reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ জানুয়ারি, ২০১৯

গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা দূর হোক

রাজধানীর গণপরিবহনে দীর্ঘদিন ধরে সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে এক ধরনের নৈরাজ্য। দিন দিন এ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে; যার খেসারত দিচ্ছে যাত্রীসাধারণ। সিটিং সার্ভিসের নামে ৯৬ শতাংশ বাস চলছে দরজা বন্ধ করে। কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নির্দিষ্ট স্টপেজের বাইরেও আসনের অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে। অথচ সিটিং সার্ভিসের নামে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। প্রতিদিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষকে এমন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনে মালিক সমিতি বা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর তৎপরতা নেই। গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে যখন ভ্রাম্যমাণ আদালত কিংবা পুলিশের বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে মোটরযান আইন প্রয়োগ করা হয়; তখন বাস মালিকরা বাস চালানো বন্ধ রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। তাতে যাত্রীরা আরেক ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, সিটিং সার্ভিস ঘিরে গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলা নিরসনে সরকার গঠিত কমিটি এক বছরের বেশি সময় আগে সুপারিশ জমা দিলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গঠিত ওই কমিটি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ২৬টি সুপারিশ করে। তার মধ্যে সাতটি ছিল সিটিং সার্ভিস নিয়ে। কিন্তু এক বছরেও এসব সুপারিশ আলোর মুখ না দেখায় খোদ কমিটির সদস্যরাই এখন ক্ষুব্ধ। এ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় সিটিং সার্ভিসের দৌরাত্ম্য কমা তো দূরের কথা, বিপরীতে রাজধানীর অধিকাংশ গণপরিবহনই সিটিং সার্ভিসের নামে চালাচ্ছে তুঘলকি কান্ড। সিটিং সার্ভিসের নামে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা রোধে এ বিষয়ে সুপারিশ করতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিআরটিএ ২০১৭ সালের ৩ মে আট সদস্যের একটি কমিটি করে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিটি তাদের সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার পরও এর কোনো অগ্রগতি নেই। এটা নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। কারণ যানজটমুক্ত মহানগরী ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধসহ গণপরিবহনের নৈরাজ্য দূর করা এখন সময়ের দাবি। এসব অনিয়ম বন্ধে বিআরটিএ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, পরিবেশ অধিদফতর, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমন্বিত পদক্ষেপই গণপরিবহনে দৃশ্যমান পরিবর্তন সম্ভব বলে আমরা মনে করি।

ইতোমধ্যে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বদনাম ঘোচাতে সিটিং সার্ভিস বন্ধের অভিযানে নেমেছিলেন পরিবহন মালিকরা। ওই অভিযানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষও (বিআরটিএ) অংশ নিয়েছিল। সেসময় রাজধানীজুড়ে বাসের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলা হয়। অথচ সংকট সৃষ্টির ঘটনায় তখন বিআরটিএর পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে সিটিং সার্ভিসের পক্ষে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। ফলে তাদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমরা দ্রুত এ দুরবস্থার অবসান চাই। এ ব্যাপারে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবেÑ এটাই প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close