reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ এপ্রিল, ২০১৮

কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি

খেলাপি ঋণের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। ফলে ক্রমেই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে তাদের ভবিষ্যত। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠা জরুরি। ব্যাংকগুলোর ওপর তদারকি ও নজরদারি বৃদ্ধির তাগিদ সত্ত্বেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন নেই। খেলাপি ঋণ যাতে আর না বাড়ে, সেজন্য গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণে শীর্ষে থাকা ২০ ব্যাংককে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও ব্যাংকগুলো এই অপসংস্কৃতি রোধ করতে পারছে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, খেলাপি ঋণ বিস্তারের অন্যতম কারণ অব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ বিতরণ। অর্থনীতিবিদদের মতে, এভাবে খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকলে ব্যাংকগুলোর পক্ষে সুদের হার কমানো সম্ভব নয়। সুদের হার না কমলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে না, যা অর্থনীতির জন্য নিঃসন্দেহে একটি অশনী সংকেত।

২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। অথচ, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। তবে খেলাপি ঋণের তথ্যের সঙ্গে অবলোপন করা ৪৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের তথ্য যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরো বেশি হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ এক পরিসংখ্যানে বিষয়টির উল্লেখ করা বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে যে খেলাপি ঋণ ছিল তা ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর ওই বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল সাত লাখ ৯৮ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। তবে বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বাড়লেও গত বছর সেপ্টেম্বরে যেখানে ব্যাংক খাতে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ছিল, ডিসেম্বরে সেখান থেকে কমে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। এ অবস্থায় খেলাপি ঋণ আদায় সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, টেকসই ব্যাংক ব্যবস্থা বিনির্মাণে খেলাপি ঋণ বাড়ার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ভবিষ্যতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে শতভাগ সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, দেশে বর্তমানে যে পরিমাণ খেলাপি ঋণ তা মোট জিডিপির ১২ শতাংশ। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে। এ অবস্থায় এ খাতকে অবশ্যই মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। তা না হলে দেশের অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চারের কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।

আমরা মনে করি, এজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন অনিয়ম ও দুর্নীতিমুুক্ত ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা না গেলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরো বাড়বে, এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদদের পরামর্শকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের বিস্তার রোধে এবং অনাদায়ী ঋণ আদায়ে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist