reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আইনি লড়াইয়ের বিষয়টি সংগত

সাইবার অপরাধের নগ্ন শিকার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ২০ লাখ ডলার চুরির ঘটনাটি। এতে ডিজিটাল পদ্ধতির একটি নেতিবাচক দিক উন্মোচিত হয়েছে; যা নিঃসন্দেহে জটিল ও একটি ভয়াবহ প্রক্রিয়া। পাঁচটি সুইফ্ট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া ওই অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরত এসেছে ২ কোটি ডলার। বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। তবে ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের কোনো হদিস মেলেনি এখনো। এবার সে অর্থ ফেরত আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা দায়ের করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কারণ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির পর এ-সংক্রান্ত মামলা করার কোনো আইনি বৈধতা থাকবে না বাংলাদেশ ব্যাংকের। তবে তারও আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ঢাকায় মামলা করা হয়। কিন্তু এখনো ওই মামলার কোনো তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই সাইবার অপরাধের সঙ্গে কারা যুক্ত ছিল, তা আজও উদ্ঘাটন করতে পারেনি বাংলাদেশসহ ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্র; যা অবশ্যই দুর্ভাগ্যজনক।

দেশে আর মাস কয়েক পরেই জাতীয় নির্বাচন। এ অবস্থায় সরকার চাচ্ছে নির্বাচনের আগেই মামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে। গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘ডিসেম্বরের আগেই মামলার উদ্যোগ’ শীর্ষক একটি বিশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করবে বাংলাদেশ। কিছুটা দেরিতে হলেও মামলার মাধ্যমে চুরি যাওয়া অর্থের পুরোটাই ফেরত আনা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ মামলার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসির উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, আইন মোতাবেক এমন ঘটনায় মামলা করতে সর্বোচ্চ তিন বছর সময় পাওয়া যায়। সে হিসেবে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে আদালতে যেতে হবে। প্রতিবেদনটিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় দায়ী প্রতিষ্ঠান রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের জুপিটার শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক মায়া শান্তোস দেগুইতো জেল, অর্থদ-সহ উভয় দ-ে দ-িত হতে পারেন। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলার রায় ঘোষণা হবে শিগগিরই। কেননা রিজার্ভ চুরি সংঘটনের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত কনফারমেশন ছাড়াই তিনি অর্থ ছাড় করেছেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। গত ৫ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পক্ষ থেকে করা তদন্তের একটি প্রতিবেদন ফিলিপাইনের আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানেও ফিলিপাইনের আরসিবিসির কর্মকর্তাদেরই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

সাইবার অপরাধের মাধ্যমে পাচার হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি যতই জটিল হোক না কেন, এ প্রসঙ্গে আইনি লড়াইয়ের বিষয়টি সংগত বলে আমরা মনে করি। দুই বছর আগে চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের যা যা করণীয়, তার সবই করতে হবে। কেননা এর সঙ্গে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের ভাবমূর্তিও জড়িত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close