কেমিক্যাল সরানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত
ঢাকাবাসীর বহুদিনের প্রতীক্ষিত প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকায় বসবাসকারী মানুষের স্বপ্নপূরণ। মৃত্যুর আতঙ্কের ওপর মাথা রেখে প্রতি রাতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষরা সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতি অভিনন্দন না জানিয়ে থাকতে পারেননি। তারা একাট্টা হয়ে বলেছেন, সরকারের এই ইতিবাচক সিদ্ধান্তকে স্বাগত। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে স্থানান্তর করা হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী গত বুধবার বলেছেন, পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর সবার দাবি ছিল কেমিক্যাল কারখানা এবং গুদামগুলো ঢাকার বাইরে স্থানান্তর করা। সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিকতার সঙ্গে ওই দাবির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই মধ্যে সিরাজদিখান উপজেলায় ৩১০ একর জমি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দেওয়া হয়েছে। পরিকাঠামো তৈরিতে সেখানে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৩১০ একরে সব সুযোগ-সুবিধাসহ ২ হাজার ১৫৪টি প্লট তৈরি হচ্ছে, যা এই ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়া আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ২০২০ সালের মধ্যে কেমিক্যাল গুদামগুলোকে স্থানান্তর করা হবে কদমতলী ও টঙ্গীতে।
তিনি বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে সব সময় নেতিবাচক মন্তব্য শোনা যায়। যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই বলা হয়, কথামালার মধ্যে সরকার সীমাবদ্ধ থাকবে। বিষয়টি নিয়ে একটু নড়াচড়া হবে। তারপর সব ঘটনাই চলে যাবে ডিপফ্রিজের অন্তরালে। প্রচলিত এই অশুভ ধারণা ভাঙার জন্যই এবারের সরকার প্রতিশ্রুতি ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের সরকার সব সময়ই জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে এবং ভবিষ্যতে তা করবে। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার অংশ হিসেবে পুরান ঢাকা থেকে ছোট-বড় সব কেমিক্যাল কারখানা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে শিল্প এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন। ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যেই পুরান ঢাকাবাসীকে ভয়াবহ এই আগুন-আতঙ্ক থেকে মুক্ত করা হবে।
স্বপ্ন আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি। স্বপ্ন আছে বলেই সভ্যতার অগ্রগতি আছে। আমরা মনে করি, পুরান ঢাকাবাসীর বহুদিনের লালিত স্বপ্ন আর উপেক্ষিত হবে না। অরক্ষিত থাকবে না পুরান ঢাকা। আগুনের আতঙ্ক থেকে নিরাপদে বেঁচে থাকার প্রশ্নে বর্তমান সরকারের বাস্তবমুখী এ সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ পুরান ঢাকাকে নতুন করে উজ্জীবিত করবে। আর সময়ক্ষেপণ নয়। নয় কোনো লালফিতার দৌরাত্ম্য। আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া দেখতে চাই। সিক্ত হতে চাই মানুষের অফুরন্ত ভালোবাসায়।
"