শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং...
আন্দোলন নিয়ে বাজারে গুজবের শেষ নেই। পক্ষে-বিপক্ষে গুজবের ছড়াছড়ি। টানা আট দিন রাস্তায় অবস্থানের পর গত সোমবার ক্লাসে ফিরেছে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ঢাকার শীর্ষস্থানীয় স্কুল-কলেজসহ ৪২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত ঘোষণার মধ্য দিয়ে ফিরে যান ক্লাসে। বিশেষ করে সেদিন সরকারের মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন আইন অনুমোদন হওয়ায় স্বস্তি ফিরে আসে শিক্ষার্থীদের মাঝে। একই সঙ্গে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মধ্যে বিদ্যমান নানা জল্পনা-কল্পনারও অবসান হয়।
আন্দোলন নিয়ে অনেকে অনেকভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। যার মাঝে অপব্যাখ্যাই বেশি। কেউ কেউ বলেছেন, এ আন্দোলনকে গণআন্দোলনে পরিণত করে সরকারের দুর্গে হানা দেওয়া ছিল একটি উদ্দেশ্য। যারা এ রকম ভেবে এগিয়েছেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উভয় দিক থেকে। তবে লাভের বখরা কোনো রাজনৈতিক দলের থলিতে ওঠেনি। লাভবান হয়েছে সাধারণ মানুষ। আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সাধারণ মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে সক্ষম হয়েছে, অপরাধ হচ্ছে কোথায়। কী করলে এই অপরাধ থেকে মানুষকে বের করে আনা সম্ভব এবং তাদের লক্ষ্যও ছিল একটি। সমাজের গলে যাওয়া, পচে যাওয়া অনৈতিক ব্যবস্থাপত্রগুলোকে টেনেহিঁচড়ে সবার সামনে উন্মোচন করা। তারা তাদের কাজটি সুনিপুণভাবে শেষ করে বল সিনিয়রদের কোর্টে ঠেলে দিয়েছেন। এখন সম্মানীয় অভিভাবক এবং সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিরা ভেবে দেখবেন সমাধান কোন পথে!
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে চালকরা চুক্তিভিত্তিক কোনো বাস চালাতে পারবেন না; দিন হিসেবে বাস চালানোর জন্য মালিকদের কাছ থেকে বেতন পাবেন তারা। আর আজ থেকে রাজধানীর প্রতিটি বাস টার্মিনালে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স পরিদর্শনে নামবেন বাস মালিকরা।
চুক্তিভিত্তিক বাস চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যার অন্ত নেই। তাদেরকে তখন টাকার পেছনে ছুটতে হয়েছে পাগলের মতো। এখন আর তা করতে হবে না। তাদেরকে মাথার ওপর সার্বক্ষণিক চাপ নিয়ে আর গাড়ি চালাতে হবে না। আমরা মনে করি, বাস মালিকদের পাশাপাশি সরকারের তত্ত্বাবধানও জরুরি। অর্থাৎ এখানে একটি ক্রস চেক হওয়াটা খুবই জরুরি। আমরা আরো মনে করি, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কেউ যেন বিশ্বাসঘাতকতা না করে। তারা একবার প্রতারিত হলে সমাজে যে প্রলয়ঙ্করী ঝড় উঠবে, তা সামলানো কারো পক্ষে সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সমাজ বিশ্লেষকরা। সুতরাং সময় থাকতে সাবধান!
"