reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ জানুয়ারি, ২০১৯

অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের নানা খাতে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নতি এখন উন্নত বিশ্বের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, অর্থনীতি, শিশু, মাতৃমৃত্যুরোধসহ জীবনমানের উন্নয়নে আমাদের দেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল। বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশ এখন বিনিয়োগের জন্য এ দেশটিকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আগে বিদেশিদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে বিবেচনা করা হতো আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে। কিন্তু এখন সে বাধা নেই বললেই চলে। সরকারের বিরামহীন প্রচেষ্টায় এখন সেসব বাধা অনেকটাই অপসারণ করা হয়েছে। দ্রুতই আমাদের দেশ বিনিয়োগের আকর্ষণীয় ক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। বিনিয়োগ অর্থপূর্ণ ও নিশ্চিত করতে এ সরকার বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা। দেশি-বিদেশি বড় শিল্প উদ্যোক্তারা এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারবেন নিশ্চিন্তে। আর এভাবেই বিনিয়োগের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের দেশ দ্রুতই উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের কাতারে চলে যাবে। এর জন্য প্রয়োজন শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তি। দরকার ধারাবাহিক উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন। অর্থনৈতিক জোন গঠন দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন আরো দ্রুততর করবে। গত আট বছরে অর্ধশতাধিক অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে বেজা। তবে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বাস্তবায়ন করা হবে জমি পাওয়া সাপেক্ষে। উচ্চহারে প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথ দেখাবে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল। জাতীয় অর্থনীতিতে জোগাবে শক্তি। দূর হবে বেকারত্ব। প্রতিটি ইকোনমিক জোনে শিল্প স্থাপনের অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। কলকারখানা স্থাপনের পর্যাপ্ত জায়গা যেমন প্রতিটি জোনে থাকবে, তেমনি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ শিল্প স্থাপনের অন্যান্য সেবা সহজে পাওয়া যাবে। ইকোনমিক জোনে যারা বিনিয়োগ করবেন, তাদের পুঁজির নিরাপত্তা বিধানেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি-বেজা আশা করছে, ইকোনমিক জোনগুলোয় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে। দেশকে শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেন। ২০১০ সালের আগস্টে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন সংসদে পাস হয়। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এখন উন্নয়নশীল দেশের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বদরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে পথ চলছে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে বেশির ভাগ শিল্পই গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। এর ফলে জমি, অর্থ ও সময় অপচয় হচ্ছে। এখন পরিকল্পিতভাবে শিল্পনগরী গড়ে তোলার কারণে জমির সঠিক বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে জমির অপচয় রোধ হবে। অন্যদিকে ব্যাপক হারে কৃষিজমি বা বনভূমি ধ্বংস হবে না। উল্টো অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে বনায়ন হবে। তা ছাড়া এককভাবে কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে গেলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য অবকাঠামোর খরচ এককভাবে করতে হয়। ফলে খরচ অনেক বেশি পড়ে। পণ্য পরিববহন খরচ বেশি হয়। তবে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন হওয়ায় শিল্প গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সব সেবা মিলবে ওই অঞ্চলেই। কাজেই উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য নতুন বিনিয়োগের যথাযথ ক্ষেত্র অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার সব উদ্যোগ সফল হোক- এ প্রত্যাশাই করি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close