শিক্ষার প্রতি আনুগত্য
শিক্ষার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আনুগত্যের কথা সর্বজন বিদিত। গত মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকিছুই ভ্যাটের আওতামুক্ত থাকবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কাছ থেকে কিছুতেই ভ্যাট নেওয়া যাবে না। গত অর্থবছর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রথমবারের মতো ভ্যাট আরোপ করেছিল সরকার। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আন্দোলনের চাপের মুখে তা প্রত্যাহার করতে হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর ভ্যাটবিষয়ক একটি বক্তব্য নিয়ে পুনরায় বিতর্কের জন্ম দিলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সেই বিতর্কের আগুনে পানি ঢালার কাজ করেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফির ওপর করারোপ থাকছে। ছাত্রদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কীভাবে তা আদায় করবে, বিষয়টি তাদের। এ ব্যাপারে সরকার কোনো ছাড় দেবে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর থেকে ভ্যাটের বোঝা সরিয়ে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত। এতে ছাত্রদের অভিভাবকরা কিছুটা হলেও বাড়তি কিছু সুখ পেতে পারেন। তবে এ সুখকে কি আমরা প্রকৃত অর্থেই সুখ বলতে পারি! অনেকের মতে, না। সুখ তখনই পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে, যখন এসব ছাত্র দক্ষতাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে তাদের কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়ে নিজেদের যোগ্যতাকে প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন। আর এসব শিক্ষার্থীকে যোগ্য করে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। কেননা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুসন্ধানী প্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণায় বলেছে, বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাই বেশি। কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তারা বলেছেন, মান ঘাটতি থাকার কারণেই তারা চাকরি পাওয়া থেকে ছিটকে পড়ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে যে অবদান রেখেছেন ইতোমধ্যেই তা দেশ-বিদেশে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে। বিশেষ করে নারীশিক্ষায় বাংলাদেশে যে অগ্রগতি তার বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতারই ফসল। আমরা মনে করি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর থেকে সব ধরনের ভ্যাট প্রত্যাহার করে প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, আশা করি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সেই মহানুভবতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে তাদের ছাত্রছাত্রীদের যোগ্য করে গড়ে তোলার কাজে মনোযোগী হবে। যাতে করে এসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে সক্ষম হন। আমরা আরো মনে করি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যোগ্যতা সবক্ষেত্রে সমান নয়। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্যতা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ এসব বিশ্ববিদ্যালয়কেও মানসম্মত অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মনোযোগী হওয়ার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার প্রতি সম্মান দেখিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ কাজে এগিয়ে আসবেÑ এটাই প্রত্যাশা।
"