দুর্ঘটনারোধে সচেতনতা
প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ লোক মারা যাচ্ছে, তা যেন আর কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। যাচ্ছে না বলেই অনেকে অনেকভাবে এ দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার পথ খুঁজছেন। তারই অংশ হিসেবে দুর্ঘটনা রোধে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন। তারা মনে করছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ফুটওভারব্রিজ রেখে রাস্তার ওপর দিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা, যা তাদের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। আর এ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় কেউ পঙ্গুত্ববরণ করছেন অথবা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারকে অনুৎসাহিত করার জন্য একটি ইতিবাচক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিসহ সবাই। উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তারা ধন্যবাদ পেতেই পারেন। আমরা আশা করব, তাদের এ আহ্বানে জনগণ নিজেদের স্বার্থেই এগিয়ে আসবেন।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের আওতায় মোট ফুটওভারের সংখ্যা ৮৯টি। যার মধ্যে উত্তরে ৫৬ এবং দক্ষিণে ৩৩টি। এ ছাড়া আন্ডারপাস রয়েছে তিনটি। এই আন্ডারপাস ও ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারে সচেনতা বাড়াতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রায় ১৬০০ রোবার স্কাউটকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তারা ৮৯টি ফুটওভারব্রিজ দিয়ে চলাচলের জন্য পথচারীদের সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে হাজির থাকবেন। প্রতিটি ফুটওভারব্রিজে ২০ সদস্যের একটি দল তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি ফুটওভারব্রিজকে পথচারীদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য কর্তৃপক্ষ সেখানে ফুলের বাগানসহ সবুজের সমারোহে নান্দনিক করে গড়ে তোলার কাজটিও সম্পন্ন করেছেন। এ ছাড়া কিছু কিছু ব্রিজে চলন্ত সিঁড়িরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর আগে ব্রিজ থাকার পরও ব্যবহার না করার জন্য পথচারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেও কোনো ইতিবাচক ফল আসেনি। অনীহা থেকেই গেছে। সে কারণেই এবার নেওয়া হয়েছে নতুন উদ্যোগ। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, তাদের এ উদ্যোগ কিছুটা হলেও সফলতা এনে দিতে সক্ষম হবে।
অনেকের মতে, ফুটওভারব্রিজের চেয়ে আন্ডারপাস পথচারীদের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হতে পারে, যদি সেই পথের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করা যায়। সাধারণ মানুষের অনীহা দূর করতে সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিরাপত্তা এবং কম কষ্টদায়ক চলাচল। এ দুটির নিশ্চয়তা যতক্ষণ না নিশ্চিত করা যাবে, অনীহা সেখান থেকে সরবে না। আমরা মনে করি, একমাত্র ওভারব্রিজ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার গতিরোধ করা সম্ভব না হলেও কিছুটা কমতে পারে। আমরা প্রথমত কিছুটা কমার প্রত্যাশায় রইলাম।
"