reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ জুলাই, ২০১৯

রূপান্তরিত বর্জ্য হোক আলোর উৎস

শুধু আলোর উৎসই নয়, আলোর উৎস ছাড়াও হতে পারে কৃষি উৎপাদনের অন্যতম রসদ। আলোচনাটি এ দেশে বহুদিন ধরেই চলে আসছে। আলোচনার টেবিল থেকে নামতে পারেনি মাটিতে। যদিও কাঁচামালে কোনো ঘাটতি নেই, বিশেষ করে মহানগর ঢাকায়। মহানগরের একটি অংশ দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় দৈনিক ৩ হাজার ৫০০ টন বর্জ্য নিঃসরণ হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এ বর্জ্য ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ও জৈব সার উৎপাদন কঠিন কোনো কিছু নয়। তবে এ দেশে যা সহজ, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তা ততোধিক কঠিন। তা না হলে সিদ্ধান্তে আসতে এত সময় লাগার কথা নয়। এখানে ভালো কাজে বাধা বেশি। দেশের বাস্তবতা সে কথাই বলে। তবে অনেক দেরিতে হলেও সিদ্ধান্তসহ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। সে জন্য ঢাকাবাসীর পক্ষ থেকে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

ডিএসসিসির মাতুয়াইলে ৮১ দশমিক ১০ একর জমিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, সার, রিফিউজড ডিরাইভড ফুয়েল (আরডিএফ) উৎপাদনের প্লান্ট তৈরি করবে সরকার। সম্ভবত আলোচনার টেবিল থেকে বিষয়টি মাটিকে স্পর্শ করেছে। নতুন স্থানে দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্তে এসেছে সরকার। এতে ইমব্যাকমেন্ট, গ্যাস নির্গমন পাইপ, কৃত্রিম লাইন যুক্ত করার কথাও ভাবা হচ্ছে। সূত্র মতে, মাতুয়াইলে স্তূপ করা বর্জ্য সমতলে আনার জন্য প্রয়োজনীয় হেভি ইকুইপমেন্ট এবং যানবাহন সংগ্রহের কাজ এগিয়ে চলেছে। বর্জ থেকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে বসানো হবে ইনসিনারেটর প্লান্ট। আর এই প্লান্ট থেকে দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। মাতুয়াইলে স্যানিটারি ল্যান্ডফিল্ড সম্প্রসারণসহ ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। মোট ১ হাজার ৩১৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। ২০২১ সাল নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

আবার বলতে হয়, এ দেশে সহজ কাজ সহজে হওয়ার নয়। ভালো কাজে বিরোধিতা বেশি। এই প্রকল্পের কথা মানুষ অনেক দিন থেকেই শুনে আসছে। মাঝখানে চলে গেছে একটি দশক। আরো কত দশক অপেক্ষায় থাকতে হবে, জানা নেই। তবে আমরা মনে করি, জনকল্যাণই হচ্ছে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্রের মূলমন্ত্র। আর সেই মূলমন্ত্রের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। সে কারণেই আমরা দাবি করতেই পারি, বর্জ্য থেকে উৎপাদিত হোক বিদ্যুৎ এবং সার। কেননা, এই দুই ক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি অনেক। পাশাপাশি ঢাকাকে আবর্জনামুক্ত করে পরিবেশকে নান্দনিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে এই প্রকল্প বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। মৃতপ্রায় নদীগুলো আবর্জনায় বা বর্জ্যে ভরাট অথবা দূষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। ঢাকা তার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে পেয়ে হতে পারে প্রাচ্যের ভেনাস। তাই আর কালক্ষেপণ নয়। ২০২১ সালের মধ্যেই আমরা এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার নিশ্চয়তা চাই। সরকার এবং প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কাছে এটুকুই প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close