অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ
‘বাঙালি যে পারে এটাই তার প্রমাণ’। কথাটি আমার নয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা (এলডিসি) অর্জনের পর তার এ বাক্যকে সাধুবাদ জানানোই যায়। তিনি বলেছেন, এ অর্জন তার একার নয়। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জনের কৃতিত্বের প্রায় সবটুকুই দেশের আপামর জনগণের। এ অর্জন সবার। তার মতে, বাংলাদেশের জনগণই হচ্ছে মূল শক্তি। এ শক্তির উৎস থেকে যে ধারা বেরিয়ে এসেছে, তা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ সমৃদ্ধ দেশ।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রধান জিম ইয়ং কিম বলেছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষাবিস্তারে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকায় মুগ্ধ। তিনি বলেছেন, ‘দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশের মানুষ যে প্রত্যয় দেখিয়েছে, তা প্রশংসার যোগ্য। একই সঙ্গে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মন্তব্য, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অভাবনীয়’। ইউএসএআইডির মতে, বাংলাদেশ আত্মনির্ভরশীলতার পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি লাভ করেছে।
নিঃসন্দেহে বলা যায়, এ অর্জন গৌরবের। মহান স্বাধীনতার মতো এ অর্জনকেও রক্ষা করা দেশও জাতির জন্য একটি অনিবার্য কর্ম। যে কর্ম থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুতি জাতি ও রাষ্ট্রকে যেকোনো সময়ে মহাসংকটের মধ্যে নিপতিত করতে পারে। সুতরাং, এ অর্জন যেন কোনোভাবে হারিয়ে না যায়, এ অর্জনের পথ ধরে বাংলাদেশ যেন আরো এগিয়ে যেতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখেই সামনে চলাÑএটাই সময়ের একমাত্র দাবি। আমরা বঙ্গবন্ধুকে যেমন ভুলতে পারিনি, পারিনি সেই ৭ মার্চের মহাকাব্যিক ভাষণকে ভুলতে। সেদিন বঙ্গবন্ধুর উচ্চারিত শব্দাবলির মধ্যে উচ্চারিত হয়েছিল, ‘বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’। বাক্যটি ছিল বিজ্ঞানসম্মত সত্য। পাকিস্তানের বর্বর বাহিনীও তাকে রুখতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ সেই উচ্চারিত শব্দাবলিতে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে।
আমরা মনে করি, আমাদের এ অগ্রযাত্রাকে রোখার ক্ষমতা কারো নেই। যদি আমরা আমাদের নৈতিকতার দিকে সামান্য নজর দিই। দেশ থেকে শুধু দুর্নীতিকে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান হবে জলবৎ তরলং। সুতরাং আর দেরি নয়, যূথবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। আসুন, সংকল্পবদ্ধ হই।
"