reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

অর্থনৈতিক উন্নয়নে ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল’

বদলাবে না। বদলাতে শুরু করেছে অর্থনীতি। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অঞ্চল বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। দ্রুতই উন্নত দেশের সারিতে নাম লেখাতে চলেছে এ দেশ। এরই ধারাবাহিকতায় অর্থনৈতিকভাবে দেশকে শক্তিশালী করতে গড়ে তোলা হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চল। উৎপাদন বাড়ানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে দ্রুত গতিতে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, শিল্পকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত স্বপ্নকে পূরণ করতে চলেছে এই শিল্পাঞ্চলগুলো। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) ভাষ্য মতে, দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যেই ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ শেষ করা হবে। এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় ২০০৯ সালে এবং ২০১০ সালে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন পাস হয় সংসদে। দেড় লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠবে এ অঞ্চল। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে এই মহাপরিকল্পনা, যা ইতোমধ্যেই যাত্রা শুরু করেছে।

বেজার তথ্য মতে, ফি বছর দেশের কর্মবাজারে ২৭ লাখ মানুষ প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু কাজের সুযোগ না থাকায় এদের অধিকাংশই বেকার থেকে যায়। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কর্মক্ষম বেকারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। আগামী ১৫ বছরের মধ্যে এই শিল্পাঞ্চলগুলোয় কাজের সুযোগ পাবে এক কোটি মানুষ। প্রস্তাবিত ১০০টি অঞ্চলের মধ্যে ইতোমধ্যেই অনুমোদন পেয়েছে ৮৯টি। এর মধ্যে ১২টি বেসরকারি অঞ্চলের প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আবার ছয়টি পেয়েছে চূড়ান্ত অনুমোদন। ইতোমধ্যে ১৭টি অঞ্চলের কর্মকা- এগিয়ে চলেছে বিদ্যুৎ গতিতে। এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগের বেশ কিছু প্রস্তাব রয়েছে অনুমোদনের অপেক্ষায়।

বাংলাদেশের বর্তমান রফতানি আয় ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ডলার। অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে এ রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৬৬৬ কোটি ডলার। বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হলে এখানে বিনিয়োগের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। বিনিয়োগ বাড়লে বাড়বে কর্মসংস্থান। বাড়বে মানুষের আয়। প্রবৃদ্ধির হার হবে উচ্চ। এ জন্য দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কে নেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে এ কর্মসূচি। এর সফলতাই বাংলাদেশকে পৌঁছে দেবে তার গন্তব্যে। তৈরি হবে পরিবেশবান্ধব শিল্প নগরী। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। বাড়াতে হবে ২ থেকে ৩ শতাংশ। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার জন্য বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। আর এই বিনিয়োগকে বাস্তবমুখী করতে অর্থনৈতিক অঞ্চল বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে এবং করবে বলেই তাদের বিশ্বাস। আমরাও ব্যবসায়ীদের এই মতামতের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলতে চাই, উন্নত বিশ্বে পরিণত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা যদি সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে এগোতে পারি, তাহলে তা আর বেশি দূরে নেই। চলমান প্রজন্মের জীবদ্দশাতেই তা দেখার সুযোগ সৃষ্টি করবেÑএটাই আমাদের বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close