reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১২ নভেম্বর, ২০১৮

অনিয়মই নিয়ম

অনিয়মই যখন নিয়মে পরিণত হবে, তখন পৃথিবীর সব নিয়মনীতি যে মূল্যহীন হয়ে পড়বে, সম্ভবত সবাই তা জানি। আমাদের সামনে প্রতিনিয়তই এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। তবে কোনো প্রতিকার নেই। যে সরিষা দিয়ে ভূত ছাড়ানো হবে, সেই সরিষার মধ্যেই যদি ভূতের অবস্থান হয়, তাহলে ভূত তাড়াবে কে! আমাদের অবস্থাও অনেকটা তথৈবচ। সমাজে ভূত তাড়ানোর মতো সরিষার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। সমাজের প্রতিটি স্তরেই যেন ভূতরা শক্ত অবস্থান নিয়েছে। আর সে কারণেই এ দেশ এখন অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পরিলক্ষিত হচ্ছে ভূতের নেতৃত্ব। প্রশাসনে মানুষের অস্তিত্ব বিলুপ্তির পথে। একের পর এক ভুল প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্রের মধ্যে অসংগতি এবং অন্যান্য অনিয়মের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে যেন ঘটেই চলেছে। গত তিন বছরে একবারও সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু কেন...? এ প্রশ্নের জবাবে বলতে হয়, দুই ধরনের কারণ থাকতে পারে। এক. একটি বহুল প্রচলিত প্রবচনের ভেতরেই উত্তর নিহিত আছে। প্রবচনটি হলো ‘ছাগল দিয়ে হাল চাষ সম্ভব নয়’। দুই. দায়িত্বহীনতা।

প্রথম কারণ নিয়ে বিষদ আলোচনার প্রয়োজন নেই। তবে কোনোটিই আলোচনা বা সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতার কারণে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের মানই যে ক্ষুণœ হচ্ছে, তা নয়। দেখা দিয়েছে আস্থারও সংকট। ভর্তি পরীক্ষার কমিটিতে অযোগ্য ব্যক্তিদের সংযুক্ত করার যে অভিযোগ রয়েছে, তা নতুন করে প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। জবাবদিহি এবং দায়বদ্ধতার বিষয়টি মর্গে অবস্থান করার কারণে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিরও শেষ নেই। পাশাপাশি পুনরাবৃত্তিই প্রমাণ করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে মানবরূপী ভূতের অবস্থান এখন অনেকটা দৃঢ়। সরিষার অভ্যন্তরেই এদের বসবাস। সে কারণে নতুন করে নতুন সরিষার ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। আরো পরিষ্কার করে বললে বলতে হয়, ভুল-অনিয়ম ও দায়িত্বহীনতার প্রমাণ পাওয়ার পরও যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে আবার একই পথ অনুসরণ কারো কাম্য নয়। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা করেছে। আগেই বলেছি, অনিয়ম যেখানে নিয়ম, সেখানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমাজে অনেক প্রতিষ্ঠান বহাল তবিয়তে তাদের কর্মকা- পরিচালনা করবেÑএটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা এই স্বাভাবিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাই।

আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই এর দায়ভার বহন করতে হবে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এ ধরনের পরিস্থিতি কারো কাম্য হতে পারে না। প্রতিকারের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতেই হবে। এটি আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আর সে কারণেই যারা এই ক্ষতিকর কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের জবাবদিহির বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে হতে পারে শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা এবং এটাই সবার প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close