অংশগ্রহণ প্রশ্নে দুই মত
বিদেশ থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদ- দিয়েছেন আদালত। প্রশ্ন উঠেছে, সাজা হওয়ার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না। এ প্রশ্নে পক্ষে-বিপক্ষে দুই ধরনের মতই এসেছে। একপক্ষ বলেছে, নৈতিক স্খলনজনিত কারণে (দুই বছরের বেশি কারাদ-) নির্বাচনে অযোগ্য হলেও আপিল করে ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। অন্যপক্ষের মতে, হাইকোর্ট যদি সাজা স্থগিত করে সে ক্ষেত্রে সাজা বাতিল হলো না। সুতরাং তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আবার অতীতে এ-সংক্রান্ত দুই বিচারপতির দুই বিপরীতমুখী রায় থাকার কারণে বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত। তবে আইনমন্ত্রীসহ আইনজ্ঞদের কেউ কেউ বলেছেন, এ বিষয়ে সুরাহার জন্য আপিল বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করতে হবে। আপিল বিভাগ ও নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার ওপর নির্ভর করবে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়টি।
সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২(ঘ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া দুই বছরের কারাদ-ে দ-িত হন এবং তাহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বৎসর অতিবাহিত না হইয়া থাকে, তাহলে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না। তবে নি¤œ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হলে উচ্চ আদালতে তার আপিল করার সুজোগ থাকবে এবং আপিল চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই সাজা কার্যকর নয় বলে মনে করেন আইনবিদরা। এ ছাড়া ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ দুর্নীতি মামলায় দ-প্রাপ্তরা আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে একপক্ষের আইনজ্ঞরা বলেছেন, ফৌজদারি অপরাধে দ-প্রাপ্ত ব্যক্তির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি এখনো মীমাংসা হয়নি। কোনো রায়ে নেই আবার আইনেও নেই। তবে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের মতে, অংশ নিতে পারবেন। আর বিচারপতি খায়রুল হক বলেছেন, অংশ নিতে পারবেন না।
"