reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ আগস্ট, ২০১৯

জঙ্গিবাদ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়

পৃথিবীর একজন সভ্য মানুষও বলবেন না নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে অবলীলায় খুন করার নাম ‘বিপ্লব’। আর এ পদ্ধতিতে বিশ্বের কোথাও বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, এমন একটি উপমাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রকৃত অর্থে ক্ষেত্রবিশেষ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস নামানো যেতে পারে, তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট বৃত্তে এবং সাধারণ মানুষকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না করে। রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদী দর্শনের বাহকরাই সন্ত্রাসকে ধারণ, লালন এবং ব্যবহার করে। তারা কোনো ধরনের ন্যায়বোধের পরোয়া করে না। ব্যক্তি বা অতিক্ষুদ্র গোষ্ঠী নিজেদের ভোগবাদী স্বার্থের অন্বেষায় এ কাজ করে থাকে। অথবা কোনো বৃহৎ শক্তির দাসত্ব বরণ করে (এজেন্সি মানব হয়ে) এরা অন্যের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। এদের কোনো আদর্শ থাকে না। বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন ঘটানোই এদের কাজ। বাংলাদেশে হুজির হামলা ও হত্যাযজ্ঞ এর একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। ১৯৯৯ সালের মার্চ থেকে ২০০৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত (ছয় বছরে) এই জঙ্গি গোষ্ঠী দেশে ১৩টি গ্রেনেড ও বোমা হামলা চালায়। এতে ১০৬ জন নিহত হন। আহতের সংখ্যা সাত শতাধিক। নিহত ও আহতের সিংহভাগই সাধারণ মানুষ। এসব হত্যার মধ্য দিয়ে কোনো ভালো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। যারা এ কাজে সম্পৃক্ত থাকে, তারা নিতান্ত ভারাটে অথবা ক্রীতদাসের চরিত্রে অবতীর্ণ হয়, যা আর্থিক

লেনদেনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

আজ ২১ আগস্ট। প্রায় দেড় দশক আগে, এই দিনে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিউনিতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালায় হরকাতুল জিহাদের একদল জঙ্গি। যা ছিল, ছয় বছর ধরে এই জঙ্গিগোষ্ঠীর চালানো হামলায় শেখ হাসিনাকে হত্যার ধারাবাহিক চেষ্টার এক চূড়ান্ত রূপ। এ সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে আরো চারবার। কিন্তু প্রতিবারই তাদের সে চেষ্টা সফল হতে পারেনি। মানুষের ভালোবাসাই তাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়েছে বারবার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে হুজি-বির শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। শীর্ষ জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জঙ্গি দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দীর্ঘদিন এই জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তবে এ কথাও সত্য, জঙ্গি হামলার ঝুঁকি এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা মনে করি, যেকোনো আয়তনে যেকোনো জঙ্গি কর্মকা- কোনো সুসভ্য সমাজে সমাদৃত হতে পারে না। আবার কোনো ধরনের জঙ্গি তৎপরতা কখনোই মানুষের কোনো কল্যাণ বয়ে আনেনি। জঙ্গি কর্মকা- গণহত্যার নামান্তর ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। বিশেষ করে যারা ধর্মকে ব্যবহার করে, তাদের এই অপতৎপরতাকে সচল রাখার চেষ্টা করছে, এক দিন জাগ্রত মানুষের সামনে তাদের এই মুখোশ উন্মোচিত হবে এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সমাজ থেকে উচ্ছেদ হয়ে কবরের কঠিন নীরবতায় আশ্রয় নেবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close