নিতাই চন্দ্র রায়

  ০৪ নভেম্বর, ২০১৮

পর্যালোচনা

ন্যায্যমূল্য ও প্রক্রিয়াকরণ শিল্প

সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, হরতালে প্রতিদিনের ক্ষতি প্রায় ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ২০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। সে হিসেবে গত দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘটে ৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয় দেশের কৃষক ও কৃষি খাত। ধর্মঘটে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ফুল, ফল ও শাকসবজির বৃদ্ধি বন্ধ থাকে না। এগুলো প্রাকৃতিক নিয়মেই বড় হয়। পরিপক্বতা লাভ করে। সময়মতো সংগ্রহ করতে না পারলে পচে নষ্ট হয়ে যায়। মিশে যায় মাটির সঙ্গে। আবার হরতাল-অবরোধের সময় কৃষিপণ্য হাট-বাজারে নিয়ে এলেও তার ন্যায্যমূল্য পান না কৃষক। অনেক সময় পানির দামে ফল-মূল, শাকসবজি ও দুধ বিক্রি করে কৃষককে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতে হয় খালি হাতে। কৃষকের এই কষ্টের কথা কি বুঝে পরিবহন শ্রমিক নেতারা? যদি বুঝত তাহলে কৃষিপণ্যকে হরতালের আওতামুক্ত রাখত তারা।

সম্প্রতি পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের সবজির বড় পাইকারি বাজার বগুড়ার মহাস্থানগড় হাটে সবজির দামে ধস নামে। ফুলকপি ও মুলার দাম সবচেয়ে বেশি কমে মহাস্থানগড় হাটে। হরতালের দুদিন আগে যেখানে প্রতি মণ ফুলকপি ২০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, পরিবহন ধর্মঘটের সময় তা বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ৮০০ টাকায়। পরিবহন ধর্মঘটের আগে মহাস্থানগড় হাটে প্রতি মণ মুলা বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা। আর হরতালের সময় প্রতি মণ মুলা বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা মণ দরে। তার পরও ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া লাউ, করলা, বেগুন, বরবটিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি অর্ধেক দামে বিক্রি হয়েছে মহাস্থানগড়সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাটে। সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, মহাস্থানগড় হাট থেকে প্রতিদিন ১০০ ট্রাক সবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। কিন্তু দুই দিন পরিবহন ধর্মঘটের কারণে কোনো সবজিবোঝাই ট্রাকই ছাড়েনি মহাস্থানগড় হাট থেকে। মহাস্থানগড় হাটের এক পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন ধরনের ৮০ মণ সবজি কিনে ৩৬ ঘণ্টায়ও তা ঢাকা পাঠাতে পারেননি তিনি। এতে কিছু সবজিতে পচন ধরে। সময়মতো সবজি ঢাকায় পাঠাতে না পারায় তার প্রায় ৭০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। মহাস্থানগড় হাটে পর্যাপ্তসংখ্যক হিমাগার থাকলে কৃষক ও ব্যবসায়ী কাউকে এত ক্ষতির শিকার হতে হতো না।

মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষকের উৎপাদিত পুষ্টিকর সবজিও পচে নষ্ট হতো না। গত ২০০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ১৪ কোটি ডলালের কৃষিজাত পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছে ২৯ কোটি ডলারের। তার মানে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯৭ শতাংশ। আশা করা যায়, আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের রফতানি হবে দুই বিলিয়ন ডলার। তবে সমুদ্রপথে আমাদের পণ্য পাঠাতে বেশ সময় লাগে, যা কৃষিপণ্যের জন্য একটি সমস্যা। এটি সমাধানে সরকার কাজ করছে। রাজধানী আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত ২৫ অক্টোবর খাদ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ষষ্ঠ বাপা ফুডপ্রো বা খাদ্যপণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস আ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ও এক্সট্রিম এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে। খাদ্যপণ্য মেলার পাশাপাশি ‘ পঞ্চম রাইস ্অ্যান্ড গ্রেইনটেক এক্সপো বাংলাদেশ’ এবং ‘অষ্টম এগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো’ নামে আরো দুটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেন আয়োজকরা। প্রদর্শনী তিনটিতে বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ ১৫ দেশের ১৮৮টি প্রতিষ্ঠানের ২৫৮টি স্টল ছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, বাংলাদেশের কৃষি খাতের সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হলেও জিডিপিতে খাতটির অবদান মাত্র ১৪ শতাংশ।

জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান বাড়াতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্যের মূল্য বাড়াতে হবে। এ ছাড়া উৎপাদন পর্যায়ে লোকসান কমিয়ে আনতে হবে। প্রক্রিয়াজতা খাদ্য রফতানিতে সাফল্য পেতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি পণ্যের মান উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে। খাদ্যের নিরাপত্তার জন্যও বিনিয়োগ করতে হবে। প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য সংরক্ষণে পর্যাপ্ত হিমাগার স্থাপন করতে হবে। উন্নত পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থের সংস্থানও করতে হবে। অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা বলেন, বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের বাজার হচ্ছে ভারত। ২০২০ সালে দেশটিতে কৃষিপণ্যের বজার হবে ৯০০ বিলিয়ন ডলালের। তাই ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতের বাজারে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রফতানি করতে পারে। বিনিয়োগ সুযোগও আছে। ইতোমধ্যে প্রাণ গ্রুপ যৌথ বিনিয়োগ করেছে। প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের যন্ত্রপাতি উৎপাদনেও ভারতের উদ্যোক্তারা ভালো করছেন। তাদের অনেকে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রদর্শনীতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্রাণ, সজীব, ইফাদ, অলিম্পিক, এপি তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট, চানাচুর, চিপস্, মধু, ঘি, মিষ্টি ইত্যাদি প্রদর্শন করেছে। পাশাপাশি ক্রেতাদের কাছে বেশ কিছু পণ্যও বিক্রি করেছে। ভারতীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াজাত খাবার মোড়কীকরণের যন্ত্র নিয়ে হাজির হয়েছিল মেলায়। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান হলুদ, মরিচসহ বিভিন্ন মসলা গুঁড়ো করার যন্ত্র নিয়ে এসেছিল। বাস্তবে যন্ত্রটি বিশাল হওয়ায় একটি ছোট নমুনা বানিয়ে প্রদর্শন করেছিল তারা। এ ছাড়া চীনা একটি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার টিলার নিয়ে এসেছিল মেলায়।

