নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ এপ্রিল, ২০১৯

যেভাবে শুরু মঙ্গল শোভাযাত্রা

বাংলা নববর্ষের সূচনালগ্নে আমরা যে মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্যাপন করি, তা ৭০-এর দশকে কোথাও ছিল না। অন্তত বাংলাদেশে তো নয়ই। কারোও ধারণাতেও তখন ছিল না বছরের শুরুটাতে এমন করে নিজেদের সংস্কৃতিকে বহমান সময়ের সংমিশ্রনে তুলে ধরা যায়। শুধু বাঙালি সংস্কৃতি নয়, বরং মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব সংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য বলে স্বীকৃত। সেই স্বীকৃতি জাতিসংঘের ইউনেস্কোর কল্যাণে পাওয়া গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ থেকে লেখাপড়া শেষ করে নিজ শহর যশোরে ফেরেন মাহবুব জামাল শামীম, হীরন্ময় চন্দ্রসহ কয়েকজন। এরই মধ্যে মাহবুব জামাল শামীম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে পড়–য়াদের নিয়ে ১৯৮৫ (১৩৯২ বাংলা) সালে ‘চারুপীঠ’ নামে একটি সংগঠন চালু করেন। সেই যশোরের চারুপীঠ নামের প্রতিষ্ঠানটি প্রথমবারের মতো ‘বর্ষবরণের শোভাযাত্রা’ বের করে। পরের বছর যশোরের বেশকিছু সাংস্কৃতিক সংগঠন একসঙ্গে নতুন বছরকে বরণ করতে ‘যশোর বর্ষবরণ পর্ষদ’ গঠন করে। সে বছর বর্ষবরণ শোভাযাত্রাকে চারুপীঠের আয়োজন না বলে ‘সম্মিলিত’ আয়োজন বলা হয়। একে একে দেশের বেশকিছু অঞ্চল ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ উৎসবকে নিজের উৎসব বলে গ্রহণ করে নেয়। ধীরে ধীরে এ শোভাযাত্রার পরিসর আরো বড় হয়। দুই বছর বাদে অর্থাৎ ১৯৮৮ সালে যশোরের মাহবুব জামাল শামীম, হীরন্ময় চন্দ্র উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ফিরে আসেন। পরের বছর চারুকলার শিক্ষার্থীরা ও ডিপার্টমেন্টের ছোট-বড় ভাইয়েরা তাদের নিয়ে পরিকল্পনা করেন বর্ষবরণ শোভাযাত্রার। সে অনুযায়ী ওই বছরই প্রথম ১৯৮৯ (১৩৯৬ বাংলা) সালে চারুকলার শিক্ষার্থীরা বর্ষবরণের শোভাযাত্রা বের করেন।

পরের বছর তা কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও বরিশালে এবং পরবর্তীতে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ১৯৯০ সালে সংগীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হকের পরামর্শে বর্ষবরণের এই শোভাযাত্রাকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামকরণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ শহরে ও শান্তি নিকেতনে বাংলা বর্ষবরণে ‘শোভাযাত্রা’ বের করা হয়। আজ রোববার দেশের সব জেলা-উপজেলায় সেই মঙ্গল শোভাযাত্রা ছড়িয়ে পড়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close