reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ মে, ২০১৮

সড়কে মৃত্যুর মিছিল

কেউ জানে না মৃত্যুর এ মিছিল কোথায় গিয়ে থামবে? বক্তব্যটি ব্যক্তিগত কারো নয়। দেশের বৃহত্তর জনসমষ্টির। তারা বলছেন, চালকদের খামখেয়ালিতে সড়কে যে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে, তার শেষ কোথায়! এ প্রশ্নের জবাব আমাদের জানা নেই। কে জানেন; তাও আমরা জানি না। আর এই না জানা পথেই আমাদের চলাচল। মিছিলকে সঙ্গী করে আমরা চলছি। মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। আমরা নির্জীব মানুষের মতো তা অবলোকন করছি এবং একটি প্রলম্বিত নিঃশ্বাস ত্যাগের মধ্য দিয়ে গৃহপালিত জন্তুর মতো গোয়ালে ফিরে যাচ্ছি। এখান থেকে বেরিয়ে আসার যেন আর কোনো পথ আমাদের জন্য খোলা নেই। আমরা যেন গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি সেনা বেষ্টনীর মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে আছি। এ দেশে আমরাও যেন গোলান মালভূমির মতো গাড়িচালকদের কাছে অবরুদ্ধ। প্রতিদিন গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ১০ জনকে জীবন দিয়ে প্রমাণ করতে হচ্ছে আমরা অবরুদ্ধ। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মানুষ। অবরুদ্ধ সড়ক ও জনপথ।

হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এটি একটি নির্ভেজাল বস্তুনিষ্ঠ তথ্য। পাশাপাশি এটিও একটি নির্ভেজাল সত্য, ভুক্তভোগীদের কেউই বিচার পাননি। সম্প্রতি চালকদের বেপরোয়া আচরণের কারণে ৯টি দুর্ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে তিনজনের মৃত্যু এবং ছয়জন গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে বাস অথবা ট্রাককে আটক করা হয়। চালককেও গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তেমন শাস্তির সংবাদ কখনো পাওয়া যায়নি। আর এই শাস্তি না হওয়ার কারণে চালকরা (নিজের অজান্তে অথবা জ্ঞাতসারে) মানুষ হত্যার কাজে অংশ নিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছেন খুব সহজেই।

গত বৃহস্পতিবার মারা গেলেন কমিউনিটি পুলিশের সদস্য আলাউদ্দিন সুমন। যাত্রাবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা তারাব পরিবহনের একটি বাস তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। বাসের চাকা তার বাঁ-পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। গত শনিবার হানিফ ফ্লাইওভারে দায়িত্ব পালনকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার কয়েকদিন আগে রাসেল সরকার নামের অপর একজনের পায়ের ওপর দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাস অতিক্রম করে। ভুক্তভোগী রাসেল এখনো হাসপাতালের বেডে

মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিমত, বাংলাদেশে কোনো সুবিচার নেই। নেই বলেই প্রতিদিন বাসচালকরা মানুষ হত্যা করে চলেছেন। আজ পর্যন্ত কারো তেমন কোনো কঠিন সাজা হয়েছে বলে শোনা যায়নি। যখনই আদালত কঠোর হওয়ার কথা ভেবেছেনÑঠিক তখনই পরিবহনশ্রমিকরা আদালতের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। অনৈতিক দাবি-দাওয়া তুলে সরকারকে বিব্রত করেছেন। আর আমাদের রাজনৈতিক নেতারা (বিশেষ করে পরিবহনশ্রমিক নেতারা) পেছন থেকে তাদের এই অনৈতিক আচরণের প্রতি প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষে সমর্থন জুগিয়েছেন। ফলে সড়ক-মহাসড়ক কলুষিত হয়েছে। রক্তাক্ত হয়েছে রাজপথ, যা কখনোই কোনো নাগরিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ আশা করেনি। তারা মনে করেন, এর একটা বিহিত হওয়া দরকার এবং সরকারকেই তা করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist