reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৫ জানুয়ারি, ২০১৯

‘যেতে নাহি চায় তবু যেতে ...’

তিনি এলেন, জয় করলেন এবং নিভৃতেই চলে গেলেন। তবে এই নিভৃতে যাওয়াটা যেন নিঃশব্দে চলে যাওয়া নয়। তার মৃত্যুসংবাদ এ দেশের অনেক মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে কোটি হৃদয়। আমরা এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হারালাম। আমি সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কথা বলছি। একজন রাজনীতিক ও ভদ্রজনের কথা বলছি। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। ফুসফুসে আক্রান্ত হয়ে কয়েক মাস ধরে সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন একাত্তরের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। রাজনীতিতে নির্মোহ ও সজ্জন রাজনীতিক হিসেবে সবার কাছে তিনি ছিলেন প্রিয় ব্যক্তিত্ব। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। আমরা ‘প্রতিদিনের সংবাদ’ পরিবারের সব সদস্য এই সজ্জন ব্যক্তির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।

১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি, এই বীর মুত্তিযোদ্ধার জন্ম ময়মনসিংহে। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে এই মহান মুক্তিযোদ্ধার বাবা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়। বাবার এই নৃশংস মৃত্যুতে তিনি কতটা আহত হয়েছিলেন, তা জানা না গেলেও বোঝা যায় স্বাভাবিকভাবে এ মৃত্যুকে তিনি মেনে নিতে পারেননি। নিভৃতেই দেশত্যাগ করে চলে গেলেন যুক্তরাজ্যে। সে সময় তিনি লন্ডনে বাংলাদেশ যুবলীগের সদস্য ছিলেন। লন্ডনে বসবাসকালে সৈয়দ আশরাফ ফেডারেশন অব বাংলাদেশি ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের (এফবিওয়াই ইউ) শিক্ষা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৯৬ সালে সৈয়দ আশরাফ দেশে ফিরে আসেন এবং একই বছর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। সরাসরি রাজনীতিতে এখানেই তার যাত্রা শুরু। এরপর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বারবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সব পর্যায়ে সরকারের শীর্ষপদে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যা কিছু পেয়েছেন, স্বীয় যোগ্যতায় তা অর্জন করেছেন। নির্মোহ এই মানুষটি কখনো কোনো পদ বা সম্পদ আহরণের পেছনে সময়ক্ষেপণ করেননি। কোনো অনৈতিকতা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close