reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮

অঙ্গীকারের নির্বাচন

ইশতেহারের মূল কথা অঙ্গীকার। নির্বাচনের আগে অনেকে অনেক রকম অঙ্গীকার করে থাকেন। কিন্তু পরবর্তীতে তা রক্ষা করেন কজন। তবে নির্বাচনের আগে এ ইশতেহারের দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকেন সমর্থক গোষ্ঠী। যদিও তারা জানেন, ইশতেহারে যেসব বাক্য উচ্চারিত হয় তার সবটুকু রক্ষা করাও সম্ভব নয়। তারপরও ইশতেহারের ওপর পথেঘাটে, চায়ের টেবিলে আলোচনার ঝড় ওঠে। নির্বাচন সামনে রেখে একসময় এ ঝড় উৎসবে পরিণত হয়। এখানে একটি কথা না বললেই নয় যে, ইশতেহার প্রশ্নে অন্যান্য দলের তুলনায় আওয়ামী লীগ অঙ্গীকার রক্ষায় এগিয়ে আছে। অন্তত বাস্তবতা সে কথাই বলে।

ইতোমধ্যে প্রায় সব দলের ইশতেহার আমরা জানতে পেরেছি। পাশাপাশি প্রখ্যাত কবি সুনীল গাঙ্গুলীর কবিতার বিখ্যাত চরণটি আমাদের শঙ্কিত করে। তিনি বলেছেন, ‘তেত্রিশ বছর কেটে গেল, কেউ কথা রাখেনি।’ বাক্যটি ব্যক্তির ওপরে অর্পিত বলেই রক্ষা। রাষ্ট্র বা সমষ্টির ওপরে নয়। কেউ কথা না রাখলে দেশ ও জাতির অগ্রগতি কল্পনা করা যায় না। বিশ্বদরবারে আমাদের অগ্রগতি ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে। আমাদেরকে বলা হয় ইমার্জিং টাইগার। বিএনপির ইশতেহারে রয়েছে ১৯ দফা আর আওয়ামী লীগের ২১ অঙ্গীকার। বিএনপির ঘোষণাপত্রের শুরুতেই বলা হয়েছে, ক্ষমতায় গেলে গণতন্ত্রকে নিত্যদিনের অনুশীলনে পরিণত করবে। এখানেই প্রশ্ন! ‘এত দিন কোথায় ছিলেন নাটোরের বনলতা সেন’! পাশাপাশি আওয়ামী লীগ তার ইশতেহারের শুরুতেই বলেছে, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পঙ্তিমালাদ্বয় বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রথম দলটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতি মনোযোগী আর আওয়ামী লীগ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতি উৎসাহী। অর্থাৎ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মাঝে ভোটযুদ্ধ। এখন দেখার বিষয়, ভোটারদের প্রত্যাশা কোথায়?

বিষয়টি ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নিচে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হলে উন্নয়নের ছাতার নিচেই থাকতে আগ্রহীর সংখ্যা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেয়ে বেশ কিছুটা বেশিই হবে। কেননা ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পাবেÑ এটাই স্বাভাবিক। এ দেশের ভোটাররা বিগত ৪৭ বছরে কতবার যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে মাঠে নেমেছে আজ আর তা কারো মনে নেই। কিন্তু প্রকৃত সত্যটি হচ্ছেÑ ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে ঠিকই কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা মনে করি, এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাক। পাশাপাশি উন্নয়নের যে ধারা তৈরি হয়েছে, তা অব্যাহত থাকুক। কেননা একটি নান্দনিক রাষ্ট্রের জন্য গণতন্ত্র ও উন্নয়ন কখনোই সাংঘর্ষিক নয়। তারা দুই সহোদর। আগামী নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের এই দুটি শব্দকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেশ পরিচালনা করাই হবে আমজনতার আকাঙ্খা পূরণ করা আর এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close