রোগের নাম পাহাড়ধস
বাংলাদেশ এখন বেশ কিছু রোগে আক্রান্ত। যার মধ্যে নতুন রোগ হিসেবে যুক্ত হয়েছে পাহাড়ধস। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর জীবনহানির মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। তবে কারণ চিহ্নিত করা সম্ভব হলেও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। আর এখানেই আমাদের দুর্ভাগ্য। আমরা জানি এ রোগের কারণ কী। এও জানি, এর প্রতিকার কী। কিন্তু জানেন না আমাদের চিকিৎসকরা। জানেন না বললে সত্যের অপলাপ করা হবে। তারা জানেন। অনেকের মতে, তারা জেনেও না জানার ভান করেন। অথবা বলা যায়, তারা রোগ সারার পক্ষে নন। রোগকে জাগিয়ে রাখতে পারলেই তাদের লাভ। লাভটা আর্থিক এবং বৈষয়িক।
গত ২৮ জুলাই মধ্যরাতে কক্সবাজার শহরের লিংক রোডের মুহুরীপাড়ায় ভয়াবহ পাহাড়ধস হয়েছে। বিসিক শিল্প এলাকার পাশে প্রায় দেড় শ ফুট উঁচু একটি পাহাড় ধসে পড়ে। এতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও দেশ ও জাতির জন্য এটি একটি অশনিসংকেত। ঘটনায় পাশের পাঁচ একর পাহাড়ি ভূমিতে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। ভূ-চিকিৎসকদের মতে, পুরো পার্বত্য এলাকায় পাহাড়কাটার এক মহোৎসব, যথেচ্ছাভাবে বৃক্ষনিধন প্রতিযোগিতা এবং ভূ-খাদকদের অনাচারে এ রোগের প্রাদুর্ভাব, যা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। গত ২৫ জুলাই এ শহরের রুমালবাহিয়ারছড়ায় পাহাড়ধসে একই পরিবারের চারজন মারা যান। ফি বছর পাহাড়ধসে শতাধিক মানুষ মারা গেলেও যাদের নড়েচড়ে বসার কথা, তাদের ভাবনায় কেউই ইতিবাচক নন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে একটি কথা না বললেই নয়, বিশ্লেষকরা এ যাবৎ যত মতামত দিয়েছেন, তার এক তিলার্ধও গ্রহণ করা হলে, দেশ রোগবালাই থেকে অনেকটা মুক্তি পেত। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ভূমিখাদকরা তাদের খাদ্য হিসেবে ভূমিকেই যখন চিহ্নিত করেছেন, তখন তাদের হাত থেকে এ মাটির কোনো মুক্তি নেই। যত দিন তাদের পাশ থেকে প্রশাসনের কিছু কালো মানুষকে সাদা মানুষে পরিণত করা অথবা আইনের আওতায় এনে তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা না করা হবে-ততদিন এ পাহাড়ধস থামার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা মনে করি, অচিরেই সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসবে-এটাই সবার প্রত্যাশা।
"