reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

শান্তির অন্তরায় সেনাবাহিনী

জীবন চলার পথে কখন যে কে কার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, তা বলা খুবই কঠিন। তবে অন্তরায়ের পেছনে যে কার্যকারণ নিহিত থাকে তার নাম স্বার্থ। আর এই স্বার্থের কারণে বিশ্বব্রহ্মান্ডে কত কিছুই না ঘটেছে। দু-দুটি বিশ্বযুদ্ধ হয়ে গেল এই ভূমন্ডলে। আগামীতেও যদি কোনো বিশ্বযুদ্ধ হয় তাও হবে এই স্বার্থজনিত কারণে। এই স্বার্থ আবার ব্যক্তি, ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সামষ্টিক পর্যায়ে ক্রিয়া করে থাকে। ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র সামষ্টিক পর্যায়ে যখন ক্রিয়াশীল থাকে, তখন তা কোনো ইতিবাচক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে না। তারা যা কিছু করে বা করবে তার সবটুকুই নেতিবাচক। জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যত দিন আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে, তত দিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে শান্তি ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই।

কী করেছে এই দেশের সেনাবাহিনী আর এসব অপরাধের জন্য? প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর বর্বরতা সব সীমাকে অতিক্রম করেছে। তারা নির্বিচারে গণহত্যা করেছে। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। এসব অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ও জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার কথাও উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মিয়ানমারের উন্নয়ন এবং একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে দেশটির সেনাবাহিনীই সবচেয়ে বড় বাধা। কেবল মিয়ানমারই নয়, মিয়ানমারের মতো পৃথিবীর সব দেশের চিত্র এক। সেনাবাহিনী সব সময়ই দেশের মোট জনসমষ্টির একটি ক্ষুদ্রতম অংশ হয়েও মিয়ানমারের মতো কোনো কোনো দেশে বৃহত্তর জনসমষ্টির ওপর এরা বর্বরোচিত আচরণের অবতারণা করে। এখানে ক্ষুদ্রতম সামষ্টিকের স্বার্থ সংরক্ষণে তারা নিজেদের নিয়োজিত রাখে; যা কখনোই সুফল বয়ে আনে না। কখনো আনেনি। ইতিহাস তার সাক্ষ্য।

প্রতিবেদনে খুব পরিষ্কার করেই জানানো হয়েছে, প্রকৃত অর্থেই মিয়ানমার যদি শান্তি চায়, তাহলে তাকে সবার আগে তাদের সেনাপ্রধান, সিনিয়র জেনারেল মিন অং হাইংসহ তাতমাদোর শীর্ষ পর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিয়ে এই বাহিনীকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে; যাতে এর পুরো নিয়ন্ত্রণ বেসামরিক প্রশাসনের হাতে থাকে। মিয়ানমার গণতান্ত্রিক পরিবেশ অর্থাৎ বৃহৎ সামষ্টিকের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে চাইলে এর কোনো বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, মিয়ানমার রাষ্ট্র ও জনগণের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। তারা রোহিঙ্গাদের ওপর যে অন্যায় করেছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রোহিঙ্গা জনসমষ্টির পুনর্বাসনে ইতিবাচক ভূমিকায় এগিয়ে আসুক। রোহিঙ্গারা পুনর্বাসিত হলে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সত্য প্রতিষ্ঠিত হলে বিশ্বের বিবেকবান মানুষরই জয় হবে আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close