reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ এপ্রিল, ২০১৯

আসছে রোজার মাস সংযম চাই

ধর্মের জন্ম সমাজ ও মানুষের কল্যাণে। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা এ কথা মানেন ও অনুসরণ করেন। যারা অনুসারী হয়েও বাক্যটি অমান্য করে জীবনযাপন করছেন, তাদের আমরা কোন পাত্রে রাখব? যদিও পাত্র নির্ধারণের অধিকার অথবা ক্ষমতা কোনোটাই আমাদের নেই। আমরা যা পারি তা হলো, সমাজে যে অনৈতিকতার ম্যারাথন চলছে, তাকে সমর্থন বা বিরোধিতা না করে, নিজের দেহে একটি নিরপেক্ষতার পোশাক চড়িয়ে স্রোতের অনুকূলে গা ভাসিয়ে দেওয়া। এই নিরপেক্ষতার সারমর্ম হলো সুবিধাবাদ। এই সুবিধাবাদীরা সব সময়ই এ কাজটি করে এসেছেন এবং করে চলেছেন। কিন্তু ইসলাম তা বলে না। ইসলাম না বললেও বাংলাদেশে আমরা সেই সুবিধাবাদী ইসলাম অনুসারীরা অনেকটা সে পথেই চলেছি। যার জীবন্ত প্রমাণ রমজান মাস। যদিও এ মাসকে বলা হয় সংযমের মাস। কিন্তু সুবিধাবাদীরা এ মাসে চরমতম অসংযমের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হন। এ মাসেই তারা ভোগ্যপণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী করে তোলেন। তারা একটি সিন্ডিকেটের অন্তর্গত। তাদের কাছে স্বেচ্ছাচারিতাই হচ্ছে গণতন্ত্রের চাবিকাঠি। তাদের এই স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠলেও, তাদের ধর্ম বিশ্বাসে কোনো দাগ কাটে না। সম্ভবত তারা ধর্মীয় নির্দেশনার চেয়ে মুক্তবাজার অর্থনীতির নির্দেশনাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। দেশটা এভাবেই চলছে এবং সাধারণ মানুষকে তা মেনে নিতে হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রায়ই নানা উদ্যোগ নিয়ে থাকে সরকার। বিভিন্ন উৎসব ঘিরে সিন্ডিকেট নামধারী চক্র সরকারের নেওয়া সেসব উদ্যোগকে বারবার ব্যর্থ করে দিয়েছে। আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে করছেন অনেকেই। ফলে ভোগ্যপণ্যের লাগামহীন বৃদ্ধি ও খাদ্যে ভেজাল মেশানো বন্ধ করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অত্যন্ত মূল্যবান এ সময়কে মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নিয়ে এবারও বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চক্রটি। সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, সারা দেশে ৭১টি বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত গঠন করা হয়েছে। খাদ্যে ভেজাল ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইনে নিয়মিত মামলা হচ্ছে। এ ছাড়া খাদ্য পরীক্ষার জন্য ১০টি ল্যাবরেটরি ডেজিগনেট করা হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও থেমে নেই সিন্ডিকেটের পথচলা। ভোগ্যপণ্যের মূল্য এরই মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে, শুধু ভেজালই নয়Ñ ভেজালেও ভেজাল হওয়ার পথে নেমেছে সিন্ডিকেট। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এর থেকে বাঁচার কি কোনো উপায় নেই? এ প্রশ্ন আজ সবার।

এ প্রসঙ্গে কারো কারো মতে, সরকার বছর জুড়ে অভিযান না চালিয়ে পবিত্র মাসকে সামনে রেখে আগে ও পরের এক মাস অর্থাৎ তিন মাসের জন্য কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থায় যেতে পারে। যে ব্যবস্থার শাস্তি হতে হবে দৃষ্টান্তমূলক। এটি পরীক্ষামূলকও হতে পারে। পরীক্ষায় সফলতা এলে পরে তা নিয়ে চিন্তার অবকাশ থাকবে। আমরা মনে করি, যেহেতু সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না, তখন এ ব্যাপারে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। এ ক্ষেত্রে শুধু সরকারের কাঁধে জোয়াল তুলে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। সাধারণ মানুষকেও সেই কাফেলায় যোগ দিতে হবে। তবে পাশাপাশি এ কথাও সত্য, সরকারকেই থাকতে হবে মুখ্য ভূমিকায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close