reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ এপ্রিল, ২০১৮

বিষ যুক্ত বুড়িগঙ্গা

প্রায় সবার মুখেই শুনতে পাই, ‘বিষাক্ত বুড়িগঙ্গা’। আমি বলি, নাÑ বিষাক্ত নয়। বিষ যুক্ত বুড়িগঙ্গা। এ বুড়িগঙ্গা কখনোই বিষাক্ত ছিল না। অসাধারণ, স্বচ্ছ এবং পবিত্র একটি নদীর নাম ছিল, ‘বুড়িগঙ্গা’। যাকে দেখে এখন আর চেনার কোনো উপায় নেই। যাকে আর ইনসেনটিভ কেয়ারে রাখতেও কেউ রাজি নয়। অনেকটা ভাগাড়ে ফেলে রাখার মতোই পড়ে আছে একটি পচে, যাওয়া ধসে পড়া জলাশয়। প্রতিদিন বুড়িগঙ্গার পানিতে ইনজেক্ট করা হচ্ছে সাড়ে চার হাজার টন কঠিন আর ২২ হাজার টন তরল বর্জ্য। পানিতে দ্রভীভূত অক্সিজেনের (ডিও) পরিমাণ বাড়তে বাড়তে শূন্য দশমিক ৪০ মিলিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি প্রশ্ন করা হয়, কে বা কারা এ বিষ এই নদীর দেহে প্রবেশ করিয়েছে অথবা এখনো তা অব্যাহত রেখেছে? জবাবে বলতে হয়, তথাকথিত সুসভ্য সমাজের তথাকথিত নান্দনিক(!) মানুষরা। যাদের মধ্যে দেশপ্রেমের বিন্দুমাত্র নমুনার অস্তিত্ব না থাকলেও বাহ্যিকভাবে এরাই দেশের হর্তা-কর্তা-বিধাতা। এদের অঙ্গুলি হেলনে দক্ষিণা বাতাস মুখ থুবড়ে পড়ে। বর্ষার আকাশে মেঘ থাকে না। পাখিরা হাসতে ভুলে যায়। পাখিরা এই নদীর পানিতে সাঁতার কাটতে ভয় পায়। চোখ হারিয়ে মাছেরা অন্ধের মতো চলাচল করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আদি বুড়িগঙ্গার পানি শতভাগ দূষিত। নদীর পারে বসবাসরত ৯৫ শতাংশ মানুষ এই দূষণের শিকার। এ রকম দূষিত পানি দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে এ দূষণ জেনারেশন থেকে জেনারেশনে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এদিকে ঢাকায় বসবাসরত মানুষের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এখানে পানির চাহিদা প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি লিটার। যার ৭৮ শতাংশই উত্তোলন করা হয় ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। বাকি ২২ শতাংশ আসে নদীর পানি পরিশোধনের মধ্য দিয়ে। যদি চিত্রটি বিপরীত হতো! ৭৮ ভাগ পানি যদি আমরা নদীর কাছ থেকে পেতাম আর ২২ শতাংশ ভূগর্ভ থেকে, তাহলে আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি আর সংস্কৃতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াত! এই একটি ক্ষেত্রের সাফল্য আমাদের পুরো জাতিকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে দাঁড় করাতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে যে দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের অনুষঙ্গ জড়িয়ে ছিল, আমরা তা হারিয়ে ফেলেছি। যত দিন না সেই অনুষঙ্গ আবার ফিরে আসে, তত দিন পরিবর্তনের আশা করাটাই হবে অন্ধের হাতি দেখার মতো। আমরা অন্ধের মতো আর হাতি দেখতে চাই না। আমরা সেই অনুষঙ্গ ফিরিয়ে এনে একটি পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ দেখতে চাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist