reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ জুন, ২০১৯

উচ্চতর প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাকে স্বাগত

আওয়ামী নেতৃত্বাধীন সরকার টানা তৃতীয় দফায় দেশ পরিচালনায় এসে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে। বাজেটটি আকারে স্মরণকালের বৃহত্তম বাজেট। ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার এই বাজেট দেশের জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রবৃদ্ধিকে উচ্চতর স্তরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। একই লক্ষ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, ব্যবসাবান্ধব ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, আর্থিক খাতের সংস্কার ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বাড়ানোর কথা মাথায় রেখেই সরকার এই বাজেট উপস্থাপন করেছে। অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে উন্নয়নের অভীষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর কথাও বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করার বিষয়টি উত্থাপন করে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় দারিদ্র্য হ্রাস ও বৈষম্য কমানোর উদ্যোগের কথা বলেছেন।

বাংলাদেশ এশিয়ার সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। বিষয়টি মাথায় রেখে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সরকারের পথ চলা। আর শিল্প প্রসারের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয়টিও নিশ্চিত করার কথাও ভাবা হচ্ছে। ব্যাংক সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেট-পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, গত বছর সরকারের কাছ থেকে অনেক সুবিধা নেওয়ার পরও ব্যাংকঋণের সুদের হার ১ অঙ্কে নামেনি। বেসরকারি ব্যাংক কথা রাখেনি। এবারের বাজেটে সে নির্দেশনা মানার ব্যাপারে কঠিন ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঋণখেলাপিদের ঋণ পরিশোধের জন্য বিভিন্ন সময় নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও তারা সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করেননি। যারা এখনো ঋণ পরিশোধ করেননি এবং তা ইচ্ছাকৃত, তাদের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।

দেশে কালোটাকার ভারে সাদাটাকার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। সমাজের ওপর তার কালোছায়া নেমে এসেছে। এ চিত্র দেশের সর্বত্র বিরাজমান। কানের পানি বের করতে কানের ভেতরে আরো পানি ঢালার যেমন প্রয়োজন, ঠিক একইভাবে চলমান অর্থনীতির ব্ল্যাকহোল থেকে কালোটাকাকে বের করে আনতে কালোটাকার মালিকদের জন্য আবার একটি সুজোগ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কালোটাকার মালিকরা কি আন্তরিকতার সঙ্গে সে সুযোগ গ্রহণ করেননি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে কালোটাকার স্তূপ জমেছে। এই টাকা দেশ থেকে পাচার হচ্ছে অথবা অন্য পথে পরিচালিত হচ্ছে। এ টাকা কখনো অর্থনীতির মূলধারায় ফিরে আসেনি, এখনো তা একই অবস্থায় রয়েছে। তাই এ টাকা যাতে মূলধারায় ফিরে এসে শিল্প ও আবাসন খাতে বিনিয়োগ করতে পারে, তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

আজ যে শিশুটি জন্ম নিচ্ছে, তার মাথায় চাপছে ৬৭ হাজার ২৩৩ টাকা ঋণের বোঝা। দেশে যখন মাথাপিছু ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছেÑ তখন প্রস্তাবিত বাজেট কতটা গ্রহণীয় বা বর্জনীয় তা আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে না। আমরা মনে করি, বিষয়বস্তুকে হতে হবেÑ আমরা কতটা বাস্তবায়ন করতে পারব। কাজটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এর থেকে অনেক বড় সমস্যাকে আমরা পাড়ি দিয়ে এসেছি। বাস্তবায়নজনিত সমস্যাকেও আমরা অতিক্রম করব। তবে এর জন্য প্রয়োজন শুধু দেশপ্রেমের। যে দেশপ্রেম আমাদের একটি রাষ্ট্র উপহার দিয়েছে। দিয়েছে একটি পতাকা। আমরা সেই রাষ্ট্র এবং পতাকার দিকে তাকিয়ে যখন বলতে পারব, ‘দেশপ্রেম এবং দেশপ্রেম, এর কোনো বিকল্প নেই’Ñ তখনই আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close