ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে বিজ্ঞান উদ্ভাবন মেলা
পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী বিএফএফ-সমকাল বিজ্ঞান উদ্ভাবন মেলা ২০১৭-১৮। ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রধান অতিথি থেকে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেন। বরেণ্য সাংবাদিক ও সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান লেখক ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. রেজাউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জেবা ইসলাম সিরাজ, বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, ড্যাফোডিল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী মো. নুরুজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সারা দেশের ৬০টি স্কুল থেকে অংশ নেওয়া ৫০০ প্রকল্পের মধ্য থেকে সেরা ১০টি প্রকল্পকে পুরস্কৃত করা হয়। এবারের বিজ্ঞান উদ্ভাবন মেলায় ‘নিকোটিন সংরক্ষণ’ প্রকল্প উদ্ভাবনের জন্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সাতক্ষীরার নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লায়লা সিমরান। প্রথম রানারআপ হয়েছে ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীদের দল, দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দল এবং তৃতীয় রানারআপ হয়েছে মতিঝিল বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দল। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করতে হবে। আর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করার জন্য দরকার সৃজনশীলতা। সৃজনশীলতা বিকাশের জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রয়োজন। এ ধরনের বিজ্ঞান মেলা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার পথ উন্মুক্ত করে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। এ সময় তিনি সমকাল, বিএফএফ ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানান এ রকম আয়োজন করার জন্য।
মোস্তাফা জব্বার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি তোমাদের স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার হতে চাই। তোমরা যেসব প্রকল্প উদ্ভাবন করেছো সেসবের বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে করা হবে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ে আর্থিক বরাদ্দ রয়েছে বলে জানান মোস্তাফা জব্বার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. সবুর খান বলেন, আমাদের স্কুলপর্যায়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে ও নানা ত্যাগ স্বীকার করে অভিনব সব প্রজেক্ট উদ্ভাবন করে। কিন্তু এই শিক্ষার্থী যখন বড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় তখন তাদের মধ্যে এই উদ্যোম আর থাকে না। তারা সিজিপিএ, রেজাল্ট, ক্যারিয়ার ইত্যাদি দুর্ভানার জাঁতাকলে পড়ে উদ্ভাবনী শক্তি হারিয়ে ফেলে। এ জন্য আমরা কোনো বিজ্ঞানী তৈরি করতে পারি না। এটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি বলে মন্তব্য করেন মো. সবুর খান। এ জন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, আগামীতে বাংলাদেশ কেমন থাকবে তা নির্ভর করছে এই শিক্ষার্থীদের ওপরে। তাই এই শিক্ষার্থীদের আধুনিক, সৃজনশীল ও বিজ্ঞানমনস্ক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশের অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। তোমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গড়িয়সী’ প্রবাদকে অন্তরে লালন করার পরামর্শ দেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করার আহ্বান জানান।
দেশবরেণ্য বিজ্ঞান লেখক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল আনুষ্ঠানিকভাবে এ মেলার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নুরুজ্জামান ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. রেজাউর রহমান ও সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
"