reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

খেলাপি ঋণ আদায়ে চাই জরুরি উদ্যোগ

দেশের ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। দিন দিন যার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে পুরো ব্যাংকিংব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর অন্যদিকে লাভবান হচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল, যারা এই খেলাপি ঋণের সঙ্গে যুক্ত। ওইসব নামধারী ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক থেকে ভুয়া প্রকল্পের নামে বিশাল অঙ্কের ঋণ নিয়ে থাকেন, কিন্তু ওইটুকুই সার! ব্যাংকে গচ্ছিত সাধারণ মানুষের এ অর্থ যে আবার ফেরত দিতে হবে, তারা তা বেমালুম ভুলে যান। এমনকি ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা, উল্টো বিভিন্ন কৌশলে ব্যাংকগুলোকেই চাপে রাখেন তারা। ফলে ওইসব খেলাপি ঋণের দায়ভার ব্যাংকগুলোকে বহন করতে হয়। তবে সুখবর হচ্ছে, এবার খেলাপি ঋণ আদায়ে আইনের ফাঁকফোকরগুলো চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাতে অল্প সময়ের মধ্যে জাতিকে খেলাপি ঋণের বোঝা থেকে মুক্ত করা যায়। অর্থ খাতে সুশাসনের অভাবে খেলাপি ঋণের সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কার কী করণীয় তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলাদা দুটি কমিটি কাজ করছে। এর বাইরে আইন কমিশন, আইন মন্ত্রণালয়, বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যুক্ত করা হচ্ছে। সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি আইন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘খেলাপি ঋণ আদায়ে আইনি ফাঁক শনাক্তের উদ্যোগ’ শীর্ষক বিশেষ প্রতিবেদনে বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নিজেও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার পক্ষে। তিনি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ব্যাংক মালিকরা বৈঠক করেন এমডিদের সঙ্গে। এ সময় মালিকদের পক্ষ থেকেও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয় এমডিদের। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। অন্যদিকে একই সময়ে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে ৪৯ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। ফলে দেশে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণের কারণে দেশে নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে বাণিজ্যিক ব্যাংক ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আইন কমিশন, আইন মন্ত্রণালয়, বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা আশা করি, দেশে উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় ব্যাংকিং খাতকেও শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। একদিকে খেলাপি ঋণের টাকা আদায় করার যেমন চেষ্টা চালাতে হবে, তেমনি ব্যাংকে টাকা রাখতে গিয়ে যারা আস্থা হারিয়েছেন, তাদেরও ফিরিয়ে আনতে হবেÑ এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close