রায়হান আহমেদ তপাদার

  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

আন্তর্জাতিক

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে আমেরিকা ও পাকিস্তান

পাকিস্তান দিন দিন বড় দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হচ্ছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। অনেকে বলছেন, ট্রাম্পের পাকিস্তানবিরোধী পদক্ষেপ তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির বাস্তবায়নেরই অংশ। তাদের মতে, ওই নীতির আলোকে ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনা নিয়েছেন ট্রাম্প। এরই অংশ হিসেবে পাকিস্তানে সহায়তা স্থগিত করেছেন এই রক্ষণশীল নেতা। তবে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয়, ট্রাম্প আসলে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি যা করছেন, পূর্ববর্তী ওবামা প্রশাসন একই ধরনের ভূমিকা নিয়েছিল। বিশ্লেষকরা এর নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী জঙ্গিবাদের উত্থান ও ভীতিকেই বড় করে দেখছেন। কেউ কেউ বলছেন, পাকিস্তানে দ্রুত বিকাশমান পারমাণবিক অস্ত্রের কর্তৃত্ব জঙ্গিদের হাতে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এটাই ওয়াশিংটনের সবচেয়ে বড় ভয়। মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের ওপর বেজায় চটেছেন। সম্প্রতি তার এক টুইটের জেরে যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের বাদানুবাদ ও উত্তেজনা তীব্র হয়। তিনি টুইটে লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘বোকার মতো’ ১৫ বছরে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার পাকিস্তানকে সাহায্য দিয়েছে। বিনিময়ে তারা ‘মিথ্যা ও প্রতারণা’ ছাড়া আর কিছুই পায়নি। শুধু টুইট করেই ক্ষান্ত হননি তিনি। তার দুই দিন পর মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানকে যেসব সামরিক সহায়তা দেয়, তার ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত ৯০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তা আপাতত বন্ধ করা হচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের একসময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

ট্রাম্পের পূর্ববর্তী ওবামা সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় না ধরালেও দেশটির প্রতি সতর্ক ছিলেন। ২০০৯ সালে যখন তিনি আফগানিস্তান-পাকিস্তান নিয়ে মার্কিন কৌশল ঘোষণা করেন, তখন উভয় দেশকেই সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে অভিহিত করেন। ওবামা প্রশাসন বেশ কয়েক বছর ধরে সহায়তা স্থগিত করে রাখে। তার সময় মার্কিন কংগ্রেসে বিল পাস হয়, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে জোটগত সহায়তা তহবিল (সিএসএফ) হিসেবে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে। কিন্তু দেওয়া হয় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কেননা কংগ্রেস পর্যবেক্ষণ করবে, হাক্কানি নেটওয়ার্ক এবং লস্কর-ই-তৈয়বা দমনে পাকিস্তান কতটুকু সফল হয়। তাদের শর্ত পূরণ করলেই পাকিস্তান পুরো অর্থ পাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক দিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট জুনিয়র বুশের সেই তথাকথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’র সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র মনে করত পাকিস্তানকে। সে সময়ের পাকিস্তানি সামরিক জান্তা পারভেজ মোশাররফকে নিয়ে আফগানিস্তানে নিজেদের সৃষ্ট সন্ত্রাসবাদ দমনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তারা। অবশ্য অনেক মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষক একে ভ্রান্ত কৌশল হিসেবে মনে করছেন। কেননা তাদের ধারণা, পাকিস্তানের সামরিক সরকার তাদের ভাঁওতা দিয়েছিল। এর আগে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে মার্কিন অবস্থান সর্বজনবিদিত। আর ‘ঠান্ডা যুদ্ধে’র সময় পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবিলার জন্য বিশেষ করে আফগানিস্তানে সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে নিতে সবচেয়ে অগ্রসর সহযোগী ছিল পাকিস্তান। ওই দেশটির মাটিতেই মার্কিন সহায়তায় সোভিয়েত প্রভাবাধীন সরকারকে উৎখাতকারী তালেবান জঙ্গিদের লালনপালন করা হয়েছিল। সেই দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এখন অবনতির দিকে।

