চিঠিপত্র
প্রতারণা জীবনের চরম অভিশাপ
জীবন মানে বেঁচে থাকা, জীবন মানেই জয়-পরাজয়। যার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। যখনই কেউ তার সীমা অতিক্রম করে তখনই সেই ব্যক্তি হয়ে ওঠে সাধারণের বাইরের। সেই সীমা যদি স্বাভাবিক অতিক্রম হয় তবে এক রকম আর অস্বাভাবিক হলে হয় অন্যরকম ফল। অস্বাভাবিক অতিক্রমে মানুষ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয় জীবনের প্রতি, মানুষের প্রতি হয়ে যায় আস্থাহীন। সুন্দর পৃথিবীকে তখন দেখতে থাকে অসুন্দরের কালো ছায়া হিসেবে। এত কথার অবতারণার কারণÑপ্রতারণা। প্রতারণা জীবনের চরম একটি অভিশাপ। কতজন কতভাবেই না প্রতারণার শিকার হচ্ছে। দেশে, সমাজে, পরিবারে এমনকি বন্ধু-বান্ধব ও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও প্রতারণার নীলজাল সুন্দর গাঁথুনিতে নির্মিত। জিনের বাদশার কবলে পড়া, লটারির টাকার নামে, ভালো চাকরির আশা দিয়ে, বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে, ভালো মেয়ে কিংবা পাত্র দেওয়ার নামে অর্থ আদায়Ñএসবই মূলত প্রতারণা। মানবতা, মনুষ্যত্ব এদের কাছে ছেঁড়া কাপড়।
একটি সত্য ঘটনা। ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার গোয়াগাঁও গ্রামে স্বদেশ রায়ের ছেলে কৃষ্ণ রায়ের বিয়ে হয় তারই মাসতুতো (খালাত) বোনের সঙ্গে। অভিভাবকের ইচ্ছায় এবং কনের সম্মতিতে। পাশাপাশি বাড়ি, সহজ-সরল ছেলেমেয়ে ও তাদের পরিবার। মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিও পেয়েছে। উভয় পরিবারের সবাই খুশি। বিয়ে হলো গত ৫ নভেম্বর (২০১৬)। বিয়ের দুই মাস পর কনের পুরনো বন্ধু দাবি করে বসল, ‘আমি নন্দরানীকে বিয়ে করেছি।’ রীতিমতো বিয়ের কাগজপত্রসহ আবির্ভাব। সবাই অবাক, ঘটনা কি? মেয়ের বক্তব্য, ‘সে আমার বন্ধু তবে বিয়ে হয়নি। বীমা খোলার কথা বলে আমার কাছ থেকে সে স্ট্যাম্পে ও খাতায় সই নিয়েছে।’ যাই হোক, এফিডেভিট করে সেই বিয়ে অস্বীকার করা হয়। অতঃপর গত ২৫ জানুয়ারি (২০১৭) রানীকে সকালে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেয় স্বামী কৃষ্ণ, আবার ছুটির পর আনতে যায় প্রতিদিনের ন্যায়। কিন্তু আনতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। সেদিন হতে নন্দরানী আজও নিখোঁজ। খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে ২৭ জানুয়ারি থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়। হয়তো অপহরণ, নয়তো পরিকল্পিত নিঁখোজ রয়েছে। ফল যাই হোক, কৃষ্ণর জীবনে কি কালো দাগটি কখনো মুছবে?
ছবি কান্ত দেব, রানীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও
"