সত্তরে পা রাখল আওয়ামী লীগ
২৩ জুন শনিবার ছিল দেশ ও জাতির জন্য একটি শুভক্ষণ ও শুভদিন। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার কে এম দাশ লেনের রোজগার্ডেনে জন্ম নেয় যে শিশু, আজ সে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এক রাজনীতির পীঠস্থান। যে দলের হাত ধরে বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা অর্জন করেছে; নির্মাণে সক্ষম হয়েছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। গতকাল শনিবার ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম জন্মদিন। যে রাখাল রাজার মেধা, মনন ও ভালোবাসার নির্যাসে আওয়ামী লীগ আজ এখানে এসে দাঁড়িয়েছে তার নেতৃত্বে এখন সেই রাখাল রাজার যোগ্যতম উত্তরসূরি তদীয় কন্যা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশের সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘আওয়াম’ শব্দের অর্থ জনগণ আর ‘লীগ’ হচ্ছে ওই জনতার ‘ঐক্য’। সে কারণেই আওয়ামী লীগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তার নামের সঙ্গেই যুক্ত হয়ে আছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণমানুষের দল, দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের ইতিহাস বৃহত্তম জনসমষ্টির অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে গোটা জাতি আওয়ামী লীগের পক্ষে নিরঙ্কুশ রায় দেয়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে রাখাল রাজার সেই ঐতিহাসিক ঘোষণা, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার একটি ঐতিহাসিক দলিল। বস্তুত ১৯৪৯ সালে বাঙালির সার্বিক মুক্তির প্রশ্ন সামনে রেখেই আওয়ামী লীগের জন্ম এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আংশিক স্বপ্নপূরণ। আমরা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। পেয়েছি একটি পতাকা। কিন্তু জাতির জনকের সেই কাক্সিক্ষত স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। ঐতিহ্যবাহী এ দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত এ দলের রয়েছে ৬৯ বছরের সুদীর্ঘ সময়ের সংগ্রাম, ত্যাগ ও অর্জনের ইতিহাস। বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রাম বলতে বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য যে কথা উচ্চারণ করেছিলেন তা এখনো অর্জিত হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশ্নে যে সাহস ও মেধার সমন্বয়ে এগিয়ে চলেছেন তা প্রশংসার দাবি করতেই পারে। আমরাও বিশ্বাস করতে চাই, শেখ হাসিনা পারবেন। এ দেশের মানুষকে শোষণমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উপহার দিতে সক্ষম হবেন এবং সেই রাষ্ট্রের সম্মানিত সদস্য হওয়ার পরিবেশ তৈরিতে সক্ষম হবেন।
"