রায়হান আহমেদ তপাদার

  ০৭ জানুয়ারি, ২০১৯

আন্তর্জাতিক

নতুন মেরূকরণে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি

মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, দ্রুতই আফ্রো-এশীয় আরব এলাকায় ইরান ও রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ও প্রাধান্য সম্প্রসারিত হচ্ছে। ফলে গত অর্ধশতাব্দী ধরে পাশ্চাত্যের যে প্রাধান্য এ অঞ্চলে সক্রিয় ছিল তা এখন ম্রিয়মাণ। যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্যের পৃষ্ঠপোষকতায় সুন্নি আরবরা যে শক্তিজোট গড়ে তুলেছিল, তা ইরান ও রাশিয়া সমর্থিত শিয়া মুসলিমদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা শক্তিজোটের সঙ্গে নিয়ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে নবগঠিত শক্তিজোট এ অঞ্চলে আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন মেরূকরণ ঘটাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন মেরূকরণ প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্র, পাশ্চাত্য, সৌদি আরবের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা শক্তিজোটের প্রভাব ক্ষুণœ হচ্ছে। আর তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে ইরান ও রাশিয়ার সমন্বয়ে গড়ে ওঠা শক্তিজোট। আরব বসন্তের ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যে নতুন করে রক্তাক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতা চলছে বিদায়ী বছরে। গত এক বছরের ঘটনাপ্রবাহে এ অঞ্চলের আরব দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিরোধ বেড়েছে। দেশগুলো আরো বেশি বিচ্ছিন্ন ও পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। ফলে অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ইসরায়েল। তবে গত এক বছরে আরব দেশগুলোর ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একচ্ছত্র প্রভাবের বিপরীতে এ অঞ্চলে রাশিয়ার ভূমিকা বেড়েছে। একই সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের আরেক প্রভাবশালী দেশ তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যে অন্যতম প্রভাব বিস্তারকারী দেশে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন এখনো দুঃস্বপ্নই রয়ে গেছে। তাদের দুঃখ গাথা আরো নতুন মাত্রা নিচ্ছে।

সিরিয়া ও ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধের শেষ পরিণতি এখনো দেখার বাকি। যদিও একটা পরিণতির দিকে যাচ্ছে বলে আশা করা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পর ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের গোড়াপত্তনের পর মধ্যপ্রাচ্যে ও উপসাগরীয় অঞ্চলের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যে ঐক্য গড়ে ওঠে, তাতে সাম্প্রতিককালে বড় ফাটল ধরে। নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ায় সোভিয়েত রাশিয়া। সংগত কারণে আরব দেশগুলোর সঙ্গে সোভিয়েত রাশিয়ার মিত্রতা গড়ে ওঠা ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু তা হয়নি। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্যের সঙ্গে সৌদি আরবসহ নেতৃস্থানীয় প্রভাবশালী আরব রাষ্ট্রগুলোর মিত্রতা এবং অন্যদিকে পাশ্চাত্যের মদদপুষ্ট ও পাশ্চাত্যসৃষ্ট ইসরায়েলের বিরোধিতা এ দ্বিমুখীনীতি দোদুল্যের শিকার হয় মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলো।

বিপ্লবোত্তর ইরান মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতি দুর্বার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় এবং বৈশ্বিক পুঁজিবাদের শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে। শিয়া মতানুসারী আয়াতুল্লাহরা ইরানের বিপ্লবী মতাদর্শকে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রসমূহে প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করতে তৎপর হয়ে ওঠে। পুঁজিবাদী পাশ্চাত্য ও সুন্নি আরব দেশসমূহ ইরানকে নানাভাবে পরাস্ত করার ফন্দি আঁটে। সুন্নি ইরাককে ইরান আক্রমণে উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং আট বছরব্যাপী ইরান-ইরাকযুদ্ধ পরিচালনা করা হয়। পাশ্চাত্য পরিচালিত সে যুদ্ধে ইরান বিজয়ী হয় এবং নতুন এ দেশটির মনোবল বহু গুণ বেড়ে যায়। ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধুত্ব দিন দিন গাঢ় হতে থাকে এবং একপর্যায়ে তারা তাদের মিত্রতাকে আঞ্চলিক শক্তিজোটে রূপান্তর ঘটায়। যারা মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনা করেন, তারা জানেন যে অধুনা আন্তর্জাতিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হলো মধ্যপ্রাচ্য।

এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যকে বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ভাবা যায় না। আবার আন্তর্জাতিক রাজনীতির যেকোনো ঘটনার ব্যাখ্যায় মধ্যপ্রাচ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একসময় এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পাশ্চাত্য শক্তির প্রভাব ছিল দেদীপ্যমান। কিন্তু গত শতাব্দীর সত্তর দশকে ইরানে ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত হলে মধ্যপ্রাচ্যের আন্তর্জাতিক রাজনীতির স্বরূপ পাল্টাতে থাকে। পাশ্চাত্যের প্রভাব দূর করতে স্নায়ুযুদ্ধকালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাববলয় গড়ে তুললেও তা পাশ্চাত্যকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। পাশ্চাত্যের লেজুড়বৃত্তি করে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হয় এবং এ অঞ্চলসহ মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পর ইরান আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। আস্তে আস্তে এ রাষ্ট্র দুটি মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়। মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বাস্তবতায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ইরানের পাশে দাঁড়ায়। এভাবে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সমন্বয়ে একটি শক্তিজোট গড়ে ওঠে। এ শক্তিজোটের প্রতিপক্ষ হিসেবে আগেই গড়ে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরবের শক্তিজোট। আশির দশক থেকে এ পরস্পরবিরোধী শক্তিজোটের মধ্যে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য দ্বন্দ্ব-সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতির নিয়মিত ঘটনা প্রবাহে রসদ জোগাতে থাকে। ইয়েমেনে সুন্নি সরকারের বিরুদ্ধে ইরানপন্থি হুতি বিদ্রোহীরা যে যুদ্ধ শুরু করেছিল, তা স্পষ্টত ইরান ও রাশিয়ার সহযোগিতায় দুর্বার প্রতিরোধের রূপ নেয়।

অন্যদিকে সৌদি আরবের উপর্যুপরি বোমা বর্ষণে ইয়েমেন রক্তাক্ত হয়ে ওঠে এবং সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। সৌদি সুন্নিরা এক ফুৎকারে হুতি বিদ্রোহের আগুন নিভাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাশিয়া ও ইরানের পৃষ্ঠপোষকতায় শিয়া হুতিরা পাশ্চাত্য ও সুন্নি আরবদের যুদ্ধ-হুঙ্কার উপেক্ষা করতে সক্ষম হয়। একপর্যায়ে সৌদি আরবের অহংকার চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় এবং শিয়া হুতিদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে ইয়েমেন সরকার। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইয়েমেন সরকার ও হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। সানা থেকে এএফপি জানায়, গত ১৭ ডিসেম্বর সোমবার মধ্যরাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। বিশ্বমিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, গত ১৮ ডিসেম্বর ইয়েমেনের হোদেইদা বন্দরনগরীতে শান্তি ফিরে এসেছে। যদিও যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর মুহূর্তে সরকারি বাহিনী ও হুতিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে একাধিকবার এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি পিছিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে শান্তি প্রক্রিয়া বিদ্যমান রয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ বলে, ওই এলাকায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। হুতি বিদ্রোহী ও সরকারি পক্ষ ওই কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এই কমিটির প্রধান জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা। পুনর্মোতায়েন সমন্বয় কমিটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজ শুরু করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, উভয় পক্ষ শান্তিপ্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সমন্বয় কমিটির পর্যবেক্ষকরা যুদ্ধবিরতির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং কমিটির চেয়ারম্যান প্রতি সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদে প্রতিবেদন জমা দিচ্ছেন।

তা ছাড়া ইয়েমেন সংকট নিরসনে উপর্যুুক্ত শান্তিপ্রক্রিয়া এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ইয়েমেনের ঘটনাপ্রবাহ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, সেখানকার হুতি বিদ্রোহীদের দমন করা খুবই দুরূহ এবং ইরান ও রাশিয়ার আধিপত্য অপ্রতিরোধ্য। দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জর্জরিত মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি ঘটনা শিয়া-সুন্নি এবং পাশ্চাত্য-রাশিয়ার দ্বন্দ্বময় সম্পর্কের বাঙময় প্রকাশ হিসেবে বিকশিত হয়। ইরান-ইরাকযুদ্ধ, সিরিয়াযুদ্ধ এবং ইয়েমেনযুদ্ধ প্রভৃতি সংঘাতময় ইস্যুতে সেই দ্বন্দ্বের চিত্র দেখা যায়। আগেই উল্লেখ করেছি, কীভাবে সুন্নি ইরাক এবং তার পৃষ্ঠপোষক পাশ্চাত্য শিয়া ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ-দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখে এবং কীভাবে সে যুদ্ধে ইরান রাশিয়া জয়ী হয়। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাত করতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার আরব মিত্ররা একাট্টা হয়। শিয়া ইরান ও রাশিয়া বাশারের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন ঘোষণা করেছিল বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। তিনি অবশ্য বিশ্বাস করতেন না, সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ বাশারকে উচ্ছেদ করবে। সিরিয়াযুদ্ধে আসাদের চিরায়ত মিত্র ইরান এবং রাশিয়া পাশ্চাত্য ও সৌদি আরবের হুঙ্কার উপেক্ষা করে সিরিয়ার রণাঙ্গনে নেমে পড়ে এবং বাশার বিরোধীদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়।

নানা হুমকি-ধমকির পর যুক্তরাষ্ট্র এখন স্বীকার করছে যে বাশারকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, সম্ভবত আসাদই সিরিয়ায় ক্ষমতায় থাকছেন।

এমনকি সিরিয়ায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি জেমস জেফরে আটলান্টিক কাউন্সিলকে বলেছেন, আমরা সিরিয়ার প্রশাসন ও ক্ষমতার মৌলিক পরিবর্তন দেখতে চাই। আমরা আসাদকে তাড়াতে চাই না। মৌলিক পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হলে সিরিয়ার পুনর্গঠনে পাশ্চাত্য দেশগুলো বা আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাসমূহ এগিয়ে আসবে না। আরব দেশগুলোর ওপর সৌদি আরবের একচ্ছত্র প্রভাব নেই। ইয়েমেনযুদ্ধের বদনাম ও বোঝা দুটোই দেশটির ঘাড়ে চেপে বসেছে। ফিলিস্তিন, সিরিয়া ও লিবিয়ায় সংকটে সৌদি আরব যেন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে। কাতারের ওপর অবরোধ কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। তুরস্কের সাথে দেশটির সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়। আঞ্চলিক রাজনীতিতে আগামী দিনে সৌদি আরবের প্রভাব আরো কমতে থাকবে। নতুন বছরে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির সুবাতাস বইবে, এমনটি আশা করার সুযোগ না থাকলেও নতুন করে কোনো দেশ হয়তো আর যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠবে না। ইরাক ও সিরিয়া থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আরব শাসকরা যদি ভ্রাতৃঘাতী দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন, তাহলে নতুন বছর যুদ্ধবিধ্বস্ত এ অঞ্চলে পুনর্গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নবগঠিত শক্তিজোট মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতির সব ঘটনাপ্রবাহের গতি নিয়ন্ত্রণ করবে আগামী দিনগুলোয়।

লেখক : গবেষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close