reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১০ এপ্রিল, ২০১৮

যাত্রী হয়রানি বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে

রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই বললেই চলে। দিনের পর দিন নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক বছরে সরকার এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বারবার চেষ্টা করেও কার্যত কোনো সমাধান দিতে পারেনি। সে বাস্তবতায় যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে গণপরিবহনে নৈরাজ্য সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছায়। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে, ঝরছে একের পর এক প্রাণ। গত মঙ্গলবার রাজধানীর পান্থকুঞ্জ এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন রাজীব হোসেন। তিনি রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় দুই বাসের প্রবল চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিত্য যানজট, ভাড়া আদায়ে স্বেচ্ছাচারিতা, পর্যাপ্ত পরিবহনের অভাব, দুর্ঘটনাÑসব মিলিয়ে গণপরিবহন এখন গণদুর্ভোগের কারণ। দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, অপর্যাপ্ত রাস্তা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল, অদক্ষ চালক এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় জিম্মি হয়ে পড়ছে সাধারণ যাত্রীরা। দ্রুত এ অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে দেশের পুরো পরিবহনব্যবস্থা বিশৃঙ্খল। কোনো ঘটনার জন্য চালকদের দোষারোপ করলে হবে না। কারণ এটা আমাদের সিস্টেমের ফসল। সরকার যদি পরিবহনব্যবস্থায় অবাধে পারমিট না দিত, তাহলে এ রকম অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটত না। চালকদের মধ্যে কার আগে কে যাবেÑএ রকম অসুস্থ প্রতিযোগিতাও থাকত না। এ ছাড়া পরিবহন ব্যবস্থাপনায়ও গাফিলতি আছে। এখানে পরিবহন ব্যবস্থাপনার মধ্যে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদেরও রাখা হয়। ফলে সুষ্ঠু গণপরিবহন-ব্যবস্থার জন্য নেওয়া কোনো উদ্যোগ যদি পরিবহন মালিক বা শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে সে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হয় না। ফলে পরিবহনব্যবস্থায়ও পরিবর্তন আসে না। অথচ পৃথিবীর কোথাও এ ব্যবস্থা নেই। গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘বেপরোয়া গণপরিবহন’ শীর্ষক একটি বিশেষ প্রতিবেদনে গণপরিবহনে নানা অনিয়ম প্রসঙ্গে বলা হয়, এ মুহূর্তে দেশের গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় মোটা দাগে পাঁচ ধরনের বিশৃঙ্খলা দৃশ্যমান। এগুলো হলোÑসিটিং সার্ভিস, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। যাত্রী ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য ও সীমাহীন যাত্রী হয়রানির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরে এপ্রিলে রাজধানীর সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য দফায় দফায় সভা, তদন্ত কমিটি গঠনসহ নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সর্বশেষ গত বছরের ২৫ অক্টোবর সচিবালয়ে এক সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, সিটিং সার্ভিসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে এক সপ্তাহের মধ্যে। কিন্তু মন্ত্রীর এমন ঘোষণাও গত প্রায় এক বছরে কার্যকর হয়নি। উল্টো রাজধানীতে ৮৭ শতাংশ পরিবহন যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে।

আমাদের গণপরিবহন কখনোই জনবান্ধব ছিল না, যেনতেনভাবে মালিক-শ্রমিকদের আয় বাড়ানোই এ সেক্টরের মূল উদ্দেশ্য। বলা সংগত, কেবল বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে এসব অনিয়ম বন্ধ করা যাবে না। বরং পরিবহন খাতের শৃঙ্খলা ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist