চরিত্র বদলে গেলে বদলে যায় সব
বিষয় যখন, ‘চরিত্র বদলে গেলে বদলে যায় সব’। উত্থাপনের আগেই প্রশ্ন এসে যায় এ চরিত্র কার? কেউ বলবেন, পৃথিবীতে জীব, জন্তু, প্রাণিজগতে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিষয়ের কোনো শেষ নেই। শতসহস্র চরিত্রকে এনে দাঁড় করানো যাবে। কিন্তু এরপরও কথা থেকে যায়। কার চরিত্র পরিবর্তনের সঙ্গে পৃথিবীর চরিত্রের পরিবর্তন ঘটে। এ প্রশ্নের জবাবে আমরা কেউই বলতে পারব না, প্রকৃতির চরিত্র পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব পরিবর্তনের শুরু। আমরা মনে করি, এটি পরিবর্তন বা বদলে যাওয়ার একটি বাহ্যিক রূপ। ভেতরের কারণ সম্পূর্ণ বিপরীতে। যার সবটুকুই মানবসৃষ্ট এবং অনৈতিক ও নৈতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে পরিচালিত।
যেসব পরিবর্তনের পেছনে অনৈতিকতার ইন্ধন থাকে, সেখানে নান্দনিক ফলাফল আশা করা যায় না। প্রযুক্তির বদান্যতায় বিশ্বসভ্যতা আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, তার সবটুকুই ইতিবাচক নয়। আবার সবটুকুকেই নেতিবাচকও বলা যাবে না। তবে, প্রযুক্তির ব্যবহারকে আমরা একবাক্যে নেতিবাচক বললে খুব একটা বেশি বলা হবে না। এই নেতিবাচক ব্যবহারের ফলে বিশ্ব আজ বসবাসের অনুপোযোগী হওয়ার দিকে হান্ড্রেড মিটার স্পিøন্টারের বেগে এগিয়ে চলেছে। একে প্রতিরোধের জন্য কেউ আর তেমন গুরুত্ব দিয়ে ভাবার কথা মনে করছেন না। মনে করছেন না বলেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন পরম আত্মীয় হয়ে উঠেছে। তবে এখানে মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি, এ আত্মীয়তা কেবল দুর্যোগ ডেকে আনার ক্ষমতা রাখে। উপকারে আসে না। না আসার পেছনেও যথেষ্ট কার্যকারণও আছে। যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তিকে সমস্ত জীবন ধরে নিপীড়ন করে থাকে-তাহলে সেই নিপীড়িত ব্যক্তির কাছে কোনো উপকার আশা করাটা কখনোই বাস্তবসম্মত নয়। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের বাস্তবতাও অনেকটা সে রকম।
বাস্তবতা এ রকম বলেই বাংলাদেশে আজ ভরা বর্ষা মৌসুমে একফোঁটা বৃষ্টির দেখা নেই। শ্রাবণ মাসে চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে জনজীবন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৬। এটা ছিল বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। বৃষ্টি বিবর্জিত দিনে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় গরম অনুভূত হয়েছে তাপমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। পরিবর্তনের এ ধারা ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকলে, অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সম্ভবত তা পরিমাপ করে না বলাটাই শ্রেয়। তার চেয়ে বলা যায়, আমরা আমাদের চরিত্রকে মানবতার কল্যাণে পরিচালিত করতে সক্ষম হলে সমস্যা অনেকটা তিরোহিত হতে পারে। এক কথায় বলা যায়, বিশ্বমানব চরিত্রই পারে পৃথিবীকে একটি নান্দনিক রাষ্ট্রে রূপান্তর ঘটাতে এবং যা হতে হবে বৈরিতা নয়, প্রকৃতির সঙ্গে সহমর্মিতার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে। মানুষের কাছে প্রকৃতির এটুকুই প্রত্যাশা।
"