reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ জানুয়ারি, ২০১৯

সাফল্যকে আরো এগিয়ে নিতে হবে

দেশের যেকোনো সাফল্যে মানুষ গৌরবান্বিত হয়। আর এটাই যেন স্বাভাবিক। মনে রাখতে হবে, কোনো অর্জনকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ, এর সঙ্গে যুক্ত থাকে মানুষের মেধা, মনন ও একাগ্রতা। যার নিরবচ্ছিন্ন ফল আবার পেল বাংলাদেশ। বিষয়টি অনেক গৌরবের ইলিশ। শুধু গৌরব বললেই হবে না, ইলিশ আমাদের ঐতিহ্য, যা আমাদের অর্থনীতির একটি বিশেষ খাতও। এবার সেই ইলিশ নিয়ে আরেকটি সাফল্য যুক্ত হলো বাংলাদেশের। ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির পর এবার ইলিশের জীবন রহস্য উদ্্ঘাটনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশি গবেষক দল উদ্ভাবিত পদ্মার ইলিশের জিন বিন্যাস বা জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্বখ্যাত জার্নাল বায়োমেড সেন্ট্রালে (বিএমসি) প্রকাশিত হয়। ইলিশের জিনতত্ত্বের ওপর কাজ করা বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিএমসিতে বাংলাদেশের গবেষণাটি সবার আগে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করে, যা দেশের জন্য নিঃসন্দেহে একটি অনন্য অর্জন। এই স্বীকৃতিকে অন্যান্য দেশের গবেষকরাও বিশেষ গৌরবের বলে মনে করছেন। এর আগে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। আর এর নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা খান। মূলত তার নেতৃত্বে দেশের বেশ কয়েকজন গবেষক এই উদ্ভাবনের সঙ্গে ছিলেন। এই অর্জনের মাধমে দেশপ্রেমের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তারা স্থাপন করলেন, সে জন্য আমরাও নিজেদের গৌরবান্বিত মনে করছি। মনে রাখতে হবে, এ গবেষণা বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে ইলিশের সংখ্যা, বিভিন্ন মোহনায় প্রজননকারী ইলিশ কী ভিন্ন ভিন্ন ‘স্টক’ নাকি এরা সবগুলো একটি স্টকের অংশ, বাংলাদেশের ইলিশ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ইলিশ থেকে জেনেটিক্যালি স্বতন্ত্র কি না ইত্যাদি বিষয়ে জানতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া এই গবেষণার মাধ্যমে ইলিশ কীভাবে সমুদ্রের নোনা জল ও স্বাদু পানিÑ দুই জায়গাতেই বসবাস করে। ইলিশের রোগ কী, ইলিশ কী শুধু বদ্ধ জলাশয়ে চাষযোগ্য, কিংবা ইলিশ এত সুস্বাদু কেনÑ এমন অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়ার পথ তৈরি হয়েছে। যা ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য নতুন গবেষণার দুয়ার উন্মুক্ত করেছে। কিন্তু বলে রাখা ভালো, অন্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে গবেষণার ক্ষেত্র এখনো অনেক পিছিয়ে। তবুও সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যে বাংলাদেশি গবেষকরা যে অবদান রাখছেন, পর্যাপ্ত অর্থ ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে তারা যে আরো কৃতিত্ব স্থাপন করতে পারবেন, এর মধ্যেই তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারায় যেভাবে একের পর এক সাফল্য ও চমক দেখাচ্ছে, এবার দেশের বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্ষেত্রেও তার ছোঁয়া লাগবে। নতুন নতুন উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতায় তারা আরো মনোযোগী হবেন। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারে এ যুগে সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদেরও গবেষণা ক্ষেত্র আরো বাড়াতে হবে। সে ক্ষেত্রে ইলিশ গবেষণায় বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখিয়েছে, সেটিকে আরো এগিয়ে নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close