আসলের খবর নেই বিকল্পের আছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ‘বিকল্প প্রকল্পের’ আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করে ১৯৮৬ সালে তা বেশ কিছু ছাত্রের মাঝে বিতরণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষিত বেকারদের কাজে লাগিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। গাড়িগুলো চার-পাঁচ বছর রাস্তায় চলাচলের পর উধাও হয়ে গেছে। এখন এই গাড়িগুলোর আর কোনো হদিস মিলছে না। সরকারের কোষাগারেও আসেনি রাজস্ব। বাংলাদেশে এহেন আচরণ নতুন কিছু অথবা ব্যতিক্রম নয়। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোপাট হয়েছে। কাউকে কোনো শাস্তি পেতে দেখা যায়নি। সবাই বহাল তবিয়তে নবাবী মেজাজেই দিন কাটাচ্ছেন। কেন জানি হঠাৎ করেই বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে। কিছু একটা ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেছে সরকার। এনবিআরকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। এনবিআর তথ্য মতে, দীর্ঘদিন আগে এই গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করে কিছু ছাত্রের মাঝে বিতরণ করা হয়। তবে বিষয়টি দীর্ঘদিনের হওয়ায় কোনো তথ্যই তাদের হাতে নেই। না থাকারই কথা। ছোট প্রকল্পের খবরে মুনাফা কম বিধায় তদারকিও কম। মুনাফার অঙ্ক বেশি হলে খবর রাখার লোকের অভাব পড়ত না এবং নথিপত্রেরও হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অসম্ভবের পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াত। তবে এ কথা না বললেই নয় যে, দুর্নীতি দমনে সরকার বিশেষভাবে মনোযোগী হয়েছে। তা না হলে এত ছোট জায়গায় হাত দিতে যাবে কেন! এবার দুর্নীতি দমনের বিষয়টি বোধহয় তৃণমূল থেকে শুরু করতে চাইছে সরকার। সরকারের এ উদ্যোগকে খাটো করে দেখার কোনো কারণ নেই।
সরকারের এ উদ্যোগ চলতে চলতে হঠাৎ করেই যেন পথিমধ্যে দাঁড়িয়ে না যায়। আমরা ঘর পোড়া গরু। সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পাই। আমরা আর ভয়ের মধ্যে বসবাস করতে চাই না। দুর্নীতি উচ্ছেদে সরকারের কঠোর অবস্থান দেখতে চাই। শুধু তৃণমূলেই নয়, সব স্তরেই এই কঠোরতাকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা বড়ই কষ্টদায়ক। আমরা দেশের সর্বস্তরে দুর্নীতিবাজদের কেবল ফুলেফেঁপে উঠতেই দেখেছি। কখনো তাদের মাথানত হতে দেখিনি। দেখিনি বলেই দেশের মোট সম্পদের ৯২ শতাংশ আজ ৮ শতাংশের হাতে কুক্ষিগত এবং ৯২ শতাংশের ভাগে পড়েছে মাত্র ৮ শতাংশ সম্পদ। যা সবসময়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত।
"