reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে

নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না। চালকদের বেপরোয়া মনোভাব ও অদক্ষতার কারণে বারবার তা ব্যর্থ হচ্ছে। ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের পরও চালকদের মধ্যে রয়েছে সচেতনতার অভাব। এরই মধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে চতুর্থ দফা অভিযান শেষ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ অভিযানে সড়কে কিছুটা শৃঙ্খলা আনা গেলেও তা টেকসই হয়নি। বরং প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটছে ছোট-বড় একাধিক দুর্ঘটনা। গবেষকদের মতে, সড়কের সক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত গাড়ি, বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিংয়ের কারণেই দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না। এ নৈরাজ্যের ছোবল থেকে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও বাদ যাচ্ছেন না।

গত বছরের জুলাইয়ে বাসচাপায় রাজধানীর শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। কোমলমতি শিশুদের দেখানো পথে কিছুদিন হাঁটা শুরুর পর আবার চিরচেনা রূপ রাজধানীর সড়কে। বেড়েছে বাসের ওভারটেকিং, বন্ধ হয়নি পথচারীদের হাত দেখিয়ে রাস্তা পারাপার। আলোচিত সেই দুর্ঘটনার পর আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা দুই মাস বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। তখন সড়কে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরেছিল। মাঝখানে নানা কারণে বন্ধ থাকার পর গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ফের পক্ষকালব্যাপী অভিযান শুরু করে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩১ জানুয়ারি। কিন্তু তা বাড়িয়ে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। সে হিসেবে চার দফার বিশেষ ট্রাফিক অভিযান শেষ হয় গত ২ ফেব্রুয়ারি। রোববার ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, বছরের প্রথম ট্রাফিক পক্ষের ১৯ দিনে মামলা হয়েছে সোয়া ১ লাখ। এ সময় আদায় হয়েছে ৬ কোটি টাকা জরিমানা। কিন্তু দুঃখজনক হলো, তারপরও শৃঙ্খলা ফেরেনি রাজধানীর সড়কে। এরই মধ্যে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ২৯ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। আমাদের জানা মতে, এর কয়েকটির বাস্তবায়ন চলমান। তবে অধিকাংশরই অগ্রগতি আংশিক। এদিকে পুলিশ বলছে, সড়কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব দফতর, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতা পেলেই যানবাহন চলাচলে শতভাগ শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

আমরা আশা করি, জাতীয় স্বার্থে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এর গুরুত্ব অনুধাবন এবং প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও যদি এ আইন বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হয়, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? মনে রাখতে হবে, যেকোনো উদ্যোগ বাস্তবায়নে দরকার ইতিবাচক মানসিকতা ও সমন্বিত পদক্ষেপ। তাই এ মুহূর্তে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পরিবহন মালিক, শ্রমিকদের পাশাপাশি যাত্রীদের সচেতনতা এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close