ভাবনার বিষয় হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন কেন এত কঠোর হচ্ছে পাকিস্তানের প্রতি? তার পেছনে কিছু কারণ অবশ্যই রয়েছে। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা যুক্তরাষ্ট্র মেনে নিতে পারছে না। দেশটি যখন অর্থনৈতিক সংস্কারের পথে হাঁটছে, তখন তা মেনে নিতে না পেরে যুক্তরাষ্ট্রের তল্পিবাহক সংস্থা আইএমএফ পাকিস্তানের সদস্যপদ বাতিল করে দিয়েছে। সংস্থাটি মেনে নিতেই পারছে না, পাকিস্তান নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে চীনের ঋণ পরিশোধ করছে আর মার্কিনের প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি চীনের দিকে পাকিস্তানের ঝুঁকে পড়াকেও মেনে নিতে পারছে না তারা। পাকিস্তান এখন চীনের ব্লকে। বেশ কিছুদিন ধরেই তারা চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছে। আর ভূকৌশলগত কারণে পাকিস্তানকেও চীনের বেশ বড় প্রয়োজন। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তোলা হয়েছে। সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মার্কিনেরই আরেক ঘনিষ্ঠ সহচর আফগানিস্তান এই তো অল্প কিছুদিন আগেই এই তিন দেশের পররাষ্ট্র পর্যায়ের বৈঠক হয়ে গেছে। সেখানে তিন দেশই এই অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তোলার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। এই করিডরটি চীন-পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের খাইবার পাস দিয়ে ঢুকে আমু দরিয়া নদী হয়ে দক্ষিণ আড়াল সাগরের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবে। ফলে দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য এশিয়ার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি হবে। তখন করিডরটির নতুন নামকরণ হবে পাকিস্তান-আফগানিস্তান-চীন করিডর। ওই বৈঠকে আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়া সৃষ্টির লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় সহায়তার ব্যাপারেও কথা হয়েছে। এই রাষ্ট্রগুলোর দহরম-মহরম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেনে নিতে না পারাই স্বাভাবিক। পাকিস্তান পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র।

কিন্তু এর পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তারা কালোবাজারের মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্রের চোরা চালানের সঙ্গে যুক্ত। আবার দেশটি মুসলিম জঙ্গিদের উর্বর ভূমি। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয় রয়েছে এই পারমাণবিক অস্ত্র আবার সেসব জঙ্গির হাতে না পড়ে। পাকিস্তানের ওপর মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করা হয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান দমনে ভূমিকা এবং নিজেদের মধ্যকার হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাপ নেওয়ার জন্য। এদিকে পাকিস্তান উল্টো অভিযোগ করেছে, মার্কিন কর্মকর্তারা কাবুলে জঙ্গি নেতা মঙ্গল বাগ এবং তার লস্কর-ই-ইসলামকে (লেল) নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে আসছে। তাদের অভিযোগ, পেশোয়ারে যে ২৩৫ স্কুলছাত্রকে হত্যা করা হয়েছিল, সেই হত্যাকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ত জঙ্গিদের সঙ্গে একজন আফগান এমপির ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এমনকি ওই হত্যাকা-ের পর জালালাবাদের মার্কিন কার্যালয়ে সে সংসদ সদস্য যায় এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শ্যাম্পেন পার্টিতে মেতে ওঠে। এমনিতেই ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি খুব সমালোচনার মুখে। ৪৬টি দেশের যৌথবাহিনী থাকা সত্ত্বেও আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। জেরুজালেম নিয়ে তার ঘোষণা এবং উত্তর কোরিয়া নিয়ে তার বাড়াবাড়ি অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার ওপর পাকিস্তানের প্রতি এ বিরূপ আচরণ তাকে আরো প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তার এ ভূমিকা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সামরিক শাসনের পক্ষাবলম্বীদের এবং মুসলিম মৌলবাদীদের লাভবান করবে। তারা আশা করবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। গত বছরের আগস্টে ট্রাম্পের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কৌশলের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়।

