শফিকুল ইসলাম খোকন

  ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

মুক্তমত

সমুদ্র অর্থনীতি সম্মেলন ও কিছু কথা

আমাদের দেশে কিছু আঞ্চলিক ভাষায় প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে, যার মধ্যে একটি ‘সময়ে এক ফেঁাঁড়, অসময়ে দশ ফোঁড়েও কাজ হয় না’। এ প্রবাদ সব কাজের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আমি প্রবাদটি এ লেখায়ও প্রযোজ্য মনে করছি। কারণ সমুদ্র অর্থনীতি সম্মেলনে এবারই প্রথম আইওআরএর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে স্বাগতিক হচ্ছে ঢাকা। এজন্য এখনই সময় হচ্ছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সঠিক কাজটি করা। তা না হলে অসময়ের হাজারবার করলেও কাজ হবে না। তবে আমি আশাবাদী এ সম্মেলনে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।

সমুদ্র সম্পদ, বিপুল সম্ভাবনাময় এ সম্পদ। এ নিয়ে চলছে নানা গবেষণা-বিশ্লেষণ। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় রয়েছে অফুরন্ত সম্পদ। শুধু আবিষ্কারের অপেক্ষায়। এসব সম্পদে দেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে। খনিজ, জ্বালানি সম্পদ প্রতিনিয়তই জমছে বঙ্গোপসাগরের বুকের ভেতর। রয়েছে ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম। ১৩টি জায়গায় সোনার চেয়ে দামি বালি। যাতে মিশে আছে ইলমেনাইট, গার্নেট, সিলিমানাইট, জিরকন, রুটাইল, ম্যাগনেটাইট। অগভীরে জমে আছে ‘ক্লে’। যার পরিমাণ হিমালয়কেও হার মানায়। যা দিয়ে তৈরি হয় সিমেন্ট। তেল-গ্যাসের সন্ধানও মিলেছে। চেষ্টা করলে তাও আয়ত্তে। দরকার শুধু তল্লাশি চালিয়ে তুলে আনার। এ একেবারে স্থায়ী আমানত। আবার এও বলা হয়, বঙ্গোপসাগরে রয়েছে আর এক বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের জন্য বাংলার সমুদ্র অঞ্চল, বঙ্গোপসাগর পরম করুণাময় বিশ্ব ¯্রষ্টার অপার আশীর্বাদ। পৃথিবীতে একমাত্র এই সমুদ্রাঞ্চলেই মৎস্যশ্রেষ্ঠ ইলিশ জন্মে। আরব বণিকরা যে ইলিশকে নাম দিয়েছেন মালেকুচ্ছামাক (মাছের রাজা), তা অকারণে নয়। সেই ইলিশ ও অন্য মাছের পাশাপাশি আমাদের সাগরের তলদেশে যে অমূল্য খনিজ সম্পদের বিশাল ভান্ডার থরে থরে সাজিয়ে রেখেছেন পরম করুণাময় তার সফল আহরণ আমাদের রফতানি বাণিজ্যকে এক নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে পারে। এর চেয়ে আনন্দের ব্যাপার আর কী হতে পারে? তৎকালীন বাংলাদেশের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের সমুদ্রের তলদেশে বিপুল সম্পদ রয়েছে। এর উন্নয়ন উৎসাহিত করতে পারলে এই সম্পদের রফতানি দেশের প্রধান রফতানি খাতে পরিণত হবে।’ আমাদের সমুদ্র তলদেশে যে কত সম্পদ আছে, তা দেশের জনগণ জানে না। জানতে পারলে এবং এ খাতে বিনিয়োগে উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলে আমাদের জাতীয় অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, এ সম্পর্কে পর্যাপ্ত প্রচারণার অভাবে এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে উদ্যোক্তারাও এ খাতে এগিয়ে আসছেন না।

