রায়হান আহমেদ তপাদার

  ১২ জুন, ২০১৯

আন্তর্জাতিক

অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে ব্রিটেনের যাত্রা

গত ২৪ মে এক আবেগঘন বক্তব্যে ৭ জুন প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি যে কয়বার খসড়া চুক্তি হাউস অব কমন্সে পেশ করেছিলেন। প্রতিবারই তার নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টিসহ বিরোধী লেবার এবং অপরাপর সবার তোপের মুখে পড়তে হয়। কারণ তিনি যে চুক্তিটি পাস করিয়ে নিতে চাইছেন, এর মধ্য দিয়ে ইইউর কাছে ব্রিটেন অনেকটা নিজেকে সঁপে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বহুল আলোচিত ডিভোর্স বিল চুক্তির যে খসড়া মে সরকার এবং ইইউ মিলে তৈরি করেছে, সেখানে এই বিচ্ছেদ পুরোপুরি কার্যকর করতে ২১ মাস সময় ধরা হয়েছে এবং পরবর্তীকালে তা আরো দুই বছর বৃদ্ধি করার বিষয় যুক্ত রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাজ্যের জন্য ইইউর সব আইন (ভবিষ্যতের পরিবর্তনযোগ্য আইনসহ) মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তারা সংস্থাটির সদস্যপদ চিরতরে হারাবে। সেই সঙ্গে এ সময়ের মধ্যে বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ খরচ এবং ইইউকে প্রদেয় যুক্তরাজ্যের চাঁদা (আনুমানিক ৩৯ বিলিয়ন পাউন্ড) যুক্তরাজ্যকেই বহন করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ সময়কালে কেবল এই চাঁদার অঙ্কই ছিল ১০ বিলিয়ন পাউন্ড। ব্রিটেন ও অপরাপর ইইউভুক্ত নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টির দিকে খেয়াল রেখে এই চুক্তিতে আরো বলা হয়েছে, ব্রিটেনে বসবাসরত ইইউ দেশগুলোর নাগরিক এবং ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বসবাসরত ব্রিটেনের নাগরিকরা অব্যাহতভাবে সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের মধ্যে বসবাস করতে থাকবে। কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কোনো নাগরিক ৫ বছরের অধিককাল বসবাস করলে তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ব্রিটেনের ব্রেক্সিটপন্থি রাজনীতিবিদ এবং এর পক্ষের নাগরিকদের মূল দুশ্চিন্তার জায়গা এটাই ছিল। অনেক কারণের মধ্যে ইইউভুক্ত দেশগুলো থেকে অবাধে নাগরিকদের ব্রিটেনের ভেতর ঢুকে পড়া এবং তাদের সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থায় ভাগ বসানো নিয়ে ব্রিটেনবাসীর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল। তাই খসড়া এই চুক্তি ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্তের জন্য একটি আত্মহত্যার শামিল বলে মনে করা হয়। সংগত কারণেই ব্রিটেনের পার্লামেন্ট এই চুক্তি পাস করেনি এবং প্রধানমন্ত্রী মে কোনো জুতসই চুক্তিপত্র সংসদের সামনে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনটা যদি আমরা ধরে নিই, তা হলে এর সঙ্গে এটাও ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে যে, এটা কি কেবল প্রধানমন্ত্রী মের ব্যর্থতা, নাকি বাস্তব অবস্থাই এর চেয়ে বিকল্প আর কিছু হাজির করতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে এ সমস্যাটির মূল সূচনা করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। নিজে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে থাকলেও কেবল সস্তা জনপ্রিয়তার নেশায় দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে নাগরিকদের মধ্যে পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর নাগরিকদের ব্যাপক হারে ব্রিটেনে অভিবাসী হওয়ার ক্ষোভকে প্রশমনের লক্ষ্যে একটি গণভোট আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আরোহণ করলেন এবং প্রতিশ্রুত গণভোট দিলেন, সামান্য ব্যবধান (ব্রেক্সিটের পক্ষে ৫২ শতাংশ এবং বিপক্ষে ৪৮ শতাংশ) সত্ত্বেও ব্রেক্সিটের পক্ষে গণরায় এলে তিনি পদত্যাগ করেন। দলের নেতৃত্বে থেকে সরকার গঠন করা এবং সে সময় তার পদত্যাগের বিষয়ে তেমন জোর চাপ না থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন পদ ছেড়ে দিলেন, তা আজ মের অবস্থা থেকে অনেকটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।

