reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

মাদকের বিরুদ্ধে আমরা

মিডিয়া বলছে, দেশে গত বছর শুধু ইয়াবা ও হেরোইন বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। এ ব্যবসা এখন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। হিসাবটা গত বছরের। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হিসাব মতে, গত বছর বিভিন্ন সংস্থার অভিযানে ৫ কোটি ৩০ লাখ ইয়াবা বড়ি এবং সাড়ে ১১ মণ হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে, যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। তবে প্রধানমন্ত্রী সময়ের দাবি পূরণে মাদক প্রশ্নে সম্প্রতি জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষণা করেছেন। তার এ ঘোষণার পর বর্তমান অবস্থার কথা এখনো জানা যায়নি। আমরা আশা করব, মাদক প্রবেশের অপ্রতিরোধ্য গতিকে সরকার কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে এবং মাদকসেবীদের সংখ্যাও নিম্নমুখী হবে।

জাতিসংঘের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ইউএনওডিসির তথ্য মতে, কোনো স্থানে যত মাদক বিক্রি হয় তার ১০ শতাংশ ধরা পড়ে। এ হিসাবে বাংলাদেশে গত বছর শুধু ইয়াবা বড়ির বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৫৩ কোটি। যার বাজার মূল্য প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। আর হেরোইন বিক্রির পরিমাণ ১১০ মণ। যার বাজার মূল্য প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। এই হিসাবে বাংলাদেশের মাদকসেবীরা মাদকের পেছনে বছরে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে, যা বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বার্ষিক বাজেটের প্রায় তিন গুণ।

যদি এ তথ্য সঠিকতার দাবি রাখে, তাহলে বলতে হয়, আমরা কেউ ভালো নেই। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর সে কারণেই সরকার পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছে। সরকারের এ ঘোষণাকে দেশ ও জাতির প্রায় সবাই স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু ঘোষণা ও স্বাগত জানানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে। মনে রাখতে হবে, এটা একটি যুদ্ধ ও প্রথাগত যুদ্ধের মতো নয়। সে যুদ্ধের চেয়েও অনেক ভয়ংকর। প্রথাগত যুদ্ধে শত্রুকে চেনা যায়। কিন্তু মাদকের যুদ্ধ হয় সমাজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের সঙ্গে। যাদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি অনেক। অর্থ ও বিত্তে এরা এতটাই প্রভাবশালী, সাধারণ মানুষ তাদের প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে না। সমাজের অনেক ক্ষমতাবান এদের অর্থ ও বিত্তের কাছে নিজেকে বিক্রি করে তাদের অনুগত দাসে পরিণত হন। আর সে কারণেই তাদের দৌরাত্ম্য আজ অপ্রতিরোধ্য। তাদের এ দৌরাত্ম্য কমাতে অথবা নির্মূল করতে সর্বাগ্রে চাই একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, যা এরই মধ্যে আমরা পেয়েছি। এখন শুরু হতে হবে শুদ্ধি অভিযান। যেখানে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো ধরনের ফাঁকফোকর থাকা চলবে না। নীতি বা কৌশলে কোনো ধরনের দুর্বলতা থাকলে এ যুদ্ধে জয়লাভ সুদূর পরাহত হয়েই থাকবে। সুতরাং; দেশ ও জাতির সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে সরকারকেই এ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে হবে। আম জনতাকে হতে হবে সোলজার। এ দুয়ের সমন্বয় ছাড়া জয়লাভ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং আমজনতার ওপর তার সৈনিকের দায়িত্ব অর্পণ করে সরকার যুদ্ধের মাঠে অবতীর্ণ হবে। তবেই আমরা নিজেকে মাদকমুক্ত দেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করতে পারব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close