reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি, ২০১৮

মাদকমুক্ত হোক তরুণ প্রজন্ম

দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি এর প্রতিরোধেও সচেতনতা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও মাদকাসক্তি বিস্তারের হার উদ্বেগজনক। একটি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নির্ভর করে যুব সমাজের কর্মক্ষমতার ওপর। কিন্তু সেই যুব সমাজই যদি মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে, তাহলে জাতীয় অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়তে বাধ্য। এসব দিক বিবেচনা করে মাদকাসক্তদের চিকিৎসাসেবা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারিভাবে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা সবকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি আমরা চাই, বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোর শয্যা পরিধি বাড়ানো হোক এবং প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে মাদকাসক্ত নিরাময় ও পুনর্বাসনকেন্দ্র নির্মাণ করা হোক।

বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে বর্তমানে ৭০ লাখের মতো নারী-পুরুষ মাদকাসক্ত। বিপুলসংখ্যক মাদকাসক্তের জন্য সরকারি চারটিসহ বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর সেবা অপর্যাপ্ত। মাদকাসক্তদের প্রায় ৫০ শতাংশ মানসিক রোগে ভুগলেও বেসরকারি বেশিরভাগ কেন্দ্রেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। এ ছাড়া মাদকাসক্তের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের সুযোগও নেই। চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের অভাবে মাদকের অন্ধকার জগতে থেকে ৯৯ ভাগ মাদকাসক্তই আলোর পথে ফেরার সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা সবার পক্ষে নেওয়া সম্ভব হয় না। এছাড়া মাদকাসক্তদের একটি বড় অংশই যেহেতু নিম্ন আয়ের, সে কারণে তাদের পক্ষে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা সম্ভব নয়। সে বাস্তবতায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসাসেবা ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে ‘মাদকাসক্তের চিকিৎসায় নতুন উদ্যোগ’ শীর্ষক একটি বিশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে মাদকের বিস্তার রোধ ও এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাদক অধিদফতরকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্রকে ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত এবং প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে ৫০ শয্যার মাদক নিরাময় হাসপাতাল নির্মাণ করবে সরকার। মনে রাখতে হবে, সামাজিক ভীতি ও লজ্জার কারণে বেশিরভাগে ক্ষেত্রে মাদকাসক্তরা বিষয়টি কারো সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চায় না। ফলে তারা নিজেদের গুটিয়ে নেয় ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে মাদকের সহজলভ্যতা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থাসহ বিভিন্ন ধরনের মনোসামাজিক কারণে তরুণ-যুবকদের মধ্যে এ প্রবণতা দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। এজন্য মাদকাসক্তদের চিকিৎসার পাশাপাশি তা প্রতিরোধের চেষ্টা করতে হবে।

মাদকাসক্তি একটি মানোসামাজিক ও জনস্বাস্থ্য সমস্যা। এজন্য মাদকাসক্ত তরুণকে বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার আওতায় আনা যেমন জরুরি, তেমনি আসক্ত হওয়ার পর তার চিকিৎসা প্রদান আরো জরুরি। পাশাপাশি দেশে তরুণদের মাঝে ক্রমবর্ধমান মাদকাসক্তি প্রতিরোধে অভিভাবক, মনোচিকিৎসক, মনোবিদসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখতে এ সম্মিলিত প্রচেষ্টার এখনই সময়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist