জি. কে সাদিক

  ১১ জানুয়ারি, ২০১৯

আন্তর্জাতিক

পরাশক্তির শক্তি ভীতি

নতুন বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি রিপোর্টে মার্কিন আধিপত্যের হুমকির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মার্কিন গভর্মেন্ট অ্যাকাউন্টিবিলিটি অফিস (জিএও) এই রিপোর্টটি প্রকাশ করে। জিএও ‘উদীয়মান দীর্ঘমেয়াদি যেসব হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্র’ শীর্ষক শিরোনামে আমেরিকার জন্য ২৬টি হুমকির তালিকায় চীন, রাশিয়া ও ইরানসহ পরমাণু শক্তিধর উত্তর কোরিয়ারকে শীর্ষস্থানে রেখেছে। মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট নিউজ জানাচ্ছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং ডাইরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সি- এই চার সংস্থার ওপর জরিপ চালিয়ে জিএও মার্কিন প্রশাসনের জন্য হুমকির তালিকাটি প্রস্তুত করেছে।

প্রতিবেদনটিতে মার্কিন হুমকির ক্ষেত্রে চীনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চীন স্বীয় কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে ভূ-রাজনীতিতে আধিপত্য বাড়াতে চায় এবং বিশ্বশক্তি হিসাবে দাঁড়াতে চায়। অনুসন্ধানী এই প্রতিবেদনে চীনের স্থল, নৌ, বিমান, সাইবারস্পেস, মহাকাশ ও জলসীমায় আধিপত্য বিস্তারের ধরন বিশ্লেষণ করে আমেরিকার প্রতি চ্যালেঞ্জের স্বরূপ তুলে ধরেছে। ভবিষ্যদ্বাণী করে বলা হয়েছে, চীন সাইবারস্পেস ও বৈদ্যুতিক যুদ্ধ পদ্ধতি ব্যবহার করে আগামী দিনে আমেরিকার বিভিন্ন মহাকাশ অভিযানে হস্তক্ষেপ করতে পারে। জিএও চীনের ব্যাপারে যে সব বিষয়গুলো বলেছে এর প্রত্যেকটি বিষয়ই আগামী দিনের ভূ-রাজনীতিতে এবং মহাকাশে দুই পরাশক্তির মধ্যে চ্যালেঞ্জ ও সংঘর্ষাবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে চীনের মহাকাশ নীতির ক্ষেত্রে সামরিক ও বেসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি এ সন্দেহকে সত্যায়নের ইঙ্গিত দেয়। বর্তমানে চীনের সামরিক ও বেসামরিক মহাকাশ কর্মসূচির ব্যয় রাশিয়া এবং এশিয়ার দুই বৃহৎ শক্তি ভারত ও জাপানের তুলনায় বেশি। ২০১৭ সালের বাজেটে চীন আর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক ৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছিল। এই ব্যয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও বেসামরিক মহাকাশ কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে কম। তবে রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি। তা ছাড়া সম্প্রতি চীন নতুন সামরিক মহাকাশ প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে। এগুলো হচ্ছে, উপগ্রহ বিরোধী রশ্মি, সাইবার আক্রমণ, ইলেকট্রনিক বাধা এবং ভূমিভিত্তিক উপগ্রহ বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র পরিক্ষা।

লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (আইআইএসএস)- এর বিশেষজ্ঞরা চীনের সামরিক কর্মযজ্ঞ বিশ্লেষণ করে বলেছেন, চীন স্বীয় সামরিক শক্তিমত্তায় যুক্তরাষ্ট্র যেমনটা ভেবেছিল তার চেয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছে। নৌ ও বিমান বাহিনীর সামরিক সরঞ্জাম আধুনিকায়নে চীনের বিশেষ অগ্রগতি সাধন করেছে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসের শেষ দিকে ‘দ্য মিলিটারি ব্যাল্যান্স ২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আইআইএসএস বিশেষজ্ঞরা চীনের এই অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন। চীন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বা আলট্রা রঙ রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইলের ক্ষেত্রে বিশেষ উন্নতি করেছে। ২০১৭ সালে চীনের সামরিক ভা-ারে যুক্ত হয়েছে টাইপ-৫৫ ক্রুজার। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, এটা ন্যাটোর নৌ বাহিনীর জন্যই উদ্বেগের বিষয়। সম্প্রতি চীনের বিশেষ আলোচিত অস্ত্র হচ্ছে, পঞ্চম প্রজন্মের ‘স্টেলথ প্রযুক্তি’র যুদ্ধবিমান। এটি সুপারসনিক বা শব্দের চাইতেও বেশি দ্রুতগামী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এয়ার টু এয়ার’ তথা বিমান থেকে বিমানে আঘাত করে এমন ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে চীন যেকোনো পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম। স্নায়ুযুদ্ধকালে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বেশি এগিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন চীন যুক্তরাষ্ট্রের এই একক শক্তিমত্তাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে, চীনের মহাকাশ কেন্দ্রিক এই সামরিক কর্মযজ্ঞ ভবিষ্যতে ‘স্পেস ওয়ার’এর আলামত। কারণ, হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, ভূ-যুদ্ধের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের আইন থাকলেও মহাকাশের জন্য সমতুল্য কোনো আইন নেই। নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জ্যাক বিয়ার বলেছেন, ‘মহাকাশে কোনটি অস্ত্র আর কোনটি অস্ত্র নয় এই পার্থক্য করা কঠিন। আর পৃথিবীর যেকোনো সশস্ত্র সংঘর্ষ মহাকাশে পৌঁছুবে না এমন অনুমান করা কঠিন।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে সেজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন এবং আমাদের যোগাযোগ, উপগ্রহ থেকে আমাদের ড্রোন স্থানান্তরে বিঘœ সৃষ্টির পরিক্ষা চালাচ্ছে।’

মহাকাশে চীনের সমরনীতির প্রেক্ষিতে অধ্যাপক জ্যাক বিয়ারের শঙ্কার আরো জোরালো হয় আমেরিকার ঘোষিত মহাকাশ নীতির কারণে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স গত ৯ আগস্ট (২০১৮) আমেরিকার মহাকাশ বাহিনী গঠনের বিষয়ে ঘোষণা দেন। এটা হবে আমেরিকার সামরিক বাহিনীর ষষ্ঠ শাখা। পৃথিবীর বাইরে তথা মহাশূন্যে সামরিক তৎপরতায় নিয়োজিত থাকবে এই বাহিনী। লক্ষ্য হচ্ছে, চীন, রাশিয়াসহ অন্য দেশগুলো থেকে আমেরিকার স্বার্থ ও সা¤্রাজ্যের আধিপত্যকে নিরাপদ রাখা। এই মহাকাশ বাহিনী ভবিষ্যতে কী ভূমিকা রাখবে? বর্তমানে অন্যান্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর ভূমিকার দিকে ইঙ্গিত করে মাইক পেন্স খুব সুন্দর একটি উত্তর দিয়েছেন। সেটি হলো, ‘মহাকাশ কিংবা পৃথিবীর সব জায়গাতেই আমেরিকা সবসময় শান্তি চেয়েছে। ইতিহাস প্রমাণ করে শক্তিমত্তার মধ্য দিয়েই কেবল শান্তি বজায় রাখা সম্ভব। সামনের দিনগুলোতে মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী তেমন শান্তি প্রতিষ্ঠাকামী শক্তি হিসেবেই হাজির হবে।’ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করার পর আবার মহাকাশকেও কোনো বিশেষ বাহিনীর আওতায় আনা হচ্ছে তারও একটি সুন্দর ও জুতসই উত্তর দিয়েছেন তিনি। একটু সতর্ক দৃষ্টিতে দেখলে আমেরিকার মূল উদ্দেশ্যও স্পষ্ট বোঝা যাবে। তিনি বলছেন, ‘একটা সময় ছিল যখন মহাকাশে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু এখন বেশি মানুষ দেখা যাচ্ছে আর বাড়ছে প্রতিযোগিতা। আগের প্রশাসনগুলো অনেক কাজ করেছেন কিন্তু মহাকাশের নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। আমাদের প্রতিযোগিতা এরই মধ্যে মহাকাশকে যুদ্ধের ময়দানের মতো করে তুলেছে। আমেরিকা সে চ্যালেঞ্জ থেকে সরে আসবে না।’ মহাকাশে চীনের অপ্রতিরোধ্য সামরিক ও বেসামরিকক অগ্রগতির প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ বাহিনী গঠন ও জিএও কর্তৃক প্রদত্ত হুমকি চিহ্নিতকরণ গবেষণা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের চীনা ভীতির বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

অন্যদিকে চীনের কৌশলগতভাবে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের প্রযুক্তিপণ্য ও অস্ত্র বাণিজ্য আমেরিকার জন্য বাণিজ্য ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। চীন চাহিদার আলোকে প্রযুক্তিপণ্য ও অস্ত্র তৈরি করে। যা যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রস্তুতকৃত প্রযুক্তিপণ্য ও অস্ত্রের তুলনায় বাজারে বেশি ক্রেতা প্রিয়তা পাচ্ছে। আইআইএসএস-এর গবেষকরা বলছেন, চীনের অস্ত্র পশ্চিমা অস্ত্রের তুলনায় অন্তত ৭৫ ভাগ সক্ষমতা সম্পন্ন। কিন্তু দামে প্রায় অর্ধেক। এটা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ক্রেতা দেশগুলোর জন্য খুব লাভজনক। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে যে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়েছে এর প্রভাব অন্যান্য মিত্র দেশগুলোর উপর পড়ছে। এবং ট্রম্পের ‘আমেরিকা ফাস্ট’ নীতির ফলে মিত্র দেশগুলো পূর্বের অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। চীন এই সুযোগ পুরোটা লুফে নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ায় আমেরিকার সাবেক অনেক মিত্র দেশ এখন চীনা বলয়ে। এই অঞ্চলে চীনের পণ্য বাণিজ্য ও অস্ত্র ব্যবসা অনেকটা উঠতি। লোহিত সাগরের তীরবর্তী অঞ্চল ও ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অঞ্চলে চীনের প্রভাব জোরের সঙ্গে বাড়ছে। চীন এই দেশগুলোতে অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে এবং তুলনামূলক স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দিচ্ছে। ফলত আফ্রিকা অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে চীন একচেটিয়া অবস্থানে রয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই টিটিপি চুক্তি (ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ চুক্তি; এই অঞ্চলের দেশগুলো বিশ্ব বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে) বাতিল করে। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়াতেও চীনের প্রভাব বাড়তি। এই অঞ্চলে আমেরিকার মিত্র দেশগুলো ট্রম্পের নীতির কারণে চীন বলয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকার অনেক মিত্র দেশ চীনা বলয়ে আসছে। কারণ, ৬৫টি দেশ নিয়ে চীনের ‘সিল্ক রোড’ প্রকল্পের ফলে এক নয়া বিশ্বব্যবস্থার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এখানে চীনের ‘সিল্ক রোড’ প্রকল্প বড় ধরনের একটা উন্নয়ন ফাঁদ। চীন কৌশলে এই প্রকল্প বাস্তবায়েন দিকে সফলভাবে পা বাড়াচ্ছে। যার ফলে আগামীতে চীনকেন্দ্রিক একটা নয়া বিশ্বব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে। যাতে থাকবে চীনের পণ্য বাণিজ্য ও অস্ত্র ব্যবসার বিশাল এক বাজার। আর এই কাজে শক্তিশালী প্রতিযোগী থাকবে। চীন প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে অর্থনৈতিক শক্তির সঙ্গে সামরিক শক্তিতেও পরাশক্তি হিসেবে প্রস্তুত হচ্ছে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিএও চীনকে এতদশ বিবেচনায় আমেরিকার আগামী দিনের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

সিরিয়া ও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান প্যাট্রিক শানাহান। দায়িত্ব গ্রহণের পর সামরিক বাহিনীর কমান্ডাদের সঙ্গে বৈঠকে শানাহান জানান, চীন এবং রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আধিপত্য মোকাবিলাকে কেন্দ্র করে বর্তমান প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি গড়ে উঠছে। তিনি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন চীনের প্রভাব মোকাবিলাকে। শানাহান জানান, বর্তমান প্রশাসন কিভাবে বেইজিংয়ের ওপর আরো বেশি চাপ বৃদ্ধি করা যায় তা নিয়ে ভাবছে। লন্ডন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইএসএস-এর চীন বিষয়ক ‘মিলিটারি ব্যালান্স’ প্রতিবেদন, মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিএও’এর হুমকি বিবেচনায় ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহানের চীন মোকাবিলার কঠোর নীতি এবং আমেরিকার সার্বিক সামরিক তৎপরতার একটা বিরাট অংশ থাকছে চীনের প্রভাব মোকাবিলা করা। যার মূলে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের চীনভীতি। শেষে প্রশ্ন থেকে যায়, চীনের প্রভাব মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র কি পেরে উঠবে?

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close