বাংলাদেশ এমন একটা দেশ, যে দেশে সম্ভাবনাময় অনেক খাতই রয়েছে এবং আমরা চাইলে সেসব খাতে উন্নয়ন করতে পারি; দেশের প্রবৃদ্ধিকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ খাত সমুদ্র, যাকে ব্যবহার করে পৃথিবীর অনেক দেশই তাদের প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে চলছে। শুধু তাই-ই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসে এই সামুদ্রিক ট্যুরিজম থেকে। সুতরাং বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে সমুদ্রের মতো একটি খাত বেশ লাভজনক খাত হতে পারে। সমুদ্র অর্থনীতি তথা ব্লু ইকোনমি নিয়ে জনসচেতনতার অভাব রয়েছে। এ কারণে জনগণকে বা সম্ভাব্য উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছেন না। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে এবং বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানো উচিত। কারণ এত বড় সম্ভাবনাপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কোনো সরকারই উৎসাহ দেখায়নি। সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছুটা উৎসাহ প্রদর্শনের ফলে এ বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। এক. প্রাণিজসম্পদ, দুই; খনিজ সম্পদ। প্রাণিজ সম্পদ বলতে সাধারণত বোঝানো হয় সমুদ্রে যেসব প্রাণী থেকে দেশের অর্থনৈতিক জোগান আসে। যেমনÑ চিংড়ি, শামুক, ঝিনুক, স্কাইড, কাঁকড়া প্রভৃতি (উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ২০-২৫ শতাংশ মাছের জোগান আসে সমুদ্র থেকে)। আর খনিজ সম্পদ বলতে সমুদ্রের তলদেশ থেকে যেসব উপাদান থেকে অর্থলাভ হয়। যেমন বিভিন্ন জাতের বালু, মৎস্য খাবার, গ্যাস ও তেলের ব্লক।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারি বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ আশরাফুল আজম খান বলেছিলেন, ‘বিশাল সমুদ্র অঞ্চলকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ তার অর্থনীতির চেহারা পুরোপুরি পাল্টে দিতে পারে। তবে এজন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বে প্রায় ৩৫ কোটি লোক সামুদ্রিক মৎস্য শিকারের সঙ্গে সংযুক্ত। এর মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ লোকই উন্নয়নশীল বিশ্বের। বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের ২০০ নটিক্যাল মাইল এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন পেয়েছে। শুধু মাছ নয়, বঙ্গোপসাগরের তলদেশে আছে বহু মূল্যবান খনিজ সম্পদ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের মালিকানাধীন বঙ্গোপসাগরের তলের গঠন বিবেচনায় এ অঞ্চলে তেল-গ্যাস ছাড়াও বহু রকমের মূল্যবান খনিজ সম্পদের বিশাল মজুদ রয়েছে। সেসবের যথাযথ আহরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ খনিজ সম্পদে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সম্পদশালী দেশে পরিণত হতে পারে। যেকোনো বিবেচনায় বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে এক বিপুল সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের বার্তাবাহী। বিশ্বস্রষ্টা পরম করুণাময় বঙ্গোপসাগরের তলদেশে বাংলাদেশের জন্য যে বিপুল খনিজ সম্পদ থরে থরে সাজিয়ে রেখেছেন, আমরা তার কতটা সদ্ব্যবহার করে আমাদের ভবিষ্যৎকে কতটা সমৃদ্ধ করে তুলতে পারি, তার ওপরই নির্ভর করছে এ বিশাল প্রাপ্তির সার্থকতা। ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমাদের সমুদ্রসীমার ২০০ নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং সমুদ্রের ৩৫৪ নটিক্যাল মাইলেরও বেশি সমুদ্র তলদেশের সম্পদ রয়েছে। সমুদ্রগর্ভ থেকে যে পরিমাণ সম্পদ আহরণ করা যাবে, তা বাংলাদেশের মোট ভূখন্ড থেকে আহরিত সম্পদের ৮১ শতাংশ।’

এত সম্পদের ভান্ডার বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের অংশের তলদেশ। আশার কথা হলো, ভারত মহাসাগর অঞ্চলকে কেন্দ্র করে উপকূলীয় ২১ রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইওআরএ (ভারতীয় মহাসাগর রিম অ্যাসোসিয়েশন)-এর মন্ত্রী পর্যায়ের দুই দিনব্যাপী তৃতীয় সম্মেলন ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শুরু হয়েছে। এ সম্মেলনে বিশ্বের ৩১ দেশের মন্ত্রী-উপমন্ত্রী, সচিবসহ উচ্চ পর্যায়ের শতাধিক প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সব সম্ভাবনার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে টেকসই সমুদ্র অর্থনীতিকে উৎসাহিত করা। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে গত বছর অনুষ্ঠিত আইওআরএর উচ্চপর্যায়ের বার্ষিক বৈঠকে আন্তর্জাতিক এই সংস্থার ২০১৯-২১ বর্ষের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ২০২১-২৩ বর্ষের জন্য চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। সংস্থাটির সচিবালয়কে আরো শক্তিশালী করতে ৫ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলারের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ঢাকা। এবারই প্রথম আইওআরএর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে স্বাগতিক হচ্ছে ঢাকা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছেÑ সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে যে সম্মেলন হচ্ছে, সেটি কতটুকু সুফল বয়ে আনবে? বা সমুদ্র পিষ্টে যে সম্পদ রয়েছে তা থেকে নতুন নতুন কী কী তথ্যের গুরুত্ব পাবে? সমুদ্র সম্পদ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সরকার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও গবেষণা করছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সংক্ষেপে ‘বিমরাড’ নামে একটি গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সমুদ্র সম্পদের পাশাপাশি বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চল একটি সম্ভাবনাময় যেমন তেমনি, ঝুঁকিপুর্ণ এলাকাও বটে। এখানকার বাসিন্দারা সব সময় দুর্যোগের সঙ্গে মোকাবিলা করেই বসবাস করছে। উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা প্রায় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। তারা নানা সমস্যায় আক্রান্ত, এমনকি অনেক মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। সমুদ্র অর্থনৈতিক সম্পদ নিয়ে সরকার ভাবছে, কিন্তু উপকূলীয় অঞ্চলে সম্পদ নিয়ে কতটুকু তাদের নজরে আছে; সেটি আমার জানা নেই। তবে আমার প্রস্তাব থাকবে সমুদ্র অর্থনৈতিক সম্পদ নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলের সম্ভাবনা নিয়েও ভাবতে হবে। যেমন সমুদ্র ব্যবস্থপনা নীতিমালা, আইন ও বিধি তৈরি করে তার সঠিক প্রয়োগ করা, বাংলাদেশের ১,১৮,৮১৩ বর্গ কিমি সমুদ্রসীমাকে জলদস্যু ও অবৈধ প্রবেশ রোধে নিরাপত্তাবেষ্টনী দ্বারা ঘিরে রাখা, নদী ও সমুদ্রে কলকারখানা ও হোটেলের বর্জ্য না ফেলা, পর্যটন কেন্দ্রেগুলোতে প্লাস্টিক যত্রতত্র না ফেলা, এর সুষ্ঠু ব্যব¯া’পনার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন করে জেলেদের সক্ষমতা এবং মৎস্য আহরণে আরো আধুনিক নৌযান তৈরি, অবৈধ জাল তৈরি কারখানা বন্ধ করা, মাছের ক্ষতি করে এমন সব ধরনের জাল নিষিদ্ধ করা, জেলেদের জন্য জীবন বীমা চালু এবং আলাদা সুদমুক্ত অথবা স¦ল্প সুদে ঋণ সহায়তার ব্যবস্থার করা, সাগরে জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দুর্যোগের খবরাখবর দ্রুত পৌঁছানোর এবং উদ্ধারের জন্য দ্রুত জান নিশ্চিত করা, উপকূলীয় অঞ্চলে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক স্থাপন, জেলেদের ওকিটকি দেওয়া ইত্যাদি ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ হলো, সমুদ্র সম্পদের মধ্যে মাছ হলো অন্যতম। উপকূলীয় জেলেরা সমুদ্র থেকে মৎস্য আহরণ করে অর্থনৈতিক জোগান দিচ্ছে সরকারকে। এ কারণে জেলেদেরও যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও এ সম্মেলনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলোচনায় আনা উচিত। যার অন্যতম কারণ সমুদ্র সম্পদের মধ্যে মাছ সম্পদ, তেমনি জেলেরাও একটি বড় সম্পদ।