অর্থাৎ মে যে প্রস্তাবনাটি সংসদের সামনে হাজির করেছেন, এর চেয়ে ভালো কোনো প্রস্তাবনা তার উত্তরসূরি যিনি আসবেন, তিনি যে আনতে পারবেন, সে সম্ভাবনা ক্ষীণ। এখানে মনে রাখতে হবে যে, সমস্যাটি ব্রিটেনের, ইইউর নয়। ইইউ ত্যাগ করলেও ভবিষ্যতে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ব্রিটেনের সার্বিক সম্পর্কের স্বার্থে ব্রিটেনকেই বিদ্যমান বাস্তবতায় তার জন্য তুলনামূলক ভালো পন্থাটি বেছে নিতে হবে। বিচ্ছেদের গণরায় এসেছিল আজ থেকে তিন বছর আগে, ২০১৬ সালের ২৩ জুন। কথা ছিল পরের দুই বছরের মধ্যে এর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। সেই লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ডিভোর্স বিলখ্যাত যে খসড়া বিচ্ছেদ চুক্তি পার্লামেন্টে পেশ করা হয়, তিনবার তা নাকচ হয়ে যাওয়ার পর বিচ্ছেদ দীর্ঘায়িত হতে হতে গত ২৯ মার্চ গিয়ে ঠেকে। সে সময়ের মধ্যেও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে না পারার ফলে শেষবারের মতো যুক্তরাজ্যকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় ইইউ। সংসদ সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের আকুল আকুতি ছিল তার পেশকৃত খসড়া চুক্তিটি অনুমোদন দিতে এবং প্রয়োজনে এর বিনিময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে শূন্য হাতেই পদ ছাড়তে হচ্ছে। আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্তবিষয়ক যে সমঝোতা চলছে, তার একটি বাস্তবভিত্তিক পরিণতির জন্য যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইইউর বাণিজ্যবিষয়ক একক কাস্টমস ইউনিয়ন বহাল রাখা অত্যন্ত জরুরি। এখানে ইইউ যুক্তরাজ্যের যে দুর্বল জায়গাটি চিহ্নিত করেছে তা হচ্ছে, উত্তর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যবিষয়ক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।

কিন্তু সে ক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত সমস্যা সমাধানে ব্রিটেনকে ছাড় দিয়ে হলেও বাধ্য করার একটি প্রবণতা লক্ষণীয়। উভয়ের নিজস্ব জলসীমায় অবাধে মৎস্য সম্পদ আহরণের বিষয়েও বাধ্যবাধকতার বিষয় রয়েছে। অথচ ব্রিটেনের জাতীয় আয়ের খুব কমই এ খাত থেকে অর্জিত হয়। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ভবিষ্যৎ সালিস-মীমাংসার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের (ইসিজে) মধ্যে একটি যৌথ সালিসি কমিটি গঠনের কথা বলা আছে। যদি এর মাধ্যমে বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধান অর্জিত না হয়, তবে ইসিজের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে বলে খসড়া চুক্তিতে বলা আছে।

ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি, গত কয়েক মাসে মের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং আরো অন্তত ১৫ জন পদত্যাগের হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে মে যখন বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের সমর্থন চাইলেন চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য, এটাকে লেবার পার্টির কাছে নিজেদের সঁপে দেওয়া হিসেবে উল্লেখ করেছেন অনেকেই। এ ক্ষেত্রে মে যখন বিকল্প সমাধান হিসেবে আরেকটি গণভোটের চিন্তাভাবনা মাথায় রেখেছেন, সেটিকেও হতে দিতে চাইছেন না দলের অনেকেই। সুতরাং সার্বিক পরিস্থিতি জাতীয় প্রয়োজন নয়, অসুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতারই একটি নেতিবাচক ফল হিসেবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমরা যদি ধরে নিই যে, নতুন যিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন, তিনিও কোনো গ্রহণযোগ্য বিকল্প হাজির করতে পারলেন না এবং এ অবস্থায় কোনো চুক্তি ব্যতিরেকেই ব্রিটেন ইইউ থেকে বের হয়ে গেল, তা হলে ক্ষতির মাত্রা কার কতটুকু হবে, সেটা সহজেই অনুমেয়।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করে যে সিদ্ধান্তে সহজেই উপনীত হওয়া যায় তা হচ্ছে, ব্রিটেনের মতো একটি বড় শক্তি হারিয়ে গেলেও ইইউ কিন্তু অপর ২৮টি দেশ নিয়ে একত্রেই পথ চলবে। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রসহ বাকি বিশ্বের কাছে ইইউর তুলনায় আলাদা করে যুক্তরাজ্যের বিশেষ কোনো আবেদন থাকার সুযোগ থাকবে না। এ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ হিসেবে যুক্তরাজ্য ইইউকে যতটুকু দিয়েছে, তার চেয়ে কম পেয়েছেÑ এটা অন্যতম কারণ ছিল। তবে এই সরল হিসাবের বাইরে যে সূক্ষ্ম হিসাবগুলো তাদের নজর এড়িয়ে গেছে তা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে তারা বড্ড একা হয়ে পড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী নির্বাচনে হয়তো এর মাসুল দিতে হতে পারে কনজারভেটিভ দলকে। তবে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে যারা রয়েছে অর্থাৎ লেবার পার্টি, তারা যদি কনজারভেটিভদের এ দুর্বলতার সুযোগে ক্ষমতাসীন হয়, তবে এরই মধ্যে দেশটির রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে যাবে, তা সামাল দিতে তারা কী ধরনের মহৌষধ প্রয়োগ করবে, সেটা অজানা। আসলে সার্বিক বিবেচনায় এখন এটাই মনে হচ্ছে যে, এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকেই যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর থেকেই তার নিজ দলের বিদ্রোহীরা তার ওপর আরো চড়াও হয়েছেন। তারা মের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে কনজারভেটিভ দলের এ-সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। কেননা, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে থেরেসা মে তার দলের আইনপ্রণেতাদের আস্থা ভোটে উতরে যান। দলটির নিয়ম অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে আর অনাস্থা প্রস্তাব আনার সুযোগ নেই। মের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে আলোচিত কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি বরিস জনসন থেরেসা মের ঘোষণাকে দলীয় ইশতেহারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এক টুইট বার্তায় তিনি এই বিলের পক্ষে ভোট দেবেন না বলে জানান। মূলত বিরোধী দলগুলোর সমর্থন আদায়ে বিলে নতুন প্রস্তাব যুক্ত করেছেন মে। কিন্তু বিরোধী দলগুলোও ইতোমধ্যে প্রস্তাবগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার অবস্থান থেকে আদৌ কোনো ছাড় দেননি। অন্যদিকে পুনরায় গণভোটের জন্য প্রচার চালানো লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের নেতা ভিন্স ক্যাবল বলছেন, পুনরায় গণভোট আয়োজনে পার্লামেন্টের মতামত যাচাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ দেওয়ার কিছু নেই। একটি প্রস্তাব আনার মাধ্যমেই যেকোনো আইনপ্রণেতা এটি করতে পারেন। ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্যর্থতার দায় নিয়ে আগেই পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ডাউনিং স্ট্রিটে এক আবেগঘন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় থেরেসা মে জানান, আগামী ৭ জুন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন তিনি। মে আরো জানান, নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনিই তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ব্রেক্সিট ইস্যুতে বারবার ব্যর্থ হয়ে বেশ চাপের মুখে রয়েছেন থেরেসা মে। যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের ব্যাপারে তার নতুন পরিকল্পনা মন্ত্রিসভায় ও পার্লামেন্টে অনুমোদিত না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন থেরেসা মে। আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার তারিখ নির্ধারিত থাকলেও এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি দেশটির পার্লামেন্ট। অবশেষে যেই কথা সেই কাজ। পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। আর পদত্যাগের পর তিনি গণমাধ্যমের সামনে এলেন শেষ বক্তব্য নিয়ে, যেখানে তিনি নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না। কাঁদলেন অঝোরে। বিবিসির রাজনীতিবিষয়ক সম্পাদক লরা কুয়েন্সবার্গ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে খুশি করতে গিয়ে কাউকেই খুশি করতে পারলেন না।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close