reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ মে, ২০১৮

কোথায় মাদকের উৎসমুখ

পুঁজির উৎস যদি হয় লুট, তাহলে লুটের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও যে সেই পুঁজি ধারণ করবে এবং তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে- এটাই স্বাভাবিক। সম্ভবত, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে বলে মনে করেন অনেকেই। সদ্য স্বাধীন পুঁজিতান্ত্রিক দেশে এ ঘটনা নতুন কিছু নয়। সব দেশের ক্ষেত্রেই এ রকম ঘটেছে। তবে অধিকাংশ দেশ তাদের সেই লুটেরা পুঁজির চরিত্রকে জাতীয় পুঁজির চরিত্রে রূপান্তর ঘটাতে সমর্থ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা তা পারিনি। পারিনি বলেই আজ মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর গত ৪ মে থেকে দেশজুড়ে চলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান। ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে শতাধিক প্রভাবশালীর নামসহ তিন হাজার মাদক ব্যবসায়ীর নাম। তালিকা ধরেই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে র‌্যাব, পুলিশ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ। পুলিশের আইজিপি জানিয়েছেন, মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযান অব্যাহত থাকুক এবং মাদক নির্মূল হোক। এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। দ্বিমত কিংবা অভিযোগ আছে এবং তা অন্যত্র।

অভিযোগ রয়েছে, ইয়াবাসহ মাদকের ব্যবসা করতে হলে প্রশাসনকে উৎকোচ, খাজনা অথবা উপঢৌকন না দিয়ে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। আর এই উৎকোচের পরিমাণ যৎকিঞ্চিতও নয়। কোটি কোটি টাকা এবং তা মাসভিত্তিক। এই টাকা কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাই পেয়ে থাকেন, এমনটাও নয়। কিছু কিছু রাজনীতিকের পকেটেও যায়। বিষয়টির সত্যতা নিরূপণের জন্য এক পুলিশ সুপারের বক্তব্য তুলে ধরা যেতে পারে। তিনি অভিযোগ উত্থাপন করে বলেছেন, মাদক বাণিজ্যের সঙ্গে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সদস্য ও কর্মকর্তারা জড়িত।

এদিকে মাদকবিরোধী অভিযানের আগে পাঁচটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার স্বমন্বয়ে মাদক ব্যবসায়ী ও পৃষ্ঠপোষকদের একটি তালিকা তৈরি করে সরকার। সেই তালিকায় মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কক্সবাজার-৪ আসনের এমপি আবদুর রহমান বদির নামও উঠে আসে। তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ অনেক পুরনো। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায় এক নম্বরে আছে এমপি বদির নাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা টেকনাফের মানব পাচারকারীর তালিকাতেও তার নাম সংযুক্ত ছিল। বহুল আলোচিত এমপি আবদুর রহমানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, এমপি আবদুর রহমান বদির নামে অভিযোগে রয়েছে কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই। পুলিশও র‌্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন, গডফাদারদের কেউই রেহাই পাবেন না।

আমরা মনে করি, জাতি হিসেবে আমাদের সংশোধন হওয়ার সময় এসেছে। মাদক লালন এবং মাদক সেবন থেকে জাতিকে বের করে আনার কাজটি প্রকৃত অর্থে খুবই কঠিন। এ জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন দেশপ্রেম। জন্মলগ্ন থেকেই পুঁজির চরিত্রের কারণে যা কখনো গড়ে উঠতে পারেনি। তবে কাজ কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। আর এ কাজকে ত্বরান্বিত করতে সর্বাগ্রে প্রয়োজন একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কাছে সে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এটাই প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist