে বিশ্বে রাষ্ট্র ছেড়ে আসা বাস্তুচ্যুত নাগরিকের সংখ্যা এখন প্রায় ৬ কোটি ৮০ লাখ। এই দশক বিশ্ব করুণ এক শরণার্থী সমস্যার শিকার। বাস্তুচ্যুত মানুষের ভিড় যেন বিশ্বের আনাচে-কানাচে লেগেই আছে। বর্তমান বিশ্বের প্রায় প্রতিটি মহাদেশেই জাতিগত সংঘাত, বর্ণবাদী আচরণ বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বসহ নানা কারণে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার ফলে অনেক দেশে মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে, জীবন বাঁচানোর জন্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। আর এসবের ফলে বিশ্বব্যাপী শরণার্থী সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে এবং রাষ্ট্র পরিচয়হীন মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। রাষ্ট্রহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে গবেষকরা জলবায়ু পরিবর্তনকে অন্যতম আরেকটি কারণ বলে উল্লেখ করছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শরণার্থী বেশি বাড়ছে এশিয়ার দেশগুলোতে। অন্যদিকে যুদ্ধ, জাতিগত সংঘাত এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কারণে এ অঞ্চলেই বেশিসংখ্যক মানুষ রাষ্ট্র পরিচয়হীন হয়ে পড়ছে। যুদ্ধের কারণে বেশি মানুষ রাষ্ট্র পরিচয়হীন হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এবং পূর্ব আফ্রিকার আরব দেশগুলোতে। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বেশি মানুষ রাষ্ট্র পরিচয়হীন হচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে এবং আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলোতে।

সম্প্রতি রাষ্ট্র পরিচয়হীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির এসব নানা কারণ নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং বিশ্বব্যাংক আলাদা আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জেনেভায় গ্লোবাল ট্রেন্ড শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, নিপীড়ন এবং সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যা ৭ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছেছে, যা গত সাত দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং ২০১৭ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ২ কোটি ৩০ লাখ বেশি। প্রতিবেদন মতে, প্রতিদিন বিশ্বে ৩৭ হাজার মানুষ বাসস্থান ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। আর এর ফলে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার তুলনায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। তথ্যমতে, ২০১৮ সালে যে পরিমাণ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে তা ১৯৫১ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত রাখা হিসাবমতে সর্বোচ্চ। এর আগে ১৯৯২ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার তুলনায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বেশি ছিল। সেসময় প্রতি ১ হাজার জনের মধ্যে ৩ দশমিক ৭ জন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। অন্যদিকে ২০১৮ সালে এ সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়ে ৯ দশমিক ৩ জনে পৌঁছেছে। ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট শরণার্থীদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে আছে যুদ্ধ, সংঘাত ও নিপীড়নের কারণে সৃষ্ট শরণার্থী। ২০১৮ সালে এই শ্রেণির শরণার্থী সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৫৯ লাখ। এর মধ্যে ৫৫ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী। দ্বিতীয় দলভুক্ত শরণার্থী হচ্ছে মূলত আশ্রয় প্রার্থী। এরা অর্থনৈতিক মন্দা, উন্নত জীবনের আশায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। এ সংখ্যা ৩৫ লাখ।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ভেনিজুয়েলায় রাজনৈতিক সংকটের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার ফলে দেশত্যাগ করা প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে এ তালিকায় ধরা হয়নি। এ শ্রেণির শরণার্থী মূলত তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত জীবিকা প্রত্যাশী মানুষ। তৃতীয় শ্রেণির শরণার্থী হচ্ছে, যারা বাস্তুচ্যুত হয়ে নিজ দেশেই আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এ সংখ্যা ৪ কোটি ১৩ লাখ। এ শ্রেণির শরণার্থীরা স্বীয় রাষ্ট্রে থাকলেও সাধারণ নাগরিকদের তুলনায় এদের নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা অনেক কম এবং আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা অবস্থায় যেসব শিশু জন্ম নিচ্ছে, এদের যথাযথ হিসাব রাষ্ট্রের কাছে না থাকায় শিশুরা অনিবন্ধিত থাকছে; যার ফলে রাষ্ট্র কর্তৃক শিশুদের জন্য যে অধিকারগুলো দেওয়া হয়, তা থেকে এরা বঞ্চিত হচ্ছে। আরেক প্রতিবেদনের মতে, বিশ্বজুড়ে এসব শরণার্থীর দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, দক্ষিণ সুদান, মিয়ানমার ও সোমালিয়া এবং আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল থেকে এসেছে। এর মধ্যে সিরিয়ার শরণার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি প্রায় ৬৭ লাখ। এরপরই আছে আফগানিস্তানÑ ২৭ লাখ। অন্যদিকে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের শেষ দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের কারণে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আর যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট শরণার্থী সমস্যা কখনো বন্ধ হয় না। ইউএনএইচসিআর ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিয়ে শরণার্থী তালিকা প্রস্তুত করেছে। এদিকে এখনো মধ্যপ্রাচ্যের ইয়েমেন, সিরিয়া এবং আফ্রিকার লিবিয়া ও সাব-সাহারা আফ্রিকার কয়েকটি দেশে যুদ্ধ চলছে। হিসাবমতে, আফ্রিকায় ২০১৮ সালে ইথিওপিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি ১৫ লাখের মতো বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

