reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ জুলাই, ২০১৮

গিলোটিনে মানবতা

মানুষের কল্যাণ। মানবতার কল্যাণ। এটাই ছিল বিশ্বের গুণগত মান নির্ণয়ের একমাত্র চাবিকাঠি। মতাদর্শের কারণে বিভাজন ছিল। একপক্ষে ছিল নিপীড়ক, অন্যপক্ষে নিষ্পেষিত। একদিকে বিদ্রোহ, বিপরীতে দমন। এ দুইয়ের দ্বান্দ্বিক ও পারস্পরিক সংঘাতের মধ্য দিয়েই এগিয়েছে পৃথিবী। তবে এ কথা সত্য, শেষ পর্যন্ত মানুষ ও মানবতার কল্যাণের পক্ষে যারা লড়াই করেছেন তারাই জয়যুক্ত হয়েছেন। অন্তত ইতিহাস সে

সাক্ষ্যই দিচ্ছে।

সময়ের তালে তালে পৃথিবীর অনেক কিছুরই পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে মানুষের চিন্তা ও চেতনার। মুক্তবাজার অর্থনীতি এই চিন্তা ও চেতনার চুল্লিতে মুক্ত হস্তে জ্বালানি সরবরাহ করায় বিশ্বজুড়ে তা বিকশিত না হয়ে অবনমন ঘটেছে। কেননা মুক্তবাজার অর্থনীতি মানুষকে করেছে আত্মকেন্দ্রিক এবং উল্লম্ফন ঘটিয়েছে ভোগবাদী চিন্তা-চেতনাকে। বিশ্বের সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চিহ্নিত চীন ও রাশিয়ার দিকে আলোকপাত করলে তার প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে যা ঘটেছে তাকে স্মরণকালের এক হত্যাযজ্ঞের মহাদৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্ব সম্প্রদায়। তারপরও কাঠগড়ার বাইরে থাকছে মিয়ানমার। আগামীকাল সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। চীন ও রাশিয়া এ বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে থাকবে বলেই সবার ধারণা। আর এ কারণেই জাতিসংঘ কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থ হবে। নিউইয়র্কের কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য মতে, গত ফেব্রুয়ারির পর প্রায় পাঁচ মাসের বিরতিতে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হলেও এ নিয়ে খুব একটা আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই। কেননা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছে না নিরাপত্তা পরিষদ। পেছনের ইতিহাসটি হচ্ছে, জাতিসংঘের স্থায়ী পরিষদের দুই সদস্য চীন ও রাশিয়া মিয়ানমারকে আগলে রেখেছে। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য একমত না হলে জাতিসংঘের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্তে যাওয়া সম্ভব নয়। এমনই এক পরিস্থিতিতে বলতেই হয়, বিশ্ব যেন আজ এক বিকলাঙ্গ রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে। যে রাষ্টের রাষ্ট্র নায়কেরা মানব কল্যাণ ও মানবতা লালনের পথ থেকে সরে গেছেন যোজন যোজন দূরে। আমরা জানি, চীন এবং রাশিয়া একসময় নিপীড়িত ও নির্যাতিতদের পক্ষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আজ বলতে হয়, মানব কল্যাণের সেই চিন্তা-চেতনাকে হত্যা করে সমাজতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে।

আমরা মনে করি, সমাজতন্ত্রের ঝান্ডা বহন করতে হলে চীন ও রাশিয়াকে অবশ্যই তাদের আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাদের মানবতার পক্ষে নতুন করে প্রদীপ জ্বালাতে হবে। সম্ভবত যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিপীড়িত মানুষের চিরায়ত প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist