reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৪ জানুয়ারি, ২০১৮

বিইউয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন

১৯ শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদকসহ ৪৮০৪ জনকে ডিগ্রি প্রদান

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির (বিইউ) দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান ২৭ ডিসেম্বর বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এবং প্রফেসর ইমেরিটাস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজউদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিইউর ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক শরীফ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ইঞ্জিনিয়ার এমএ গোলাম দস্তগীর।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল এই বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে ভবিষ্যতে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মডেল। শুধু উচ্চশিক্ষা নয়, এ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায়ও অসামান্য অবদান রাখছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করছে।

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আমরা সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকারী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না। তারা সবাই আমাদের সন্তান এবং জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সবার জন্যই আমরা মানসম্মত শিক্ষা এবং সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যারা ভালো করছেন, দেশের জন্য কাজ করছেন, তারা অবশ্যই অনুকরণীয় হবেন এবং সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাবে। শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ, যা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে দেশকে গড়তে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে চাই। কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যারা এখনো তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এভাবে তারা বেশি দিন চলতে পারবে না। যারা মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চায়, নিজস্ব ক্যাম্পাসে যায়নি, একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে তাদের অব্যাহত চাপে রেখেও সঠিক পথে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, উচ্চশিক্ষা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয় বাস্তব, যার প্রমাণ আজকে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি লক্ষ্যহীন জাতিকে দিশা দিয়েছেন। তিনি কারো কাছে মাথানত করেন না। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাখ্যান করে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প নিজেদের অর্থায়নে করার সাহস দেখিয়েছেন।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান কাজী জামিল আজহার তার বক্তব্যে স্বল্প ব্যয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চশিক্ষা বিস্তারে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দারিদ্র্য, ক্ষুধামুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

ডিগ্রিপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেক অধ্যবসায়, পরিশ্রম আর সাধনার ফসল আজকের এ ডিগ্রি। তোমাদের মাধ্যমে দেশ স্বপ্ন দেখবে। তোমরা দেশকে স্বপ্ন দেখাবে এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব তোমাদেরই।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বক্তা প্রফেসর ইমেরিটাস ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজউদ্দিন ইউনিভার্সিটি স্বাধীনভাবে যাতে কাজ করতে পারে তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ও জাতি গঠনে গ্র্যাজুয়েটদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান।

এছাড়া সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা উচ্চ শিক্ষায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির অবদান তুলে ধরে এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তারা বলেন, সফল মানুষদের ইতিহাসের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হয়, কেননা যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন তারা একই ভুল বারবার করেন। শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সবার আগে সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক গুণাবলির অধিকারী হতে হবে। তাকে কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হতে হবে; মানুষের মতো মানুষ হতে হবে।

২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিইউর প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সমাবর্তনে ১,২২৫ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এবারের ২য় সমাবর্তনে ১০ বিভাগে ৪৮০৪ হাজার জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়।

২০০১ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটি উন্নত শিক্ষার মান বজায় রেখে বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশের অন্যতম ও স্বনামধন্য বিইউর ক্যাম্পাস। মোহাম্মদপুরের আদাবরে বিইউর নিজস্ব ক্যাম্পাসের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ স্বল্প পরিসরে শুরু হলেও বর্তমানে এর ফ্যাকাল্টি সংখ্যা ৩ ও বিভাগের সংখ্যা ১০টি এবং বর্তমানে এর ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৬ হাজার। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist