reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ জানুয়ারি, ২০১৯

কঠোর অবস্থানে সরকার

খেলাপি ঋণের ভারে বাংলাদেশ ব্যাংক যখন নুয়ে পড়েছে, ঠিক সে মুহূর্তে যেন আলোকবর্তিকা হয়ে আবির্ভূত হয়েছে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার। সরকারের এ অবস্থানকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ এবং বাংলাদেশের শিক্ষিত সম্প্রদায়। ব্যাংকঋণ কমাতে আইন সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান ও আদায়ে সরকারি টাস্কফোর্স গঠন, অবলোপন (রাইট অফ) ঋণ আদায়ে লিগ্যাল অ্যাকশন টিম গঠন। ১৯৭২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সব খেলাপি ঋণ শনাক্ত করা। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে ব্যাংকারদের যোগসাজশ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা ও চিহ্নিত করা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে অবলোপনকৃত ঋণের হিসাব চাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া খেলাপিকে আদালতে যেতে হলে বকেয়ার ৫০ শতাংশ অগ্রিম জমা দেওয়ার বিধান করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে ঋণের ঝুঁকি পরিমাপের নতুন পদ্ধতি চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী অর্থবছর থেকে এ পদ্ধতিই অনুসরণ করবে দেশের প্রতিটি ব্যাংক। নতুন এ পদ্ধতি ‘ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিংয়ের (আইসিআরআর)’ মাধ্যমে ঋণগ্রহীতা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, সে বিষয় সঠিকভাবে বের করা যাবে। এ ছাড়াও ব্যাংকের সব ঋণ কতটা ঝুঁকির মধ্যে থাকবে, সে বিষয়েও ধারণা পাওয়া যাবে। এ পদ্ধতিতে খাতভিত্তিক ঝুঁকিও নির্ণয় করা সহজতর হবে।

অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে কেবল আইসিআরআরের যাত্রা হবে। এ পদ্ধতিতে ব্যাংকগুলো এখন থেকে প্রত্যেক ঋণগ্রহীতার একটি রেটিং এবং তথ্যভান্ডার তৈরি করবে। এ রেটিংয়ে সক্ষমতার মূল্যায়নের ভিত্তিতে গ্রাহককে চার শ্রেণিতে ভাগ করবে ব্যাংকগুলো। সেখানে কোনো গ্রাহক ‘এক্সিলেন্ট’ রেটিং পেলে ব্যাংক তাকে ঋণ দিতে পারবে। তা ছাড়া ‘গুড’ রেটিংধারীরাও ঋণ পাওয়ার আওতায় আসবেন। আর মার্জিনাল রেটিংধারী গ্রাহককে পাওনা ঋণ নবায়ন বা নতুন করে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ব্যাংককে। এ ছাড়া ‘আনএক্সসেপ্টেবল’ রেটিংধারী গ্রহীতারা নতুন করে আর কোনো ঋণ পাবেন না। এ শ্রেণির গ্রাহকের আগের ঋণ সর্বোচ্চ দুবার নবায়ন করা যাবে।

আমরা মনে করি, নতুন সরকারের এ ঘোষণা ১৬ কোটি মানুষের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। তারা মনে করছেন, বিষয়টি বাস্তবায়িত হলে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে যে বৈষম্যের মাঝে তারা আজ বাস করছে, কিছুটা হলেও তার অবসান ঘটবে। লুটেরা পুঁজির দৌরাত্ম্যে এত দিন মানুষ যে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটিয়েছে তার মাত্রাও কমে আসবে। অর্থনৈতিক দিক থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হবেÑ এটাই আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। প্রত্যাশা পূরণ হবেÑ এটাই সর্বজনের বিশ্বাস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close