reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ নভেম্বর, ২০১৮

সংলাপে দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য

রাজনীতিতে সংলাপ নতুন কিছু নয়। রাজনীতিতে অচলাবস্থাও নতুন নয়। দেশে দেশে, সমাজে রাজনীতিতে অচলাবস্থা থাকে বলেই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। রাজনীতিতে সংলাপ অপরিহার্য। এটি কখনো হয় প্রকাশ্যে আবার কখনো পর্দার আড়ালে। দেশ এখন আরেকটি নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের বহুল প্রতীক্ষিত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে অনুষ্ঠিত ওই সংলাপে বিএনপিসহ দেশের শীর্ষ বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসেন। সরকার তথা ১৪ দলের পক্ষে সংলাপে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেন ড. কামাল হোসেন। সংলাপে অংশগ্রহণকারী নেতারা সবাই সবার পরিচিত। তারা দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে রাজনীতি করে আসছেন। রাজনৈতিক মতভিন্নতা থাকলেও একই মাঠে দীর্ঘদিন বিচরণ করায় তাদের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধাবোধও রয়েছে। আর নিশ্চিতভাবেই সবাই চান এই দেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। রাজনৈতিক ব্যবধান সত্ত্বেও নেতাদের মধ্যে বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এক টেবিলে অনেক মত-পথের মানুষ বসলে সবার মধ্যে সব বিষয়ে মতৈক্য হবে না-এটাই স্বাভাবিক। তবে অনেক বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে। সংলাপে সরকারি দল বিরোধীদের অনেক দাবিও মেনে নিয়েছে। আর যেগুলো মানা সম্ভব হয়নি, সেগুলো সামনের দিনে আলোচনার জন্য রাখা হয়েছে। আর কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো আলোচনা করা রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ সেগুলো আদালতের এখতিয়ারভুক্ত। একজন ব্যক্তির পক্ষে যেমন সবাইকে খুশি করা সম্ভব নয়, তেমনি সরকারের পক্ষেও দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সব দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে নিশ্চয়ই আলোচনা করে বিরোধীদের দাবির প্রতি সম্মান দেখানোর দায়িত্ব রয়েছে ক্ষমতাসীনদের ওপর। আর তারা সেটা করেছেন যথার্থভাবেই। রাজনীতিতে দাবি-পাল্টা দাবি থাকবে। কিন্তু এর সবগুলো যেমন আদায় হওয়া সম্ভব নয়, ঠিক তেমনি তা আদায় না হওয়া পর্যন্ত একগুঁয়েমিও কাম্য নয়। সবচেয়ে বড় কথা, রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশের নাগরিকদের কথা মনে করে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব একটু বেশি, কারণ তারা টানা প্রায় দশ বছর জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আছে। জনগণের মনের কথা তাদের বুঝতে হবে। আবার বিএনপির ভূমিকাও কম নয়, তারাও দীর্ঘদিন দেশ পরিচালনা করেছে। অনেক ছাড়-গ্রহণ-বর্জন-এ নিয়েই রাজনীতি। এই সত্যটি আমাদের সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। রাজনীতিতে শুধু গ্রহণই কাম্য নয়, আবার শুধু বর্জনই প্রত্যাশিত নয়। জনগণের কথা বিবেচনা করে, রাজনৈতিক শক্তি-সামর্থ্যরে বাস্তবতা আমলে নিয়ে ভূমিকা পালন করতে হবে নেতাদের। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংলাপ অনুষ্ঠানই একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। সামনে নির্বাচন, এ সময় হঠকারী সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দল ও দেশের জনগণের জন্য অকল্যাণ বয়ে আনতে পারে। তাই সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন করে সংলাপ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে হবে। সংলাপ এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে। যেকোনো অচলাবস্থা দেশের জনগণ প্রত্যাশা করে না। সংলাপে নেতানেত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা সবার কাম্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close