অপরদিকে বিশ্বব্যাংকের করা হিসাবের মধ্যে ইউএনএইচসিআরের উল্লেখিত ৭ কোটি ৮০ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষও ধর্তব্য। রাষ্ট্র পরিচয়হীন মানুষ বৃদ্ধির ফলে তারা দেশে এবং অন্য দেশে আশ্রয় জীবনেও মানবিক ও বিভিন্ন সামাজিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করা, চিকিৎসা সুবিধা, কর্মসংস্থানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বেগ পেতে হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে তারা বঞ্চিতও হচ্ছে। যেসব মানুষ যুদ্ধবিগ্রহের ফলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তাদের নাগরিক পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে না পারায় এখন সেগুলো হারিয়ে গেছে বা ধ্বংস হয়ে গেছে। যার ফলে একদিকে তারা শরণার্থী জীবনে স্বীয় নাগরিক পরিচয়পত্র না থাকার কারণে যেমন নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে; তেমনি যুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে নাগরিকত্ব প্রমাণ দিতে না পারার জন্য সারাজীবন রাষ্ট্রহীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। ২০১২ ও ২০১৭ সালে দুই দফা মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত দমনাভিযান চালানোর পর জীবন বাঁচানোর তাগিদে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে দেশত্যাগকারী রোহিঙ্গাদের বড় একটা অংশের কাছেই নিজেদের নাগরিক পরিচয় প্রমাণের জন্য কোনো নথিপত্র নেই। এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তির ক্ষেত্রে নথিপত্র না থাকার ফলে দেশে ফিরে নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে বড় ধরনের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। কারণ ১৯৮২ সালে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। আর এই জাতিগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ নিরক্ষর হওয়ার ফলে তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় নথি তাদের কাছে সংরক্ষিত নেই।

অন্যদিকে যাদের কাছে নাগরিকত্ব প্রমাণের নথিপত্র ছিল কিন্তু সেনাবাহিনীর অভিযানকালে সবকিছু ফেলে রেখে বাংলাদেশে চলে আসার পর তাদের বসতবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়ার ফলে নাগরিকত্ব প্রমাণের নথিও ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই বৃহৎ এই জনগোষ্ঠী দেশে ফিরে যেতে পারলেও রাষ্ট্রহীন নাগরিকে পরিণত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ভারতের আসামে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ১৯ লাখ মানুষ নাগরিকত্ব পায়নি। কারণ নাগরিকত্ব প্রমাণের মতো প্রয়োজনীয় নথিপত্র তাদের কাছে ছিল না। যদিও তারা যুগ যুগ ধরে বংশপরম্পরায় আসামে বসবাস করে আসছে। তথাপি নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য দরকারি নথিপত্র পেশ না করতে পারায় ১৯ লাখ মানুষ এখন রাষ্ট্রহীন হয়ে যাওয়ার পথে। বিশ্বজুড়ে এমন নানাবিধ ঘটনার ফলে রাষ্ট্র পরিচয়হীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্বব্যাংক ও ইউএনএইচসিআর বলছে, বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্র পরিচয়হীন মানুষের সংখ্যা এমন বাড়-বাড়ন্ত হওয়ার ফলে বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীলতার দিকে এগোতে পারে। কারণ এর ফলে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শ্রেণিবৈষম্য বাড়ছে, যা মানুষে মধ্যে সহিংস মনোভাব বাড়াতে ইন্ধন জোগাবে এবং উগ্রবাদীদের দল ভারী করতে কাজে দেবে। কারণ এদিকে অধিকার বঞ্চনার পীড়ন কাজ করছে, অন্যদিকে অশিক্ষা জেঁকে বসছে।

এ ছাড়া ইউনেনকো কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ২৬ কোটি ৪০ লাখ শিশু শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে ৩০ লাখের অধিক হচ্ছে শরণার্থী শিশু। ইউনেসকো ১২৮টি দেশের ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। কিন্তু শিক্ষার অধিকার বঞ্চিত এসব শিশুর মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহের শিকার দেশগুলোর শিশুদের অবস্থা বেশি খারাপ। এ শিশুরা একদিকে যেমন শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত, অন্যদিকে যুদ্ধের ফলে স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়া থেকেও বঞ্চিত। ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির মতে, বিশ্বের ৩০ লাখ ৭ হাজার স্কুল-বয়সি শরণার্থী শিশু শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। যার ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামীতে বিশ্বে একটা নিরক্ষর প্রজন্ম বেড়ে উঠবে। যারা মূলত সহিংসতার শিকার হয়ে, দারিদ্র্য ও রাজনৈতিক কারণে দেশছাড়া। আর স্বভাবতই এরা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে এ বছরের শুরুতে বিশ্ব আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। লিবিয়া, ইয়েমেন, ভেনিজুয়েলা, আফগানসহ আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের অবস্থা নাজুক হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘের ভূমিকা যেমন গৌণ, তেমনি এর ফলে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য সাহায্যের ভূমিকাটাও স্বল্প। আঞ্চলিক শান্তিরক্ষায় জাতিসংঘ তদুপরি বিশ্বনেতাদের সচেতন হতে হবে। শরণার্থী সমস্যা সমাধানে একেবারে সুনির্দিষ্ট হয়ে এবং ধাপে ধাপে এগোতে হবে। ইউরোপের সীমানাগুলোতে মুক্তনীতি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়; সেজন্য ইইউকে আইন করতে হবে এবং নজরদারি করতে হবে। হাঙ্গেরির মতো কোনো দেশ যাতে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া না দেয়; সেদিকে নজর দিতে হবে। ইউরোপের কম জনসংখ্যার দেশগুলোতে শরণার্থীদের স্থানান্তর করে তাদের পূর্ণ মানবীয় মর্যাদা দিয়ে বসবাস ও কাজকর্মের ব্যবস্থা করে দিতে। একবিংশ শতাব্দীতে যে সক্ষমতায় যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব মোড়লের আসনে আসীন, সে সক্ষমতায় যুক্তরাষ্ট্র আরো মানবিক বিশ্বের জন্য কাজ করবে এবং শরণার্থী সমস্যার সমাধান করবেÑ সেটাই বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা।

লেখক : শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close