reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ এপ্রিল, ২০১৮

একটি প্রবচন নিয়ে কথা

‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি মোটা’। এ দেশে বহুল প্রচলিত একটি প্রবচন। যার বাস্তব প্রতিফলন প্রতিনিয়তই আমরা দেখতে পাই আমাদের চারপাশে। এ দেশে আইনের চেয়ে বাসচালকদের ক্ষমতা অনেক বেশি। আইনের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাবান এসব চালক। দেশের প্রায় প্রতেক্যটি সমাজ বিশ্লেষকর বলছেন সেই কথা। তাদের মতে, পরিবহন খাতে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাপটে সড়কপথের যাত্রীদের অসহায়ত্ব এখন চরমে পৌঁছেছে। এর জন্য তারা সরকার সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক নেতাদের প্রশ্রয়কে দায়ী করেছেন। পরিবহন চালকরা এখন এমন বেপরোয়া আচরণের সাহস পাচ্ছেন রাজনীতির অশুভ অনুঘটকের কারণে। মালিক ও শ্রমিক নেতাদের ক্ষমতার প্রভাবে পরিবহন খাতে এমন নৈরাজ্যের জন্ম হয়েছে।

তারা আরো বলেছেন, ঢাকার রাস্তায় এখন চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। পরিবহন চালকদের কোনো প্রকার আইনের শিকলে আটকানো যাচ্ছে না। বিশেষভাবে গণপরিবহন চালকরা সব মাত্রা অতিক্রম করে ভীষণভাবে বেপরোয়া আচরণ করছেন। কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তারা বলেছেন, পরিবহন খাতে ক্ষমতাসীন রাজনীতির প্রভাব বাড়ছে। তাদের মতে, যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন সেই সরকার সমর্থিত মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দাপট বাড়ে। ফলে কখনোই তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। শুধু রাস্তাঘাটেই নয়, সর্বক্ষেত্রেই বেপরোয়া এসব বাস ও ট্রাকচালক, হেলপারসহ সর্বস্তরের পরিবহন শ্রমিক। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির পরও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। মনঃপূত না হওয়ায় এসব শ্রমিক নেতার অনৈতিক চাপের মুখে এক বছরের বেশি সময় ধরে খসড়া অবস্থায় আটকে আছে সড়ক পরিবহন আইন।

আগেই বলেছি, ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি মোটা’। আইন থাকলেই কী, আর না থাকলেইবা কী! তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কাছে আইন বারবার পরাজিত হয়েছে। আদালতের আদেশ পর্যন্ত অবজ্ঞা করার স্পর্ধা দেখিয়েছেন এসব পরিবহন শ্রমিকরা। কোনো ধরনের আগাম ঘোষণা ছাড়াই গত বছর মার্চে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে অচল করে দেয় দেশ। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এহেন আচরণ কতটা যৌক্তিক ছিল তার কোনো বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই সরকার সমর্থিত পরিবহন শ্রমিক নেতারা ধর্মঘটে জ্বালানির জোগান দেন। ঢাকা ও মানিকগঞ্জের পৃথক আদালতের রায়ে এক চালকের মৃত্যুদন্ড ও অপর এক চালকের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পরপরই শ্রমিকরা এ ধর্মঘটের ডাক দেন। পরে আদালতকে নমনীয় হতে বাধ্য করে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন।

আমরা মনে করি, বাসচালকসহ পরিবহন শ্রমিক, মালিক ও রাজনীতির এহেন বেপরোয়া আচরণে গোটা জাতিই আজ ক্ষুব্ধ। তারা এ আজাব থেকে মুক্তি পেতে চায়। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবেন কে? যথাযথ কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই ভেবে দেখবে। দেশের সাধারণ মানুষকে নির্বিঘ্নে রাস্তায় চলাচলের সুযোগ তৈরি করে দেশ ও জাতিকে এ দানবীয় দুর্যোগ থেকে রক্ষা করবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist