রায়হান আহমেদ তপাদার
বিশ্লেষণ
সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে গণতন্ত্র
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি যখন হেরে গিয়েছিল, তখন জার্মান জেনারেল এরিক লুডেনডফ অভিযোগ করে বলেছিলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের গভীর অপপ্রচারের কারণেই আমরা হেরে গেছি। এরিক লুডেনডফের এই উক্তিটিকে হিটলার খুবই গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন। যে কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই শুধু প্রোপাগান্ডার জন্য বিশেষভাবে ড. জোসেফ গোয়েবলসের মতো লোককে নিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু তার পরও শেষ রক্ষা হয়নি হিটলারের। ক্ষমতার কাছে অসহায় হয়ে যাওয়ার ইতিহাস অনেক পুরনো। যে গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছে, সে গণতন্ত্র আজ শুঙ্খলি। শুধু কল্পনা করা যায়, বাস্তবে ধরাও যায় না, ছোঁয়াও যায় না। অথচ কম বেশি সবাই গণতন্ত্রের পূজারি। গণতন্ত্রের কথা ক্ষমতায় যাওয়ার প্রাক্কালে শোনা গেলে ক্ষমতায় গেলে ক্ষমতাসীনদের সেই গণতন্ত্রের কথা স্মরণ থাকে না। গণতন্ত্রের প্রবৃদ্ধির গতিও অত্যন্ত নাটকীয়। ৫০ বছর সময়কালকে একটা পর্যায় ধরলে গত ২০০ বছরে গণতন্ত্রের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে বৈপ্লবিক। ১৮ শতকে বিশ্বে ছিল একটিমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ১৭৭৬ সালে জন্ম হয় গণতান্ত্রিক আমেরিকার। তখন অনেকেই ব্রিটিশ ব্যবস্থাকে গণতন্ত্র বলতে চায়নি। ব্রিটেনকে গণতান্ত্রিক ধরলেও মোট গণতন্ত্রের সংখ্যা ছিল মাত্র দুই। ১৮৫০-এর পর্যায়ে এ মিছিলে যুক্ত হয়েছে বেলজিয়াম ও সুইজারল্যান্ড। ১৯০০-এর পর্যায়ে ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলো গণতন্ত্রকে সাদরে বরণ করেছে। ফ্রান্স হয়েছে গণতান্ত্রিক। ১৯৫০-এর পর্যায়ে একমাত্র লাইবেরিয়া ছাড়া সমগ্র ইউরোপ গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল হয়েছে।
লাতিন আমেরিকায় গণতন্ত্রের সম্ভাবনা সম্পর্কে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবার্ট ডাল ১৯৮৪ সালে বলেন, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র বিস্তারের যে নীতি অনুসরণ করছে, তা ভ্রান্ত। এ অঞ্চলের অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে অর্থ সাহায্য, উপদেশ বিতরণ বা হস্তক্ষেপের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকরূপে সুসজ্জিত করা সম্ভব নয়। তার নিজের কথায়, ‘বহু দিন পর্যন্ত এসব দেশ স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গঠনে সক্ষম হবে না। কিছু প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উদার সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রবণতা এজন্য অপরিহার্য। তাই যত দিন পর্যন্ত ওই সব সমাজে এসব উপাদান জীবন্ত হয়ে না উঠবে; তত দিন গণতন্ত্র স্থিতিশীল হবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেও তা টিকে রইবে না। এশিয়া, আফ্রিকা এবং তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচক, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রবার্ট প্যাকেনহ্যামের অভিমত প্রায় একই রূপ। তার মতে, তৃতীয় বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে অদূর ভবিষ্যতে উদারনৈতিক গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ মোটেই উজ্জ্বল নয়। তিনি বলেন, আমেরিকার জন্য তৃতীয় বিশ্বের সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ একদিকে যেমন অপ্রয়োগযোগ্য এবং অবাস্তব; অন্যদিক থেকে কুলভিত্তিক বলেও তেমনি অনাকাক্সিক্ষত। ওইসব দেশে নির্বাচন ছাড়াও রয়েছে ক্ষমতায় যাওয়ার বিকল্প পথ। এমনকি গণতন্ত্রের সংজ্ঞাও তাদের কাছে ভিন্ন। শুধু তৃতীয় বিশ্বে কেন, অ্যাংলো-আমেরিকান সমাজক্ষেত্র ছাড়া, ইউরোপের পূর্ব ও দক্ষিণ অংশেও গণতন্ত্রের সম্ভাবনা সম্পর্কে কোনো কোনো লেখক গভীর সন্দেহ পোষণ করেছেন।
সমগ্র মহাদেশের অস্তিত্ব আজ অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। হিটলারের পতন হলেও এ অনিশ্চয়তা দূর হবে বলে মনে হয় না। কারণ আধুনিক ইউরোপীয় চিন্তাভাবনা ও শিল্প-সমৃদ্ধ পাশ্চাত্যের মানসে গভীরভাবে প্রোথিত যে অগণতান্ত্রিক শক্তির প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং ফ্যাসিবাদ এরই ফল বলে মনে হয়। শুধু কি তাই? ইতালিতে ফ্যাসিবাদের প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্য করে ফ্রাংকের এক দশক আগে ব্রিটেনের খ্যাতনামা ঐতিহাসিক আর্নল্ড টয়েনবি বলেন, ‘ইতালিতে ফ্যাসিবাদের প্রভাব দেখে কোনো সংসদ সদস্য আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারেন না। ইতালির গণতন্ত্র বর্জনে এ প্রশ্ন আজ চারদিকে উচ্চারিত। রাজনৈতিক এ চারা তার নিজস্ব ভূমি ছাড়া অন্যত্র স্থায়ী শিকড় গজাতে পারবে কি? শুধু গণতন্ত্র কেন, জাতীয় রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা সম্পর্কেও কোনো কোনো লেখক ব্যক্ত করেছেন সীমাহীন হতাশা। জোসেফ স্ট্রেয়ার ১৯৬৩ সালে লিখেছেন, গত ৫০ বছরে যেসব রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই জাতি রাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নীত হবে না। তাদের অনেকেরই গতি রুদ্ধ হবে অভ্যুত্থান, দখল, বিদ্রোহ ও যুদ্ধের সীমাহীন আবর্তে। ঐতিহাসিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, পর্যালোচক এবং পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যদ্বাণী সত্ত্বেও কিন্তু গণতন্ত্রের জয়যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। জোসুয়া মোরাভসিক সম্প্রতি এক নিবন্ধে যেসব তথ্য পরিবেশন করেছেন, তা সত্যই উৎসাহব্যঞ্জক ও বিপ্লবাত্মক। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউস তার ১৯৯০ সালের প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে, বিশ্বের ১৬৭টি সার্বভৌম রাষ্ট্রের মধ্যে ৬১টি গণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারের শৃঙ্খলমুক্ত, অবাধ। এসব রাষ্ট্রে বসবাস করে বিশ্বের প্রায় ৩৯ শতাংশ জনসমষ্টি। অতীতে এমনটি আর কখনো দেখা যায়নি।
অন্য কথায়, ২০১৪ সালে বিশ্বে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বসবাসকারী জনসমষ্টি। ফ্রিডম হাউসের তালিকাভুক্ত ৬১টি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে তাকালেও দেখা যাবে, মাত্র ২২টি রাষ্ট্র রয়েছে টয়েনবি বর্ণিত গণতন্ত্রের আদি, অকৃত্রিম, গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলে খ্যাত ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে। অন্যদিকে ৩৯টির অবস্থান তৃতীয় বিশ্বে ৯টি লাতিন আমেরিকায়, ১২টি ক্যারিবীয় অঞ্চলে, ১৪টি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায়, তিনটি আফ্রিকায় এবং একটি মধ্যপ্রাচ্যের জনসংখ্যার দিক থেকে ৩৯টি রাষ্ট্রে বসবাস করছে সামগ্রিকভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বসবাসকারীদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। একসময় বলা হতো, গণতন্ত্রের স্রোত শুধু প্রবাহিত হবে অ্যাংলো-আমেরিকান বিশ্বে, ইংরেজি ভাষীদের মধ্যে, শুধু অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ জনপদে। ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনে কিন্তু দেখা যায়, গণতন্ত্রের অভিযাত্রা ইউরোপ-আমেরিকা অতিক্রম করে ছুটে চলেছে এশিয়ায়, আফ্রিকায় অতি দ্রুতগতিতে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত ও জাপানের মতো বড় রাষ্ট্র, রয়েছে নরু, তুভালুর মতো ছোট রাষ্ট্রও। আমেরিকা, জাপানের মতো সমৃদ্ধ রাষ্ট্র যেমন হতে পেরেছে গণতান্ত্রিক, তেমনি মাথাপিছু এক হাজার ডলারের কম বার্ষিক উৎপাদনের দেশ ভারতও গণতান্ত্রিক হয়েছে। ইংরেজির প্রভাবমুক্ত বলিভিয়া, বতসোয়ানা, ডোমিনিক্যান প্রজাতন্ত্রের মতো দরিদ্র রাষ্ট্রও।
ইউরোপকে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক ক্ষেত্র হিসেবে যারা চিন্তা করতেন তারাও ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছেন। ইউরোপের তুরস্ক, রাশিয়া এখনো হতে পারেনি গণতান্ত্রিক; অন্যদিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশেও শুরু হয়েছে গণতন্ত্রের জয়যাত্রা। নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া ও হাইতি গণতন্ত্রের দ্বারপ্রান্তে। অবশ্যই এদিক থেকে বলা যায়, পূর্ব ইউরোপের চেকোস্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া, যুগোস্লাভিয়াও এসে গেছে গণতন্ত্রের কাছাকাছি। চীন, ভুটান, মালদ্বীপে গণদাবি আজ অপ্রতিরোধ্য। এও অবশ্য স্বীকৃত, গণতন্ত্রের গতি ঋজু নয়, নয় সহজ-সরল। অনেক উত্থানপতনের মধ্য দিয়ে তাকে পথ চলতে হয়েছে। কোথাও তা কর্তৃত্ব বাদীতার আড়ালে ঢাকা পড়েছে। স্বৈরাচারের মেঘ কেটে গেলে আবার তা আপন গৌরবে হয়েছে প্রতিষ্ঠিত। পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য বরাবর উপদেশ দিয়েছেন জনগণকে তাদের দাবি ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় আমাদের উপদেশ হলো গণতন্ত্রকে অর্থপূর্ণ করতে হলে অপরিহার্য যেমন জনগণের সচেতনতা, তেমনি রাজনৈতিক নেতাদের শক্তিশালী অঙ্গীকার এবং শাসন-প্রশাসনে সামন্তবাদী মনের পরিবর্তে গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনা। সামন্তবাদী মন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা একসঙ্গে চলে না। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
বিভিন্ন দেশ স্বৈরাচারের আঘাতে মুচড়ে গেছে; কিন্তু নিঃশেষ হয়নি। দেহ তার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে; কিন্তু অন্তরাত্মা রয়েছে অক্ষত। কেউ কেউ বলে, ক্ষেত্র প্রস্তুত না হলে গণতন্ত্রের সোনালি ফসলে সমাজ-সমৃদ্ধ হবে না। সত্যি বটে, গণতান্ত্রিক বিকাশের জন্য চাই এক উর্বর ক্ষেত্র, গণতান্ত্রিক কৃষ্টির ব্যাপক চর্চায় সিক্ত ক্ষেত্র। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সাজগোজ সম্পূর্ণ করে গণতন্ত্রের অপেক্ষায় থাকার প্রয়োজন নেই; যা প্রয়োজন, তা হলো গণতন্ত্রকে সঙ্গী করেই পথচলা আর চলতে চলতে গণতন্ত্রের জন্য সুসজ্জিত হওয়া। যেসব জনপদ গণতন্ত্রকে অর্থপূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছে, তারা এভাবেই অগ্রসর হয়েছে। গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রাজ্ঞ ঐতিহাসিক, দার্শনিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা প্রকাশ করেছেন তীব্র হতাশা। শুধু আফ্রিকা, এশিয়া, লাতিন আমেরিকায় কেন, ব্রিটেন-আমেরিকার সমাজ ক্ষেত্র ছাড়া ইউরোপের অন্যান্য সমাজ সম্পর্কেও তাদের হতাশা অত্যন্ত গভীর। এ প্রেক্ষাপটে বলা যায়, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কাঠামো তৈরি হয়েছে বটে; কিন্তু সেই কাঠামোয় প্রাণের স্পন্দন এখনো শুরু হয়নি। ইঙ্গ-মার্কিন সামাজিক ক্ষেত্রে যে সৃজনশীল প্রত্যয় রাজনৈতিক নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতাকে শুধু ন্যস্ত ক্ষমতা অথবা জনগণের আমানত হিসেবে ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছে, বাংলাদেশে তা অনুপস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের রুপালি ইন্টারেস্ট পত্রিকার সম্পাদক আর্ভিং ক্রিস্টল রবার্ট ডালের কথার প্রতিধ্বনি করে বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে গণতন্ত্র বিশ্বজয়ে সক্ষম হবে না। বিশ্ব এজন্য তৈরি হয়নি। গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত অত্যন্ত জটিল।
অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও উন্নয়নবিদের মতে, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রকে টেকসই গণতন্ত্রে রূপান্তর করতে হলে সামাজিক ও রাজনৈতিক সুযোগের পাশাপাশি নাগরিকের অর্থনৈতিক সুযোগ ও সমতা থাকা দরকার। সমসাময়িককালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্যবিমোচনে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করলেও ধনী-গরিব ও নগর-গ্রামের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের সবটুকু অর্জন ম্লান করে দেওয়ার শঙ্কা জাগছে। কারণ, বুর্জোয়া গণতন্ত্র এমন এক হাইব্রিড ব্যবস্থা, যা আপাতত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দিতে পারলেও জনগণের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ব্যাপকভাবে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘমেয়াদি এ ব্যবস্থা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে আবার উসকে দেয়। তাই গণতন্ত্রকে একটি বিন্দু ধরে যদি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুযোগের সমান বণ্টন করা না যায়, তা হলে টেকসই গণতন্ত্র সম্ভবত স্বপ্নই হয়ে থাকবে। রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনগুলো গণতন্ত্রের বহুমাত্রিকতাকে যেভাবে উন্মোচন করছে, তার পরিচর্যা ও বিকাশ হলে গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে এক দিন বৈশ্বিক মডেলে রূপান্তর করা সম্ভব। তবে এমন গণতন্ত্র আমরা চাই না, যার মডেল হবে শুধুই কাগজে-কলমে। আইনের শাসন, সুযোগের সমতা, ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও সম-অংশগ্রহণভিত্তিক গণতন্ত্রের পথেই গড়ে উঠুক ভবিষ্যতের বিশ্ব।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
"