আইজি প্রিজনকে সাধুবাদ...
আইজি প্রিজনকে সাধুবাদ না জানালেই নয়। ষোলো কোটি মানুষের পক্ষ থেকে তার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ। সত্য প্রকাশে কোনো ধরনের কার্পণ্য না করার জন্য তার প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসারই প্রতিফলনে এ শুভেচ্ছা। তিনি বলেছেন, দেড় হাজার কারাবন্দি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছেন। তার মতে, নানা রোগে আক্রান্ত ও বছরের পর বছর সাজা ভোগের কারণে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া কারাবন্দির সংখ্যা এক হাজার ৫৮৮ জন। তিনি জানিয়েছেন, বিধি অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও তারা বছরের অধিকাংশ সময়েই অসুস্থ থাকছেন। তার সত্য উচ্চারণ সবাইকে মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেছেন, কারাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দির সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, কারা অভ্যন্তরে বাস উপযোগী অবস্থা নেই। ব্যবস্থাও চাহিদার তুলনায় বহুলাংশেই কম। সুতরাং ব্যাটে-বলে না মিললে যা হওয়ার তাই হয়েছে। কারাবন্দিদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা রক্ষায় কারা কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। অন্তত আইজি প্রিজনের সত্য উচ্চারণ সে কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
আইজি প্রিজন আরো বলেছেন, দেশের ৬৮ কারাগারে মোট বন্দি ধারণক্ষমতা ৩৬ হাজার ৬১৪ জন। কিন্তু ১৫ মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত এই ৬৮ কারাগারে রাখা হয়েছে ৭৭ হাজার ১২৪ জন বন্দিকে; যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। বিশ্লেষকরা বলেছেন, দেহের শক্তির চেয়ে অধিক ওজন বহন করতে দেওয়া হলে একসময় তা ভেঙে পড়বেÑ এটাই স্বাভাবিক। দেশের কারাগারের অবস্থাও অনেকটা সে রকম। সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে যে লজিস্টিক সাপোর্টের প্রয়োজন এবং ওজন বহনের যে শক্তি কারাগারের আছে, তার কোনোটাই পর্যাপ্ত নয়। খ-িত শক্তি কখনোই কোনো যুদ্ধে জয়ী হয়নি এবং সম্ভবও নয়।
আমরা মনে করি, কারা অভ্যন্তরের এই নাজুক অবস্থাকে কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যায় না। এর একটা পরিবর্তন আজ সময়ের দাবি। আমরা বন্দিদের কোনোভাবেই মানবেতর জীবনের দিকে ঠেলে দিতে পারি না। আমরা জানি, সাজা ভোগ করানোই কারাগারের একমাত্র লক্ষ্য নয়। বন্দিদের অনৈতিক চিন্তাচেতনা ও অতীতের অপকর্ম থেকে সরিয়ে আনাও কারাগারের একটি দায়িত্ব। আর এ কাজটি করার জন্য চাই একটি সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ। আশা করি, সরকার বিষয়টির দিকে মনোযোগী হয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসবেÑ এটাই প্রত্যাশা।
"