ফসলের উচ্চফলনশীল নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন, গুণগতমানের বীজের ব্যবহার, সেচ সম্প্রসারণ, আধুনিক কৃষি যুক্তির প্রয়োগে কৃষিপণ্যের উৎপাদন বহু গুণ বাড়লেও, সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রসার ঘটেনি দেশে কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের। এ কারণে দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ মৌসুমি কৃষিপণ্য প্রতি বছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। যদি যথাযথ এলাকায় কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠা করা যেত, তাহলে একদিকে যেমন উৎপাদিত ফসলের নষ্টের পরিমাণ কমত, অন্যদিকে কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পেত। সেই সঙ্গে সৃষ্টি হতো বেকার গ্রামীণ যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ ও বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্র। এতে গ্রামীণ মানুষের ভাগ্যের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটত এবং গ্রামীণ অর্থনীতি হতো আরো সচল ও চাঙ্গা। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়া প্রায়োগিক গবেষণার অংশ হিসেবে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজনের নিমিত্তে পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত খামারি কর্তৃক উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও গবেষণা কর্মসূচির আওতাধীন এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সঠিক মূল্য নিশ্চিতকরণে বিপণন সুবিধা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও বিপণন ইউনিট প্রতিষ্ঠা করে। পল্লী উন্নয়ন একাডেমির আওতাধীন এই ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য হলোÑএক. স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজন করা। দুই. বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ। তিন. প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের ব্যবহার ও মেয়াদকাল বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সঠিক তাপমাত্রা সংরক্ষণ। চার. সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে অর্জিত জ্ঞান খামার ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে সম্প্রসারণ। পাঁচ. কৃষকের জন্য কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার সঠিক বিপণন ও বিতরণ পদ্ধতি অবলম্বন। ছয়. নিম্নমূল্যকালীন সময়ে ক্ষতি এড়ানোর লক্ষ্যে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজনে হিমাগার ভাড়ায় সংরক্ষণের সুযোগ প্রদান। পল্লী উন্নয়ন একাডেমির এ ধরনের কর্মসূচিকে আমার অভিনন্দন জানাই এবং এর বাস্তব প্রয়োগও দেখতে চাই সারা দেশে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। এ খাত থেকে আসে জিডিপি ও প্রায় ২ শতাংশ। এ শিল্পের সঙ্গে মোট জনশক্তির প্রায় ২০ শতাংশ জড়িত। প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে বেশ কিছু সুবিধা আছে। একদিকে এটি পণ্যের গুণাগুণ নিশ্চিত করে, অন্যদিকে খাদ্যের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে। প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্যের অন্যান্য গুণাবলির মধ্যে রয়েছে বিশুদ্ধতা, সংরক্ষণশীলতা এবং এর সহজ বিপণন ও বিতরণ ব্যবস্থা। প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আমরা সারা বছর মৌসুমি শাকসবজি ও ফল-মূলের স্বাদ গ্রহণ করতে পারি। প্রক্রিয়াকরণের ফলে কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজন বেশি হয়, কৃষক পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায়। রান্নাবান্নার কোনো ঝামেলা না থাকার কারণে কর্মজীবী মানুষের কাছে প্রক্রিয়াজাতকৃত খাদ্যের চাহিদা বেশি। বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সারা পৃথিবীতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি প্রকিয়াকরণ অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ৬২টি কৃষিপণ্যের নাম নিবন্ধন করেছে। এসব শিল্প মূলত ফলের রস, জ্যাম, জেলি, আচার, কমলা লেবুর মোরব্বা, সস ইত্যাদি তৈরি করে। এ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সঙ্গে প্লাস্টিক ও কাচশিল্পের সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের দেশে উৎপাদিত আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, আনারস, পেয়ারা, টমেটো, ফুলকপি, গাজর ইত্যাদি থেকে ক্যান্ডি, ম-, জুস, আচার জ্যাম জেলি, ঘন চিনির পানি, চিপস্ ইত্যাদি তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে তা তৈরি হতে খুব কমই দেখা যায়। সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে, সেখানে অঞ্চলভিত্তিক উৎপাদিত কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনের অগ্রাধিকার দিতে হবে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচুর গুণগতমানের আম ও টমেটো উৎপাদিত হয়, সেখানে আম ও টমেটোভিত্তিক প্রকিয়াকরণ শিল্প গড়ে তুলতে হবে। মধুপুর, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচুর আনারস উৎপাদিত হয়, সেসব স্থানে আনারসভিত্তিক প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দিনাজপুর ও পাবনায় প্রচুর লিছু উৎপাদিত হয়, ঈশ্বরদীতে প্রচুর গাজর উৎপাদিত হয় এসব এলাকায় লিচু ও গাজরকেন্দ্রিক কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশে ৪০ লাখ গার্মেন্টকর্মী আছে, তারা যদি প্রকিয়াজাতকৃত খাদ্য গ্রহণে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হন, তবে দেশেই এ শিল্পের এক বিশাল বাজার সৃষ্টি হবে, কৃষিপণ্যের মূল্য সংযোজন হবে এবং কৃষকও পাবেন তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য।

লেখক : সাবেক মহাব্যস্থাপক (কৃষি)

নর্থবেঙ্গল সুগার মিলস্ লিমিটেড, গোপালপুর, নাটোর

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close