আমরা জানি, সমুদ্র বিজয়ের কয়েক বছর কেটে গেল। তবে বিলম্বে হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সমুদ্রে জরিপ, গবেষণা ও সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরকে নির্দেশ দেওয়ার পর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। এটি সুসংবাদই বটে। এ কথা সত্য যে, বিশাল সমুদ্রসীমা জয়ের ফলে বাংলাদেশের সামনে জাহাজ নির্মাণশিল্প ও বন্দর সুবিধা বৃদ্ধি, মৎস্য ও জলজ সম্পদসহ সমুদ্র তলদেশে থাকা প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং পর্যটন ব্যবসা সম্প্রসারণ প্রভৃতি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সমুদ্র মৎস্য সম্পদের আধার। মৎস্য সম্পদের পাশাপাশি সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে খনিজ সম্পদের পাহাড়। বাংলাদেশের দুই দফায় মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্র বিজয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদ আহরণের সম্ভাবনা আরো বেড়েছে। বিরোধ থাকাকালীন সুনির্দিষ্ট সীমানা না থাকায় বঙ্গোপসাগরে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলন, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণসহ সামগ্রিক কর্মকান্ড যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। ২০১৯ সালের মধ্যেই সমুদ্র অর্থনীতিতে বিপ্লব আনতে চায় বাংলাদেশ সরকার। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে সমুদ্র অর্থনীতি ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছে দেশ। সাগরের সম্পদ আহরণে একদিকে নেওয়া হয়েছে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কর্মপন্থা। অন্যদিকে উপকূলীয় দেশগুলোর প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেতে আগে থেকেই নেওয়া হয়েছে কার্যকরী পরিকল্পনা। সমুদ্র সম্পদ অনুসন্ধানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কার্যক্রম পরিচালনায় স্থায়ী একটি ব্লু-ইকোনমি সেল গঠনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমুদ্রে অনুসন্ধান চালাতে জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পরিশেষে বলতে চাই, প্রথমে মিয়ানমারের সঙ্গে, পরে ভারতের সঙ্গেও আমরা সমুদ্রসীমার বিজয় অর্জন করেছি। সেই বিজয়কে কাজে লাগানোর জন্য দক্ষ জনবল আর পরিকল্পনার বিকল্প নেই। বাংলাদেশ সরকারের এখনই সুযোগ হয়েছে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা এবং দক্ষ জনবল নিয়োগ করা। যেখানে কোনো অনিয়ম থাকবে না, থাকবে না কোনো দুর্নীতি। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত সমৃদ্ধশালী ও উন্নত দেশ গড়ে তুলতে সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগানো গেলে হয়তো উন্নয়নের গতি পাবে। সুতরাং সম্ভাবনাময় এ খাতের যথোপযুক্ত ও সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রত্যেকের সদা জাগ্রত হতে হবে।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close