ইকোনমিক টাইমস এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ প্রসঙ্গে জানায়, এই নীতি ঘোষণার সময়ই ‘সহিংসতা, নৈরাজ্য আর জঙ্গিদের এজেন্টদের নিরাপদ স্বর্গ’ হয়ে ওঠার জন্য পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, পাকিস্তানের জন্য সময় এসেছে সভ্যতা, শান্তি, শৃঙ্খলা বজায় রাখার পক্ষে তাদের দৃঢ় সংকল্প বাস্তবায়নের। ওই কর্মকর্তা বলেন, আফগানিস্তানের পরিপ্রেক্ষিত দিয়ে পাকিস্তানকে বিচার করছেন ট্রাম্প। তার নীতি হলো, আমেরিকা ফার্স্ট। তাই তিনি চাচ্ছেন এ অঞ্চলকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার দিকে দৃষ্টি দিতে। পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে নজর সরায়নি, তা দেখা গেছে গত কয়েক দিনের তৎপরতায়ও। সম্প্র্রতি এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্প ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও জঙ্গিবাদে মদদের অভিযোগ তোলার পর ৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সাহায্য বন্ধের ঘোষণা আসে। তবে এটা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে দেওয়া নতুন কোনো শাস্তি নয়। ওবামা প্রশাসনও বেশ কয়েক বছর পাকিস্তানকে অর্থ সহায়তা দেওয়া বন্ধ রেখেছিল। জোটের সহায়তা তহবিলে সিএসএফ ১০০ কোটি ডলার সহায়তার অনুমোদন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে আইন পাস হলেও পাকিস্তানকে শর্তসাপেক্ষে ৩০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে শর্ত ছিল, পাকিস্তানকে হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পরবর্তী বছরগুলোয় লস্কর-ই-তৈয়বার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান ও তাদের মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্ককে নিরাপদ স্বর্গ গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে পাকিস্তান। আর জঙ্গিরা এ সুযোগ পুরোদমে কাজে লাগিয়েছে। তারা পাকিস্তান থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে আফগানিস্তানে বারবার হামলা চালাচ্ছে।

পাকিস্তান জঙ্গিবিরোধী পদক্ষেপের শর্ত পূরণ করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন যদি অনুমোদন দিত, তখনই কেবল ওই সহায়তা দেওয়া হতো। বেশ কয়েকবারই দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র তার প্রশাসনকে সেই অনুমোদন দিতে সংশয় প্রকাশ করেছে। পাকিস্তান বরাবর জঙ্গিবাদের অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা আগের চেয়ে অনেক কঠোর করেছেন। এর শেষ ফলাফল হিসেবে নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা এসেছে ওয়াশিংটনের তরফে। আটলান্টিক কাউন্সিল স্ট্র্যাটেজিক ফোরসাইটের পরিচালক ম্যাথিউ বরোস ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে আক্রমণাত্মক আখ্যা দিয়েছেন। তবে এর মধ্যে কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেই বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ম্যাথিউর মতে, একটাই সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ রয়েছে ট্রাম্পে সিদ্ধান্তে। তা হলো, পাকিস্তানে সহায়তা বন্ধ করা। যদিও ম্যাথিউ মনে করেন, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আত্মঘাতী হয়ে উঠতে পারে। এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের বাস্তবতা বদলাবে না বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস। দেশটির আরেক প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টেরও একই অভিমত। পত্রিকাটির একটি বিশ্নেষণমূলক লেখায় ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে অপরিণামদর্শী বলে অভিহিত করা হয়েছে।

লেখক : সমাজ ও রাজনীতি বিশ্লেষক

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist