রাজনীতিতে নতুন মাত্রা
একটি পূর্ণাঙ্গ নাটকে অঙ্ক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় দৃশ্যপট। চলমান রাজনীতির নাট্যমঞ্চেও আমরা খুঁজে পাই পরিবর্তনের সেই একই দৃশ্য। তবে নাটকে যা মঞ্চস্থ হয়, তা পূর্বনির্র্ধারিত। কিন্তু রাজনীতির নাট্যমঞ্চে যা ঘটতে থাকে, তা নির্ধারিত নয়। কেবল সময়ই বলতে পারে কী ঘটতে যাচ্ছে। আর এ সময়কে ধারণ করে যে বা যারা সঠিক সিদ্ধান্তে পথপরিক্রমায় এগিয়ে যেতে পারেন; তিনি বা তারাই সময়ের মহানায়ক। সুতরাং রাজনীতির নাট্যমঞ্চে আগামীতে কে মহানায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন, সময়ই তা বলে দেবে।
সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নতুন কৌশলের কথা ভাবছে। গত বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায় হওয়ার আগ পর্যন্ত একটি ধারায় চলেছে নির্বাচনী রাজনীতি। কিন্তু সাজা নিয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর সে রাজনীতিতে নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি বিলম্বিত হতে পারেÑএমন আশঙ্কা সে মাত্রাকে আরো কিছু নতুনত্বের জোগান দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা। তবে আগে থেকেই নির্বাচনী মাঠে থাকা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও তাদের কর্মসূচিতে নতুন কৌশল যুক্ত করেছে। এসব কৌশল নিয়ে নতুন করে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়।
একইভাবে ভোটের মাঠে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে ২০-দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে বিএনপি। প্রচারণায় সরকারের দুর্নীতির ফিরিস্তি ভোটারদের কাছে তুলে ধরাই হবে দলের মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মামলার রায়ে সরকারের হাত আছেÑসে তথ্যও প্রচার করতে চায় দলটি। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন ও নির্বাচনী প্রস্তুতিÑদুটোই একসঙ্গে চালাবে বিএনপি। নিজেদের আরো শক্তিশালী করতে জোটকে সম্প্রসারিত করার চিন্তাভাবনাও করছে তারা। পাশাপাশি আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচন মাথায় রেখে অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যতে কী মেরুকরণ যুক্ত হতে পারে; সেসব ভাবনা মাথায় রেখেই নির্বাচনী প্রচারণা সাজিয়েছে দলটি।
আমরা মনে করি, কৌশলে যতই নতুনত্ব আনা হোক না কেন, নির্বাচনে দল দুটির লক্ষ্য এক ও অভিন্ন। তাদের লক্ষ্য একটিই এবং তা হলো ভোটারদের কাছে টানা। এ প্রশ্নে পুরনো কথাকেই আবার সামনে এনে বলতে হয়, সময়কে যিনি বা যারা নির্ভুল পড়তে এবং অনুশীলন করার যোগ্যতা রাখবেন, তিনি বা তারাই জয়যুক্ত হবেন। জয় তাদের কাছেই আত্মসমর্পণ করবে।
"